ঢাকা মহানগর আ.লীগ : দক্ষিণে সমাবেশ উত্তরে বিক্ষোভ আজ

আগের সংবাদ

১০ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন : ঢাকার গণসমাবেশ থেকে বিএনপির ঘোষণা > ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী গণমিছিলের কর্মসূচি

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপ জয়ের চাবিকাঠি হতে পারে রক্ষণ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে চলছে বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসর। এই বিশ্বকাপ জয়ের চাবিকাঠি হতে পারে রক্ষণ। যার প্রমাণ আমরা দেখেছি ২০১০ সালের বিশ্বকাপের আসরে। সেবারের শিরোপাজয়ী স্পেন তাদের চারটি নকআউট ম্যাচের প্রতিটিতে ১-০ গোলে জিতে শিরোপা উল্লাসে মেতেছিল। আরও বিশদভাবে দেখলে, সবশেষ ছয়টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের ২৪টি নকআউট ম্যাচের ১৭টিতে ক্লিন শিট বা জাল অক্ষত ছিল। 
ইংল্যান্ড গ্রুপ পর্বে গোল হজম করে দুইটি। কিন্তু নকআউট পর্বে কোনো গোল না খেয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ইংলিশরা। বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর আগে ইংল্যান্ড তাদের সবশেষ ছয় ম্যাচের মধ্যে ক্লিন শিট রাখতে পারে মাত্র একটিতে। হ্যারি ম্যাগুইয়ার ছন্দে না থাকার পরও টানা তাকে শুরুর একাদশে রাখায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। কোচের আস্থার প্রতিদান বিশ্ব মঞ্চে এখন পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই দিয়েছেন ম্যাগুইয়ার। আসরে চার ম্যাচে ইংল্যান্ড গোল হজম করেছে দুটি। আর দুটিই গ্রুপ পর্বে ইরানের বিপক্ষে। প্রথম গোল হজমের আগে তারা এগিয়ে ছিল ৪-০, পরেরটির আগে ৬-১ গোলে।
ফ্রান্স গ্রুপ পর্বে তিনটি গোল হজম করলেও নকআউট পর্বে মাত্র একটি গোল হজম করেন। কোয়ার্টার ফাইনালের আট দলের মধ্যে একমাত্র ফ্রান্সই তাদের চার ম্যাচের প্রতিটিতে গোল হজম করেছে। কোচ দিদিয়ে দেশমের জন্য যা কিছুটা হলেও দুর্ভাবনার। যদিও শেষ ষোলোয় পোল্যান্ডের বিপক্ষে তিন গোল করার পর একেবারে শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে একটি গোল খায় তারা। চার বছর আগে রাশিয়া আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে জাল অক্ষত রেখেছিল ফরাসিরা।
মরক্কো গ্রুপ পর্বে মাত্র একটি গোল হজম করে। কিন্তু নকআউট পর্বে কোনো গোল না খেয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে আশরাফ হাকিমির দল। টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কম গোল হজম করেছে মরক্কো। আফ্রিকার দেশটি জাল অক্ষত রাখে ইউরোপের ত্রয়ী বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া ও স্পেনের বিপক্ষে। একমাত্র কানাডার বিপক্ষে জাল অক্ষত রাখতে পারেনি তারা, সেটিও ছিল আত্মঘাতী গোল। এমনকি শেষ ষোলোয় স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারেও জাল অক্ষত রাখে মরক্কো। প্রতিপক্ষের তিন শটের দুটি ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো, একটি বাধা পায় পোস্টে। ফলে প্রথমবারের মতো তারা উঠে কোয়ার্টার ফাইনালে।
তাদের এমন সাফল্যের পেছনের কারিগর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগি। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র তিন মাস আগে দায়িত্ব পান তিনি। তার কোচিংয়ে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচ খেলে কেবল ওই আত্মঘাতী গোলটিই হজম করেছে মরক্কো। এখনও পর্যন্ত আসরে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি (১২) গোল করা পর্তুগালকে তাই শেষ আটে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে মরক্কোর দেয়াল ভাঙতে।
পর্তুগাল গ্রুপ পর্বে গোল হজম চারটি। তবে নকআউটে মাত্র একটি গোল তাদের জালে জড়ায়। আসরে এখনও পর্যন্ত যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি গোল যেমন করেছে পর্তুগাল, তেমনি কোয়ার্টার ফাইনালের দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল হজমও করেছে তারাই। তাদের শেষ আটের প্রতিপক্ষ যখন মরক্কো, তাই বলা যায় সবচেয়ে সেরা আর বাজে রক্ষণের দুই দলের লড়াই হতে যাচ্ছে এবার। পর্তুগিজদের রক্ষণভাগের নেতৃত্বে আছেন চিরতরুণ ৩৯ বছর বয়সি পেপে। সেন্টার-ব্যাক রুবেন দিয়াস বর্তমান সময়ে সেরাদের একজন। এই বিশ্বকাপের মতো ২০১৬ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও গ্রুপ পর্বে চার গোল হজম করেছিল পর্তুগাল। এরপর নকআউটে ক্রোয়েশিয়া, পোল্যান্ড, ওয়েলস এবং ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল তারাই।
ফুটবলের সব পথ মিশে গেছে মরুর দেশ কাতারে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রথমবারের মতো ফুটবল দুনিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে রোমাঞ্চ যেমন আছে, তেমনি বিতর্কও কম নেই।
বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার পর কাতারে অবকাঠামো নির্মাণে অভিবাসী শ্রমিকদের অপব্যবহার করার অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থা। সাড়ে ৬ হাজার অভিবাসী শ্রমিক নিহতের খবর দিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান। যদিও এসব দাবি নাকচ করেছে দিয়েছে আয়োজকরা। তারা বলছে স্বাভাবিক কারণ বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। তবে বিশ্বকাপ চলাকালে ট্রেনিং সাইটে কাজ করার সময় এক ফিলিপিনো শ্রমিকের মৃত্যুতে শুরু হয়েছে তদন্ত।
বিশ্বকাপ চলাকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু কখন সেটা জানা যায়নি। ফিলিপাইন বিবৃতিতে জানায়, নিহতের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তারা আর বিস্তারিত জানাবেন না। কাতার বিশ্বকাপের আয়োজনকারী সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লিগ্যাসি (এসসি) এক বিবৃতিতে বলে, তদন্তের মুখে তারা পড়েনি। কারণ নিহত ব্যক্তি একজন ঠিকাদারি হিসেবে কাজ করছিলেন, এসসির অধীনে নয়। এ নিয়ে প্রশ্ন করায় হতাশা প্রকাশ করে কাতার বিশ্বকাপের প্রধান নির্বাহী নাসের আল খাতার বলেন,‘মৃত্যু জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ, এটা হতে পারে কাজ করতে গিয়ে, আবার ঘুমের মধ্যেও। আমরা বিশ্বকাপের মাঝামাঝি জায়গায় আছি। আমাদের একটি সফল বিশ্বকাপ হচ্ছে। আর ঠিক এই সময়ে আপনারা এমন কিছু নিয়ে কথা বলতে চাইছেন?’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়