ঢাকা মহানগর আ.লীগ : দক্ষিণে সমাবেশ উত্তরে বিক্ষোভ আজ

আগের সংবাদ

১০ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন : ঢাকার গণসমাবেশ থেকে বিএনপির ঘোষণা > ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী গণমিছিলের কর্মসূচি

পরের সংবাদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন : আমদানি ব্যয় কমায় অর্থনীতিতে স্বস্তি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আমদানি ব্যয় কমাতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ কাজে এসেছে। অর্ধেকে নেমেছে ঋণপত্র বা এলসি খোলার পরিমাণ। আর এতে চাপ কমেছে রিজার্ভের ওপর। গত কয়েক মাসে দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় ছিল অস্বাভাবিক আমদানি। এটা কমায় অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পণ্য আমদানির হালনাগাদ তথ্য থেকে জানা গেছে- গত নভেম্বর মাসে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানির জন্য ৪০২ কোটি (৪.০২ বিলিয়ন) ডলার এলসি খেলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অর্ধেকেরও কম। ২০২১ সালের নভেম্বরে ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ৮১০ কোটি (৮.১ বিলিয়ন) ৬৯ লাখ ডলারের।
অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত মার্চ মাসে ৯৮০ কোটি (৯.৮০ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছিলেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এপ্রিলে তা কমে ৮৪২ কোটি ডলারে নেমে আসে। মে মাসে তা আরো কমে ৭২৮ কোটি ডলারে নেমে আসে। জুন মাসে অবশ্য বেড়ে ৮৪৯ কোটি ডলারে ওঠে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৬৩৯ কোটি ডলার। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে খোলা হয় যথাক্রমে ৬৬২ কোটি ও ৬৫১ কোটি ডলারের এলসি। অক্টোবরে তা এক ধাক্কায় ৪৭৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। নভেম্বরে তা আরো কমে ৪০২ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
অর্থবছরের হিসাবে দেখা গেছে, জুলাই থেকে নভেম্বর প্রথম পাঁচ মাসে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে ২ হাজার ৮২৮ কোটি (২৮.২৮ বিলিয়ন) ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ হাজার ৩৭১ কোটি (৩৩.৭১ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ঋণপত্র খোলার পরিমাণ কমেছে ৫৪৩ কোটি ডলার। শতকরা হিসাবে কমেছে ১৬ দশমিক ১০ শতাংশ।
এদিকে বর্তমান অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমদানি কমাকে দেশের অর্থনীতির জন্য ‘মঙ্গল’ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। তারা বলেছেন, এ মুহূর্তে এটা খুব দরকার ছিল। আমদানি কমলে ডলারের বাজারও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৮২৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের এলসি খোলেন ব্যবসায়ীরা। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে অবশ্য কমে ৭১০ কোটি ডলারে নেমে আসে। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন হওয়ায় এলসি খোলার পরিমাণও কমেছিল বলে জানান ব্যাংকাররা। মার্চে ৮৯০ কোটি ২৬ লাখ ডলারের এলসি খোলেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা, যা ছিল এক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি এলসি খোলার পরিমাণ।
তবে নানা শর্তারোপের কারণে এপ্রিল থেকে টানা কমছে পণ্য আমদানির এলসি খোলা পরিমাণ। এপ্রিলে এলসি কমে ৮৪২ কোটি ডলারে নেমে আসে। মে মাসে তা আরো কমে ৭২৮ কোটি ডলারে নেমে আসে। জুন মাসে অবশ্য বেড়ে ৮৪৯ কোটি ডলারে ওঠে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৬৩৯ কোটি ডলার। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে খোলা হয় যথাক্রমে ৬৬২ কোটি ও ৬৫১ কোটি ডলারের এলসি। অক্টোবরে তা এক ধাক্কায় ৪৭৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। নভেম্বরে সেটা আরো কমে ৪০২ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ঋণপত্র খোলার পরিমাণ কমলেও নিষ্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে। পাঁচ মাসে ৩ হাজার ৩৫৪ কোটি ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময় ২ হাজার ৭১৫ কোটি ডলার এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল। সে হিসাবে এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ১৯ দশমিক ০৫ শতাংশ।
আমদানি কমাতে প্রথম পদক্ষেপ নেয়া হয় গত ১৭ এপ্রিল। ওই দিন এক সার্কুলারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিশুখাদ্য, জ্বালানিসহ অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্প এবং কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানি ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানির বিপরীতে ঋণপত্র স্থাপনের (এলসি) নগদ মার্জিন হার ন্যূনতম ২৫ শতাংশ সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এরপর ১০ মে বিলাসপণ্য আমদানি কমাতে আরো কড়াকড়ি আরোপ করে আরেকটি সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়, সব ধরনের মোটরকার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্সসামগ্রীর আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে। একই সঙ্গে অতি জরুরি পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে।
সর্বশেষ গত ৫ জুলাই আরো কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব ধরনের মোটরকার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকসসামগ্রী, প্রসাধনী, স্বর্ণালংকার, তৈরি পোশাক, গৃহস্থালি বৈদ্যুতিকসামগ্রী বা হোম অ্যাপ্লায়েন্স, পানীয়সহ বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে এখন থেকে ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের ঋণ সুবিধা পাবেন না আমদানিকারকরা। এসব পণ্যের আমদানি ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে, এর আগে যা ছিল ৭৫ শতাংশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়