দৈনিক বাংলার মোড় থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

কক্সবাজারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী : আগামীতেও নৌকায় ভোট চাই

পরের সংবাদ

১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী-২০২২ : শিল্পের মহাযজ্ঞের পর্দা উঠছে কাল

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনার জন্য বারবার পিছিয়ে গিয়ে এবার পর্দা উঠতে চলেছে ১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী-২০২২ এর। তবে পিছিয়ে গেলেও বাংলাদেশের গর্বের এই আয়োজন ফিরে এসেছে আরো বড় কলেবরে। হয়ে উঠতে যাচ্ছে বিশ্ব শিল্পের মহামিলনে। এশিয়ান আর্ট দ্বিবার্ষিককে কেন্দ্র করে শিল্পকলা একাডেমিজুড়ে এখন সাজ সাজ রব। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক এই শিল্পের মহাযজ্ঞের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশসহ এবার অংশ নিচ্ছে ১১৪টি দেশ। ৪৯৩জন শিল্পীর ৬৪৯টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হবে। আসরে পুরস্কার দেয়া হবে ৩টি, পুরস্কারের মূল্য ৫ লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট, ৬টি ৩ লক্ষ টাকার সম্মাননা পুরস্কার ও সার্টিফিকেট। এবারের প্রদর্শনী উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী। এ সময় জুরি বোর্ডের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন শ্রীলঙ্কার জগত ভিরাসিংহে, তুরস্কের নারসেরিন টর, যুক্তরাজ্যের ইয়োনা ব্লাজউইক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের প্রধান মিনি করিম। ধন্যবাদ দেন সচিব সালাউদ্দীন আহমেদ।
লিয়াকত আলী লাকী বলেন, এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল আমাদের জন্য মহোৎসব। এত দেশের অংশগ্রহণে কোনো দেশে বিয়েনাল আয়োজন হয় না। এটা এশিয়ান ছবির প্রদর্শনীর গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক রূপ নিয়েছে। তবে, ঐতিহ্যকে ধরে রেখে এর নাম বদলানো হচ্ছে না।
সারা বিশ্বের সমকালীন শিল্পকলাকে প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পপ্রেমী দর্শক ও সংগ্রাহকদের সামনে তুলে ধরতেই দ্বিবার্ষিক ভিত্তিতে উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে। দেশি-বিদেশি শিল্পীরা এসব শিল্পকর্মের মাধ্যমে তাদের সমকালীন চিন্তাভাবনাকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন।
১৯৮১ সাল থেকে চার দশক ধরে বিরতিহীনভাবে আয়োজন করা হচ্ছে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক চারুকলা উৎসব ‘দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ’। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এই আন্তর্জাতিক চারুকলা উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
উৎসবে বিদেশি শিল্পী যারা আসছেন, তাদের নিয়ে সেমিনার,

শিল্পবিষয়ক পর্যালোচনামূলক আলোচনা, আর্ট ট্রিপ ও কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বিদেশি শিল্পীদের বাংলাদেশে সাত দিন থাকা খাওয়ার পাশাপাশি তাদের নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে ভ্রমণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জানান, উৎসবে বিদেশি শিল্পীদের ছবি স্থান দেয়ার পাশাপাশি দেশের নির্বাচিত শিল্পীরাও থাকছেন। এছাড়া মাস্টার পেইন্টার ও স্বনামধন্য শিল্পীদের ছবিও স্থান পাচ্ছে উৎসবে। তাই শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার সবকটি গ্যালারিতে ছবি তো থাকছেই, সে সঙ্গে জাতীয় জাদুঘর, এশিয়াটিক সোসাইটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এছাড়া, দেশের প্রতিটি গ্যালারি এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল উপলক্ষে প্রদর্শনীর আয়োজন করবে জানান তিনি।
প্রদর্শনীর বাইরে উনিশতম আসরে বিদেশি শিল্পীদের নিয়ে রয়েছে পৃথক পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎসবের চতুর্থ দিন ১১ ডিসেম্বর ভিনদেশি শিল্পীদের নিয়ে যাওয়া হবে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়, জাতির পিতার সমাধিসৌধে। ফিরতি পথে অতিথিদের নিয়ে থাকছে নৌকাভ্রমণ। উৎসবের পঞ্চম দিন ১২ ডিসেম্বর তারা পরিদর্শন করবেন রাজধানীতে ছড়িয়ে থাকা ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষ্যবহ বিভিন্ন স্থান। সেই তালিকায় রয়েছে ভাষাশহিদদের স্মৃতিবিজড়িত শহিদ মিনার, জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং সংসদ ভবন।
এবার আয়োজনে স্থান পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন গ্রিসের ড্যানে স্ট্রাও, ঘানার ইব্রাহিম মাহামা, যুক্তরাজ্যের সুসান কলিন্স, নেপালের সুনিতা মহারাজ, কোরিয়ার মি ইয়ং আর্কিম, ইতালির অ্যালেক্স সালা ও যুক্তরাজ্যের কিমভি নুয়েন। চিত্রকর্ম, স্থাপনাশিল্প থেকে পারফরমিং আর্টের মাধ্যমে প্রদর্শনীতে নবমাত্রা জোগ করবেন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এই শিল্পীরা। বিশ্বখ্যাত এসব শিল্পীর সমান্তরালে প্রদর্শনীতে আলো ছড়াবে বাংলাদেশের বরেণ্য ও প্রতিভাবান শিল্পীদের শিল্পকর্ম। সেই সুবাদে দেশের মাস্টার পেইন্টারদের শিল্পকর্ম নিয়ে থাকবে বিশেষ আয়োজন। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসান, এস এম সুলতান, সফিউদ্দিন আহমদ, কাইয়ুম চৌধুরীসহ দেশের পৃথিকৃৎ ও প্রয়াত বরেণ্য শিল্পীদের সৃষ্ট শিল্পকর্ম নিয়ে পৃথক প্রদর্শনী জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনালয়ে। এ আসরে বাংলাদেশের বাইরে অংশগ্রহণকারী বাকি ১১৪টি দেশের মধ্যে আছে আর্জেন্টিনা, অ্যাঙ্গোলা, বেনিন, ক্যামেরুন, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, তিউনিসিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভেনিজুয়েলা, আফগানিস্তান, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং ইউক্রেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়