কাগজ প্রতিবেদক : কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারস এসোসিয়েশন প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১০৭ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ১১২ টাকা নির্ধারণ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারস এসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাম বাড়ানোর কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অপরিশোধিত চিনির আন্তর্জাতিক বাজার দর ও ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়া এবং স্থানীয় পরিশোধকারী মিলসমূহের উৎপাদন ব্যয় বিবেচনায় এনে চিনির দাম বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক করে জানায়, বিদ্যমান ডলার সংকট ও আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলাসহ অন্যান্য সমস্যার সুরাহা করা না হলে আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে না।
সা¤প্রতিক কয়েক মাসে বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলার হার অনেক কমে যায়। এ ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে আগামী মার্চে শুরু হতে যাওয়া রমজানে ভোগ্যপণ্য আমদানি সহজ করতে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে এলসি খোলার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করে মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
জানুয়ারিতে এলসি খোলাসংক্রান্ত জটিলতা কেটে যাবে বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিঠিতে লিখেছে, বরং জানুয়ারি মাসে ভোজ্যতেল ও চিনি আমদানির জন্য আরো কম এলসি খোলা সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রমজানে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর, ডালসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। তবে এবার ডলার সংকটের কারণে আমদানিনির্ভর চিনি ও ছোলাসহ কিছু পণ্যের এলসি খোলা কমে গেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
২০২১ সালের জুলাই-ডিসেম্বরের তুলনায় গত বছরের একই সময়ে চিনি আমদানি ২ লাখ টনের বেশি কমে। গত ডিসেম্বরে অপরিশোধিত চিনি আমদানির এলসি খোলা হয় মাত্র ৬৯ হাজার ৫২ টনের, আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫ হাজার ১১৯ টন। শিল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, চিনি আমদানি কমার আরেকটি কারণ হলো, ব্রাজিলের উৎপাদিত চিনির বড় অংশই চীন কিনে ফেলেছে। অন্যদিকে, ভারত চিনি রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। এর প্রভাবে ইতোমধ্যে দেশের বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।