ঢাকা মহানগর আ.লীগ : দক্ষিণে সমাবেশ উত্তরে বিক্ষোভ আজ

আগের সংবাদ

১০ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন : ঢাকার গণসমাবেশ থেকে বিএনপির ঘোষণা > ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী গণমিছিলের কর্মসূচি

পরের সংবাদ

এক পরিবারে ৪ প্রতিবন্ধী : কাউনিয়া

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গৌতম সরকার, কাউনিয়া (রংপুর) থেকে : কাউনিয়ায় একই পরিবারে চারজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। জীবন চলে ভিক্ষা আর মানুষের কাছে সাহায্য নিয়ে। একদিন ভিক্ষা না করলে আগুন জ্বলে না চুলায়, ভাত জোটে না একবেলা। তারা এই ভিক্ষাবৃত্তি থেকে মুক্তি চান।
কাউনিয়া উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার পূর্বে তালুক শাহবাজ গ্রামে ওয়াবদা বাঁধের উপর ঝুপড়ি বাড়িতে গিয়ে কথা হয় চার শারীরিক প্রতিবন্ধীর সঙ্গে। তারা শোনান তাদের দুর্বিষহ জীবনকাহিনী। তিন শারীরিক প্রতিবন্ধীর বাবা মো. আবুল হোসেন (৬৪) জানান, তার বড় ছেলে সাইদুল ইসলাম (৩৯) সুস্থভাবেই জন্ম নেয়। অন্য সব শিশুর মতোই স্বাভাবিকভাবেই হাঁটাচলা, স্কুলে যাওয়া-আসা পড়ালেখা- সবই ঠিকভাবে চলছিল তার। কিন্তু বিধাতার নির্মম পরিহাস। ১২ বছর বয়সে হাঁটুর উপর এবং হাতের কনুইয়ের উপর থেকে চিকন ও বাঁকা হয়ে যায়। একইসঙ্গে বোধ শক্তি কমতে থাকে। এক পর্যায়ে সে বিকলাঙ্গ হয়ে তার হাত-পা। শরীরের মাংস শুকিয়ে হাড়ের সঙ্গে লেগে যায়। স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করে কোনো লাভ হয়নি। এরপর জন্ম নেয় দ্বিতীয় ছেলে শামীম মিয়া (২৫)। ১২ বছর বয়সে তারও একই অবস্থা হয়। তারপর ছোট ছেলে রবিউল ইসলামেরও (২১) ১৩ বছর বয়সে একই পরিণতি হয়। তাদের মিশন হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো সম্ভব হয়নি।
আবুল হোসেন জানান, তিনি রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। স্থানীয় কুর্শা এলাকায় কাজে গিয়ে দুই তলা ভবনের উপর থেকে পড়ে গেলে তার দুটি পা ভেঙে যায়। চিকিৎসা নিয়ে কোনো রকম দাঁড়াতে পারলেও কাজ করতে পারেন না তিনি। বর্তমানে বাড়ির কাছে ওয়াপদা বাঁধে ছোট পানের দোকান দিয়ে সময় কাটছে তার। আর তিন শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলের সংসার চলছে বিভিন্ন হাট-বাজার ও রাস্তার ধারে বসে ভিক্ষা করে। তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সাইদুল মৃগীসহ নানা রোগে আক্রান্ত। মানুষের সাহায্য ছাড়া তিনি একা চলাফেরা করতে পারেন না। ভিক্ষাবৃত্তি আর সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতায় কোনো রকম দিন চলছে তাদের। নিজস্ব জমিজমা বলতে কিছুই নেই। এর মধ্যে সাইদুল ইসলাম ও শামীম মিয়া বিয়ে করেছেন। সাইদুলের দুটি আর শামীমের একটি সন্তান রয়েছে।
তারা জানান, মিশন হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছেন পরবর্তীতে তাদের সন্তানদেরও একই পরিণতি হতে পারে। আবুল হোসেনসহ তিন ছেলের চাওয়া একটি করে সরকারি ঘর আর একটি অটোরিকশা। সেটি ভাড়া দিয়ে আয় রোজগার যা হবে তা দিয়ে সংসার চালাবেন। তারা ভিক্ষাবৃত্তির অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি চান। বর্তমানে আবুল হোসেনের স্ত্রী নুরবানু বেগমও অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্যও সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়