প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
রাজীব দেব রায় রাজু, মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে : মাধবপুরে সোনাই নদীর চৌমুহনী এলাকায় খনন কাজে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। নদীর তলদেশ খনন না করে নদীর পাড় কেটে পাড়েই মাটি ফেলে লোক দেখানো খনন কাজ করছেন ঠিকাদার। এভাবে পাড় বাঁধার কারণে বৃষ্টি হলে পাড় ভেঙে আবার নদীতে মাটি চলে যাবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এভাবে কাজ করায় নদী খননের আসল উদ্দেশ্য যেমন পূরণ হচ্ছে না অন্যদিকে সরকারের অর্থ অপচয় হচ্ছে। তাছাড়া নদীর অনেক জায়গা খনন না করা ও নদী খননের ঠিকাদারের লোক নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নদীগুলোর নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নদী খনন কাজ শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সোনাই ও খাষ্টি নদী খনন করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড টেন্ডার আহ্বান করলে ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খাষ্টি ও সোনাই নদী খনন কাজ পায়। খাষ্টি নদী ও সোনাই নদী খনন কাজের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় প্রায় ৩৪ কোটি টাকা। বহরা রাবার ড্যাম থেকে চৌমুহনী (ভুড্ডা) এলাকা হয়ে বাংলাদেশের শেষ সীমানা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার নদী খনন করার কাজ পান মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ বশির উদ্দিন। ৮ কিলোমিটার কাজের ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ৬ কোটি টাকা। স্থানীয় এক ব্যাক্তি জানান, নদী খননের নামে মানুষের গাছ, বাঁশ কাটছে। মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। আমার মনে হয় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আতিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, নদী পাড়ের মাটি কাটছে, নদীর ভেতরের কোনো মাটি কাটেনি। নদীর পাড় থাকবে না, ভেঙে পড়ে যাবে। বেশি হলে বছরখানেক থাকবে পাড়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান দুলু জানান, সোনাই নদীর খননে কোটি কোটি টাকার যে প্রকল্প এসেছে, আমরা দেখেছি নদী থেকে তারা এক বেলছা মাটিও উত্তোলন করেনি। বরং তারা বসত পাড় কেটে শুধু লেভেল করেছে। আমার আকুল আবেদন কর্তৃপক্ষ যেন সঠিকভাবে তদন্ত করেন।
চৌমুহনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ জানান, নদী খননের ব্যাপারে সে আমার সঙ্গে একদিন দেখা করতে এসেছিল। কিন্তু অফিসিয়ালি কোনো সাক্ষাৎ হয়নি। সে বলছে নদী খনন করবে। নদী খনন চলছে। এটা কি আইনগতভাবে হচ্ছে না শিডিউল মেনে হচ্ছে আমি জানি না।
নদী খনন কাজে ঠিকাদারের নিযুক্ত ম্যানেজার শানু শিকদার জানান, নদী খনন নিয়ম অনুযায়ী হচ্ছে। আর বালুগুলো নদী থেকে উঠিয়ে পাড়ে রাখা হচ্ছে। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। রাতের আঁধারে বালু বিক্রি করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, এলাকার কিছু লোক রাতে বালু বিক্রি করে, নদী খনন কাজে ২-৩ জন লোক রয়েছে তারা তো বাধা দিতে পারবে না।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, নদীর তলদেশ যদি না কাটে তাহলে ঠিকাদারের ক্ষতি। ঠিকাদার তো বিল পাবে না। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ডিজাইন আছে, ডিজাইনের মতো যদি কাজ না করে তাহলে বিল পাবে না। আর এক্সকাভেটর পানিতে নামানো যাবে না।
এক্সকাভেটর পানিতে ভাসে না। তারপর আমরা ফাইনালি একটি সার্ভে করব। তাদের ম্যাজারমেন্টগুলো আমরা করি না। ঢাকা থেকে একটি টিম আসে তারা করবেন বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।