দৈনিক বাংলার মোড় থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

কক্সবাজারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী : আগামীতেও নৌকায় ভোট চাই

পরের সংবাদ

নোয়াখালী ও নাসিরনগর হানাদারমুক্ত হয় আজ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সারাদেশ ডেস্ক : আজ ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের জন্য বিশেষ স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদারদের কাছ থেকে মুক্ত হয় অঞ্চলগুলো। দিবসটি উপলক্ষে নিজ নিজ এলাকায় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
নোয়াখালী : আজ ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে রাজাকারদের ঘাঁটিতে বিজয় নিশান উড়িয়েছিল মুক্তিসেনারা।
একাত্তরে ২৫ মার্চের পর প্রায় এক মাস ধরে নোয়াখালীকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন মুক্তিকামী মানুষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পদে পদে বাধা অতিক্রম করে পাকিস্তানি সেনারা ২৩ এপ্রিল নোয়াখালী জেলা শহরে ঢুকে পড়ে। পাকিস্তানি সেনারা কয়েক দফায় জেলা সদরের সোনাপুর, শ্রীপুর, গুপ্তাংক, রামহরিতালুক, বেগমগঞ্জের কুরীপাড়া, গোপালপুর ও আমিশাপাড়ায় নির্বিচারে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এসময় গুলি ও পুড়িয়ে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে ও ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অস্ত্র হাতে মাঠে নামে পাক-হানাদার ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে।
কোম্পানীগঞ্জের বামনী, তালমাহমুদের হাট, ১২ নং স্লুইস গেইট, সদরের উদয় সাধুর হাট (ওদারহাট), করমবক্স বাজার, বেগমগঞ্জের ফেনাকাটা পোল, রাজগঞ্জ ও বগাদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা।
নোয়াখালীকে হানাদারমুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুতি যখন প্রায় চূড়ান্ত, ঠিক তখনই ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে মাইজদী পিটিআই ও বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল হাইস্কুল ক্যাম্প ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানিরা।
এসময় বেগমগঞ্জ-লাকসাম সড়কের বগাদিয়া ব্রিজ অতিক্রম করতেই সুবেদার লুৎফুর রহমান ও শামসুল হকের নেতৃত্বাধীন মুক্তি বাহিনীর হামলায় অসংখ্য পাকসেনা ও মিলিশিয়া মারা যায়।
৭ ডিসেম্বর সকাল থেকে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটি জেলা শহরের মাইজদী প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) থেকে থেমে থেমে গুলিবর্ষণ করলে মুক্তিসেনারা পাল্টা আক্রমণ ও গুলিবর্ষণ করে রাজাকারদের ওই প্রধান ঘাঁটি দখলের মধ্য দিয়ে নোয়াখালীর মাটিকে মুক্ত করে লাল সবুজের বিজয় নিশান উড়িয়েছিল।
মুক্ত দিবস উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলন জানান, দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল ১১টায় মাইজদী পিটিআই সংলগ্ন মুক্ত স্কয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে জেলা শহরে মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা ও বিকাল ৩টায় বিজয় মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : আজ ৭ ডিসেম্বর নাসিরনগরের ইতিহাসে বিশেষ স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশপ্রেমিক মুক্তিকামী মানুষ নাসিরনগর থানার অভ্যন্তরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে নাসিরনগরকে পাক হানাদারমুক্ত করে।
সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সোহরাব মোল্লা জানান, ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর এ দেশীয় দোসর, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নাসিরনগরে বিপুল সংখ্যক সৈন্য নিয়ে সদর ইউনিয়নের ফুলপুর, কুলিকুন্ডা গ্রাম, গোকর্ণ ইউনিয়নের নূরপুর এবং বুড়িশ্বর ইউনিয়নের সিংহগ্রাম ও তিলপাড়ায় অগ্নিসংযোগ ও অত্যাচার চালায়।
তিনি আরো জানান, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি নিরীহ মানুষের ঘরে চালায় লুটপাট। পাকিস্তানি বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনে সে সময় অনেকেই হতাহত হন। অবশেষে ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তুলে নাসিরনগর থানা অভ্যন্তরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে নাসিরনগরকে পাক হানাদারমুক্ত করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়