প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
সৈয়দুল কাদের, কক্সবাজার থেকে : তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ভ্রমণ পিপাসুদের উপচেপড়া ভিড় লেগেছে। এতে প্রাণের ছোঁয়া লেগেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। হোটেল-মোটেল কোথাও রুম খালি নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব?্যবস্থা।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের সাগরতীরে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার ভ্রমণপিপাসু। তাদের পদচারণায় মুখরিত সাগরতীর। বালিয়াড়ি পেরিয়ে সাগরে নামছেন পর্যটকরা। কেউ এসেছেন দলবেঁধে, কেউ এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, আবার কেউ এসেছেন একাই। চলতি পর্যটন মৌসুমে বিদেশি পর্যটকদেরও দেখা যাচ্ছে কক্সবাজারে।
ঢাকার মিরপুর থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বেড়াতে আসা আয়েশা ছিদ্দিকা বলেন, ঢাকা শহরে বাড়ি থেকে স্কুল এভাবে কেটে যায়। কোথাও ঘুরতে যেতে পারি না। এখন কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি, খুব ভালো লাগছে। পানিতে খেললাম, বালিয়াড়িতে দৌড়াচ্ছি, খুব মজা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা ইয়াছিন আক্তার বলেন, ক্লান্তি কাটানো সবচেয়ে ভালো স্থান বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে আসলাম। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, ইনানী, হিমছড়ি ও পাতুয়ারটেক ঘুরব দুই দিন। তারপর বাড়িতে ফিরে যাব।
ভারতের কলকাতা থেকে আসা পর্যটক আশীষ বলেন, ভারতের সমুদ্রসৈকতের চেয়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত অনেক সুন্দর। এই সৈকত অনেক পরিষ্কার। এছাড়াও এত মানুষের ভিড় খুব ভালো লাগছে। এখান থেকে ঘুরে গিয়ে বন্ধুদের সবাইকে বলব, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য।
সাগরতীর ঘুরে দেখা যায়, বালিয়াড়ির চেয়েও পর্যটকের চাপ বেশি সাগরজলে। সমুদ্রস্নান আর প্রিয়মুহূর্তগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করতে মেতেছেন তারা। তবে, সন্ধ্যার পর বিনোদনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান পর্যটকরা।
সোয়েব কবির নামে এক পর্যটক বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ পর্যটন স্পটগুলো বেশ ভালো সময় কাটে। কিন্তু সন্ধ্যার পর আর ভালো লাগে না। এখনো বিনোদনের তেমন কিছু নেই। আরেক পর্যটক সিরাজুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারে সন্ধ্যার পর যদি কনসার্ট বা সৈকত এলাকায় বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা থাকত তাহলে অনেক ভালো হতো। আর রাতে যদি সৈকত এলাকা আলোকিত করা হতো তাহলে সৈকত এলাকায় রাত অবধি থাকা যেত।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক কাজ করছেন অর্ধশতাধিক লাইফ গার্ড কর্মী।
কুয়াকাটায় পর্যটকদের মিলনমেলা : কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) থেকে আনোয়ার হোসেন আনু জানান, সাপ্তাহিক ছুটিসহ সরকারি ৩ দিনের ছুটিকে ঘিরে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় ভিড় জমিয়েছে নানা বয়সের হাজারো পর্যটক। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমিতে আসতে থাকে ভ্রমণ বিলাসী শত শত মানুষ। আগত দর্শনার্থী ও পর্যটকদের উম্মাদনায় সৈকত এলাকা মিলনমেলায় পরিণত হয়। মেতে ওঠে আনন্দ উল্লাসে। অনেকে সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। অনেকে আবার ঘুরে দেখছেন রাখাইন পল্লী, রাখাইন মার্কেট, প্যাগোডা, তিন নদীর মোহনা, লেম্বুরবন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান ও গঙ্গামতি, চর বিজয়সহ পর্যটন স্পটগুলো। পর্যটকদের এমন ভিড়ে বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার অধিকাংশ হোটেল-মোটেল রিসোর্ট। কেনাকাটায় ধুম পড়ে গেছে ঝিনুক ও আচারের দোকানগুলোতে। খাবার হোটেলগুলোতেও লক্ষনীয় ভিড় দেখা গেছে।
অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ এবং গোয়েন্দা পুলিশ বিশেষ নজরদারিতে রেখেছে। ঘন কুয়াশায় সূর্যোদয় দেখতে না পেয়ে হতাশ আগত পর্যচকরা। রাতে ঘন কুয়াশা দিনে বেড়েছে রোদের তাপ। এরপরও যেন আনন্দের শেষ নেই।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।