ভ্রাম্যমাণ আদালত : বাকেরগঞ্জে তিন দোকানদারকে জরিমানা

আগের সংবাদ

নতুন শিক্ষাক্রম বুঝতে নোট-গাইড চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা : শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, লাগবে না

পরের সংবাদ

গ্র্যান্ডমাস্টারের দৌড়ে এগিয়ে ফাহাদ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দাবায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া দাবাড়– হিসেবে একজন যে খেতাব অর্জন করতে পারেন তা হলো গ্র্যান্ডমাস্টার। সংক্ষেপে একে জিএম বলা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে। ভারত বাংলাদেশের পরের বছর গ্র্যান্ডমাস্টার পেয়েছিল। তবে ২০০৮ সালের পর আর কোনো গ্র্যান্ডমাস্টার পায়নি বাংলাদেশ। এবার বাংলাদেশে গ্র্যান্ডমাস্টারের দৌড়ে এগিয়ে আছেন ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়া ফাহাদ রহমান। বাংলাদেশের আর কোনো দাবাড়– নেই গ্র্যান্ডমাস্টারের দৌড়ে। তাই কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই এগিয়ে আছেন তিনি।
বাংলাদেশ থেকে ১৯৮৭ সালে উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন নিয়াজ মোরশেদ। তিনি মাত্র ২১ বছর বয়সে এ খেতাব অর্জন করেন। ভারতের প্রথম ও উপমহাদেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন বিশ্বনাথন আনন্দ। তিনি এ খেতাব অর্জন করেছিলেন ১৯৮৮ সালে। তাই ধারণা করাই যায় বাংলাদেশ দাবায় ভারতের চেয়ে পিছিয়ে ছিল না। নিয়াজ মোরশেদের পর বাংলাদেশে আরো চারজন গ্র্যান্ডমাস্টার এসেছেন। ২০০২ সালে এ খেতাব অর্জন করেন জিয়াউর রহমান। তারপর রিফাত বিন সাত্তার গ্র্যান্ডমাস্টার হন ২০০৭ সালে। একই বছরে আরেকজন গ্রান্ডমাস্টার পায় বাংলাদেশ। তিনি হলেন আব্দুল্লাহ আল রাকিব। সর্বশেষ ২০০৮ সালে এনামুল হোসেন রাজীব বাংলাদেশের হয়ে এ সম্মান অর্জন করেন। তারপর যুগ পেরিয়ে কেটে গেছে আরো দুটি বছর। কিন্তু বাংলাদেশের হয়ে আর কেউ দাবার এ শৃঙ্গে আরোহন করতে পারছেন না।
দাবায় আরো কিছু সম্মানজনক খেতাব রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক মাস্টার ও ফিদে মাস্টার অন্যতম। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মাস্টার আছেন শুধু চারজন। জিল্লুর রহমান চম্পক আন্তর্জাতিক মাস্টার বা আইএম হয়েছিলেন ১৯৯০ সালে। এরপর দীর্ঘ বিরতি শেষে ২০১১ সালে আবু সুফিয়ান শাকিল, ২০১২ সালে মিনহাজ উদ্দিন সাগর এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ফাহাদ রহমান। বাংলাদেশের হয়ে নারী আইএম আছে মাত্র ৩ জন, ফিদে মাস্টার ১৫ জন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের রেটিংপ্রাপ্ত দাবাড়ুও মাত্র ১ হাজার ৯৬৬ জন। বাংলাদেশের পরে গ্র্যান্ডমাস্টার পাওয়া ভারতে বর্তমানে জিএমের সংখ্যা ৭৮ জন, আন্তর্জাতিক মাস্টার ১২৫ জন, নারী জিএম ১৮ জন, নারী আইএম ৪২ জন, রেটেড খেলোয়াড় ৩৩ হাজারেরও বেশি।
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন এখন অর্থনৈতিকভাবে আগের চেয়ে শক্তিশালী হলেও ভালো দাবাড়– তৈরিতে পিছিয়ে পড়েছে অনেকটাই। আগে ভালো করা দাবাড়ুরা এখন দাবা থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছেন। চারজন আইএমের তিনজনই এখন ছকের বাইরে। জিল্লুর রহমান ১৯৯৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। দাবার সঙ্গে এখন তার আর কোনো সম্পর্ক নেই। ৪২ বছর বয়সি সুফিয়ান এবং ৩৩ বছর বয়সি মিনহাজ এখন আর তেমন সক্রিয় নন। আজকের দিনে দাবার এই অবস্থার জন্য অতীতের এক কমিটিকে দায়ী করে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবউদ্দিন শামীম বলেন, ‘২০০৮ সালে রাজীব জিএম হওয়ার সময় আইএম হওয়ার জন্য খন্দকার আমিনুল, শেখ পল্লব, শাকিলসহ বেশ কজন ফিদে মাস্টার পাইপলাইনে ছিল। কিন্তু হঠাৎ রাজনৈতিকভাবে মোকাদ্দেস সাহেব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হন। ক্ষতিটা তখনই হলো। দাবা তখন এগিয়ে নেয়া যায়নি। বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানো হতো না।’
দায়টি আজকের দিনের না হলেও কারণটি বর্তমানে গ্র্যান্ডমাস্টার না আসার পেছনের কারণ। সর্বশেষ জিএম আসার পর থেকে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে খেলোয়াড়দের বিদেশে কম পাঠানো হয়। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা বিদেশি টুর্নামেন্টে কম অংশগ্রহণ করে, আর করলেও শুধু ভারতীয় টুর্নামেন্টে করে। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে বাংলাদেশিরা শুধু ভারতের খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলার সুযোগ পায়। যেখানে ইউরোপের খেলোয়াড়দের বিপরীতে বসতে পারলে প্রতিযোগিতা কেমন তা ভালোভাবে আঁচ করা যায়, সেখানে আমাদের খেলোয়াড়রা ইউরোপের ভিসার আবেদন করেও সেখানে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না।
২০১৮ সালে পাঁচজন ইউরোপ যাওয়ার আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে চারজনের ভিসাই হয়নি। যার কারণে সফরটা বাতিল করা হয়েছিল। এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সফর বাতিল হওয়ার পরের ছয় মাস ফেডারেশন খেলোয়াড়দের কোনো টুর্নামেন্টে বসাতে পারেনি। এ নিয়ে আক্ষেপ করেছিলেন সে পাঁচজন দাবাড়–র একজন। তিনি ছিলেন ২০১৮ সালে আইএম হওয়া মিনহাজ উদ্দিন সাগর।
– শাহাদাত হোসেন কিফাত

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়