ঢাকা মহানগর আ.লীগ : দক্ষিণে সমাবেশ উত্তরে বিক্ষোভ আজ

আগের সংবাদ

১০ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন : ঢাকার গণসমাবেশ থেকে বিএনপির ঘোষণা > ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী গণমিছিলের কর্মসূচি

পরের সংবাদ

রাষ্ট্রপতি : দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দুর্নীতি দমনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা অবলম্বন করতে হবে। সর্ষের ভেতর যেন ভূত না থাকে, তাহলে দুদক জনগণের কাছে আস্থা হারাবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি দূর করতে হলে সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ছোট-বড় সব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতে হয়, সমাজে এটা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে দুদক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের রেকর্ড করা বক্তব্য প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুদক চেয়ারমান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।
দুর্নীতিকে বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্নীতি সমাজে বৈষম্য তৈরির পাশাপাশি সামাজিক বিকাশ ও উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। মানুষের মধ্যে দুর্নীতিবিষয়ক সচেতনতা তৈরি ও দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমেই একমাত্র দুর্নীতি কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, একটা সময় ছিল ঘুসখোর, সুদখোর ও দুর্নীতিবাজদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ছিল না বললেই চলে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই মূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন শহর, নগর ও গ্রামসহ সবখানেই যেন টাকাওয়ালাদের জয়জয়কার। টাকা কীভাবে এলো, সৎ পথে নাকি অসৎ পথে এসব নিয়ে কারো মাথাব্যাথা নেই। সামাজিক মর্যাদার মাপকাঠি হয়েছে যেন টাকা। তাই রাজনীতিবিদ চাকরিজীবী, পেশাজীবী, কৃষক ও শ্রমিকরা সবাই যেন টাকার পেছনে দৌড়াচ্ছে। টাকা কীভাবে এলো, সৎ পথে নাকি অসৎ পথে এসব নিয়ে ভাবনার ফুরসত নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি হচ্ছে সামগ্রিক উন্নয়নের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ, যা একটি জাতির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। পৃথিবীতে মানুষের অনেক চাহিদা থাকতে পারে, ধন-সম্পদের লোভ-লালসা মানুষকে অমানুষে পরিণত করে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধমূলক সময়োপযোগী আইনি ব্যবস্থায় দুর্নীতিমুক্ত হতে পারে দেশ। যত কঠিনই হোক দুর্নীতিকে শনাক্ত করতে হবে, প্রতিরোধ করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনুউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, জীবনযাত্রার মান উন্নত হলেও সমাজ-রাষ্ট্রে দুর্নীতি বিরাজমান। এতে প্রতীয়মান হয় যে, মানুষ অভাবে নয় বরং লোভ ও স্বভাবগতভাবেই দুর্নীতি করে থাকে। যারা দুর্নীতি করে তাদের মধ্যে কোনো দেশপ্রেম আছে বলে দুদক মনে করে না। সামান্যতম দেশপ্রেম থাকলে কোনো ব্যক্তির পক্ষে দুর্নীতি করা সম্ভব নয়। দুর্নীতি দূর করতে দুদক বদ্ধপরিকর জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সেই উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে তিনি।
এর আগে সকালে বেলুন উড়িয়ে ২০তম আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদ্বোধন করা হয়। এরপর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. মোজাম্মেল হক খান, কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক, দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং কমিশনের মহাপরিচালক ও আইনজীবীসহ সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব’। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা এবং ৪৯৫টি উপজেলায় বড় পরিসরে উদযাপন হয়েছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস। দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ, সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং পিকেএসএফসহ অন্যান্য এনজিওতে দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘ ২০০৩ সালে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সে হিসেবে এবার হচ্ছে ২০তম আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়