জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি : ডা. এস এ মালেকের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি

আগের সংবাদ

পল্টন ছেড়ে গোলাপবাগে বিএনপি : বিকাল থেকেই সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের অবস্থান, রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

চারদিকে শুধু হানাদারদের পতনের খবর

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : ডেডলাইন ৯ ডিসেম্বর, একাত্তর। ভাটিবাংলার শহর নেত্রকোনা। টাইগারবাহিনীর কমান্ডার আবু সিদ্দীক আহমদের নেতৃত্বে হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমর। আগেরদিন তিনদিক থেকে পাকসেনাদের সঙ্গে লাগাতার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা। ৯ ডিসেম্বর কৃষিফার্ম এলাকায় অ্যাম্বোস পেতে হানাদারদের ওপর আক্রমণ করেন তারা। লড়াইয়ে শহীদ হন- আবু খাঁ, আব্দুস সাত্তার ও আব্দুর রশিদ। অবশেষে পাকসেনারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। হানাদার মুক্ত হয় নেত্রকোনা। নেত্রকোনার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, একাত্তরের রণাঙ্গনে এই জেলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার বীর সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীনতা অর্জনে প্রাণ দিতে হয় ৬৬ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ সহস্রাধিক সাধারণ মানুষকে।
৯ ডিসেম্বর যুদ্ধ জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। বিজয় অনিবার্য। যুদ্ধের শুরুতে সুশিক্ষিত পাক সেনাপতিরা ব্যঙ্গ করে বলেছিল, আমরা স্কাউটদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি! কিন্তু মাত্র ৯ মাসেই মুক্তিপাগল বাঙালি দামাল ছেলেদের কাছেই এমন মার খেতে হবে, মাথা নিচু করে দু’হাত তুলে প্রাণ বাঁচাতে আত্মসমর্পণ করতে হবে- এটা তাদের কল্পনায়ও ছিল না।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র পঞ্চম, ষষ্ঠ, একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ খণ্ড অনুযায়ী, একাত্তরের এদিন চারদিকে শুধু পাক হানাদারদের পতনের খবর। ঢাকা থেকে পাকিস্তান দখলদারবাহিনীর বেরোনোর সব পথ বন্ধ। বন্ধ হয়ে যায় তাদের ঢাকায় প্রবেশের পথও। সর্বত্র মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযান। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ঢাকা দখল। বাংলার মুক্তিপাগল বীর বাঙালির কাছে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে প্রশিক্ষিত পাক সেনারা। মাত্র একদিন আগেই বিমানে হাজার হাজার লিফলেট ছড়িয়ে পাক হানাদারদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায় মিত্রবাহিনী। মিত্র ও মুক্তিবাহিনী বীরদর্পে দেশের অধিকাংশ জেলায় বিজয় কেতন উড়িয়ে ঢাকা দখলের জন্য মরিয়া। একটাই লক্ষ্য হানাদার ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে চূড়ান্ত বিজয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর : একাত্তরের এদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারের নির্দেশে নৌবহর তার যুদ্ধ যাত্রা শুরু করে। ইয়াহিয়া খান ভেবেছিল, এতে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ভেঙ্গে যাবে। ঘটনার প্রতিক্রিয়া হয় উল্টো। মুক্তিযোদ্ধারা আরো বিপুল উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েন দেশমাতৃকাকে মুক্তি করার যুদ্ধে। কিন্তু রাশিয়া ও ভারতের হুশিয়ারি ও পাল্টা ব্যবস্থার কারণে নিক্সনের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়।
প্রতিরোধ যুদ্ধ : একাত্তরের এই দিনে মুক্ত হয় কুমিল্লার দাউদকান্দি, গাইবান্ধা, গাজীপুরের শ্রীপুর, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ।

মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনী চারপাশ থেকে রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে ফেলেছিল। প্রায় প্রতিদিনই যৌথবাহিনীর বিমান হামলায় পাকবাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছিল। ঘনিয়ে আসছিল তাদের পরাজয়ের ক্ষণ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়