দৈনিক বাংলার মোড় থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

কক্সবাজারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী : আগামীতেও নৌকায় ভোট চাই

পরের সংবাদ

ভেঙে ফেলা হবে স্টেডিয়াম ৯৭৪

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : শেষ হয়েছে কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের লড়াই। আটটি দল উঠে এসেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। বিশ্বকাপ উপলক্ষে প্রস্তুত করা হয়েছিল ৮টি স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ শেষের পর ভেঙে ফেলা হবে কন্টেইনার দিয়ে বিশেষভাবে বানানো ‘স্টেডিয়াম ৯৭৪’।
এটি ছিল বিশ্বকাপের প্রথম অস্থায়ী স্টেডিয়াম। এমন অদ্ভূদ নামকরণের কারণ ছিল দেশটির ডায়ালিং কোড। কাতারের ডায়ালিং কোড নম্বর হচ্ছে ৯৭৪। আর এই স্টেডিয়াম তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়েছে ৯৭৪টি কন্টেইনার। দূর থেকে এটিকে দেখলে স্টেডিয়াম মনে হয় না। মনে হয় চারদিকে কন্টেইনারের সারি। তবে কন্টেইনারগুলোকে দৃষ্টিনন্দভাবে সাজিয়ে ভিতরে করা হয়েছিল গ্যালারি। কাতার বিশ্বকাপে সাত ম্যাচের ভেন্যু ছিল এই স্টেডিয়াম। মেক্সিকো-পোল্যান্ডের ম্যাচ দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় এই স্টেডিয়ামের। আর শেষ হয় নকআউটের ব্রাজিল-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচ দিয়ে। স্টেডিয়ামটিতে আরো খেলেছে আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, পর্তুগালসহ আরো অনেক দল।
আবু আবুদ স্টেডিয়ামটির নতুন সংস্করণ হচ্ছে স্টেডিয়াম ৯৭৪। এই স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ছিল ৪০ হাজার। ভেন্যুটির অবস্থান ছিল দোহা পোর্টের কাছেই। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এমন ঘটনা আর দ্বিতীয়বার ঘটেনি। স্টেডিয়ামটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যেখানে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আলাদা কোনো প্রযুক্তি দরকার হয়নি।
এবারের আসরে এখানে আর কোনো ম্যাচ হবে না। এই স্টেডিয়ামটিও ইতিহাসে থাকবে শুধু অস্তিত্বহীন নাম হয়ে।
এই স্টেডিয়ামটি প্রস্তুতের সময়ই বলা হয়েছিল বিশ্বকাপ শেষে এটি ভেঙে ফেলা হবে। সেজন্য এটিকে বানানো হয়েছিল পুরোপুরি অপসারণযোগ্য করে। বিশ্বকাপের পর এই কনটেইনারগুলো সরিয়ে ফেলা হবে, পুনরায় ব্যবহার করা হবে আগের কাজে। তবে কোনো দেশ যদি স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে চায় তাহলে এর অংশগুলো তাদের দিয়ে দেয়া হবে। সেটা হলে এশিয়ার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে এই কনটেইনারের ?টুকরোগুলো। স্টেডিয়ামটি তৈরির আগে নির্মাণের সঙ্গে জড়িত একজন প্রজেক্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ আল আতওয়ান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, এমন স্টেডিয়ামের কথা সাধারণত ফুটবলপ্রেমীরা জানেন না, এমনকি পরিচিতও নয়। ৪০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতার এই ভেন্যুর প্রতিটি জিনিসই ভেঙে সরিয়ে নেয়া সম্ভব এবং সেগুলো দিয়ে ২০ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন আরো দুটি স্টেডিয়াম বানানোর মতো সক্ষমতা রয়েছে। আর এটাই এই স্টেডিয়ামের আসল সৌন্দর্য্য। এই স্টেডিয়ামের সর্বশেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে কোয়ার্টার-ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল।
এজন্য ব্রাজিলের খেলোয়াড় ও সমর্থকরা এই স্টেডিয়ামকে মনে রাখবে হয়তো আজীবন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ানদের কাছে স্বপ্নভাঙার মৃত্যুকূপ হয়ে থাকবে এই স্টেডিয়াম। ঘানা, ডেনমার্ক ও সার্বিয়ার মুখে হাসি ফুটেনি এই স্টেডিয়ামে। আর্জেন্টিনার কাছে পোল্যান্ডও হেরেছে এই স্টেডিয়ামে। সুইজারল্যান্ড এই স্টেডিয়ামে হেরেছে একটি ম্যাচে এবং জিতেছে একটি ম্যাচে।
মডিউলার স্টিল ও শিপিং কন্টেনার দিয়ে তৈরির কারণেই বিশ্বকাপের শেষে সহজেই ভেঙে ফেলা যাবে এই স্টেডিয়াম। স্টেডিয়াম ভাঙার সময় যাতে দূষণ না হয়, তা আলাদা ভাবনাও নিয়েছে কাতার প্রশাসন। এমনকি প্রয়োজনে ওই কন্টেনার পুনরায় ব্যবহারও করা যাবে। এমনি চাইলে অন্য দেশেও স্থানান্তর করা যাবে। তবে যতকিছুই হোক ক্রীড়াপ্রেমিদের কাছে স্টেডিয়ামটি স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়