প্রণয় ভার্মাকে সংবর্ধনা : ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কূটচালে নষ্ট হওয়ার নয়’

আগের সংবাদ

গ্যাস সংকট কাটছে না সহসা : দৈনিক চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট > সরবরাহ ২৬৬ কোটি ঘনফুট > দুর্ভোগে রাজধানীর বাসিন্দারা

পরের সংবাদ

ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রধান হাতিয়ার ডিজিটাল সংযোগ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করার প্রধান হাতিয়ার হবে ডিজিটাল সংযোগ। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মূল চাবিকাঠি হবে ডিজিটাল সংযোগ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজের জন্য ডিজিটাল সংযোগ মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা-২০২৩ এর উদ্বোধন উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন। ভিডিও বার্তায় তিনি ডিজিটাল পণ্য বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় তিন দিনের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার আয়োজন করে। দেশের আইটি ও আইটিইএস পণ্য ও সেবাগুলো প্রদর্শনই এ মেলার লক্ষ্য। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ মন্ত্রী মুস্তাফা জব্বার, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন একটি বাস্তবতা। স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গঠনই আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ইন্টারনেট, ভার্চুয়াল বাস্তবতা, উদ্দীপিত বাস্তবতা, রোবোটিকস এন্ড বিগ-ডাটা সমন্বিত ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়। শিল্পাঞ্চলে ফাইভ-জি সেবা নিশ্চিত করা হবে।
ডিজিটালাইজেশনে বাংলাদেশে বিপ্লব ঘটে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্ম এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। জাতির পিতা ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙ্গামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপন করেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে নির্বাচনী অঙ্গীকারে রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা করেছিলাম, যার মূল লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশি জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। আমরা সেটা পেরেছি। ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করেছি, যা স¤প্রচার ও টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। গত বছর সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ের সময় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু

করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের স্যাটেলাইট পরিবারের ৫৭তম গর্বিত সদস্য।
শেখ হাসিনা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যে বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ স্থাপনের পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল আমরা স্থাপন করতে যাচ্ছি। কারণ, ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ক্ষমতা অর্জন করেছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ব্যান্ডউইথের সক্ষমতা ৭ হাজার ২০০ জিবিপিএসে উন্নীত করা হবে। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের পর এটি ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে। সৌদি আরব, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া ও ভারতকে ব্যান্ডউইথ লিজ দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতি বছর ৪ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে। বাংলাদেশকে আর বিদেশি স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভর করতে হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ ৫৬ হাজার ২৯৮ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। এদিকে প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ গিগাবাইট ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে, যা জনগণ ও সরকারি অফিসগুলোতে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সহায়তা করে। সারাদেশে মোট ৮ হাজার ৬০০টি পোস্ট অফিসকে ডিজিটালে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমানে ১৮ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ডিজিটাল বৈষম্য এবং দামের পার্থক্য দূর করা হয়েছে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সারাদেশে ‘এক দেশ এক দরের’ একটি সাধারণ শুল্ক চালু করা হয়েছে। সারাদেশে বৈষম্যহীন ‘এক দেশ এক দর’ শুল্ক ব্যবস্থা চালু করার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ এসোসিও (এএসওসিআইও)-২০২২ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেলিকম খাতে প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২২টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে ১৪টি ক্যাটাগরিতে প্রথম প্রবর্তিত পোস্ট এন্ড টেলিকমিউনিকেশন অ্যাওয়ার্ড বিতরণ করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়