স্থায়ী কমিটি : স্টেডিয়ামে নারীদের খেলার পরিবেশ নিশ্চিতের সুপারিশ

আগের সংবাদ

দফায় দফায় বাড়ছে ওষুধের দাম : দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ক্যাবের, দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ রোগে ভুগে মারা যাবে

পরের সংবাদ

কে এই আলভারেজ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপে পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে নক আউট পর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। এ ম্যাচে একটি গোল করেন জুলিয়ান আলভারেজ। তার পা থেকে আসা দারুণ গোলটাই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেয় ২-০ গোলে।
প্রথম পছন্দের স্ট্রাইকার মার্তিনেসের জায়গায় আলভারেজের শুরুর একাদশে থাকা অনেকের জন্যই বড় চমক হয়ে আসে। তবে ক্লাব ফুটবলে যারা তাকে দেখেছেন, তাদের জন্য হয়তো এটা স্বাভাবিকই। রিভার প্লেটে এক সময় আলো ছড়ানো এই তরুণ এবার বিশ্বমঞ্চে দিয়েছেন নিজের আগমনী বার্তা। করদোবার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া আলভারেজ ছেলেবেলা থেকেই হাসিখুশি স্বভাবের, প্রাণবন্ত। নাদুস-নুদুস গালভরা মিষ্টি হাসিতে মাতিয়ে রাখতেন বাড়ির চৌহদ্দি। পরিবারটিও ফুটবলপ্রেমী। তাই ছয়-সাত বছর বয়সে তার ফুটবলের আঙিনায় পা রাখা।
প্রতিপক্ষের গোলমুখে আক্রমণের জাল বিছিয়ে রাখতে আলভারেজ এমনই পারদর্শী যে, রিভার প্লেটে খেলার সময় দলটির সমর্থকরা তাকে ডাকত, ‘লা আরানা’ বা ‘দা স্পাইডার’ বলে। দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪-এর আঙিনায় পোল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু থেকে আক্রমণের জাল বিছানোর ছক কষেছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘ দিনের সতীর্থ দি মারিয়া ও তরুণ আলভারজেকে নিয়ে শুরু থেকে একের পর আক্রমণ করলেন মেসি। কেবল গোলটাই পেলেন না এই জাদুকর। তার উপর করলেন পেনাল্টি মিস। এমন ঘোরতর বিপদে আলেক্সিস মাক আলিস্তেরের গোল আসে স্বস্তির পরশ হয়ে।
এরপর আলভারেজের ঠাণ্ডা মাথার গোল কিছুটা দোদুল্যমানতায় দুলতে থাকা আর্জেন্টিনার পালে বইয়ে দেয় স্বস্তির সুবাতাস।
আলভারেজের গল্পটা শুরু করদোবার স্থানীয় এক ফুটবল স্কুলে, হুগো রাফায়েল ভারাসের হাত ধরে। ওই ভদ্রলোক বিখ্যাত কোচ নন, মূলত পিৎজা ও রুটি বিক্রি করে বেড়াতেন, পাশাপাশি চালাতেন ছোট একটা ফুটবল স্কুল। ওই স্কুলেই আলভারেজের হাতেখড়ি। একটু একটু করে বেড়ে উঠতে লাগলেন আলভারেজ। ভারাস বুঝে নিলেন প্রিয় শিষ্যটিকে আরেকটু বড় আঙিনায় ছেড়ে দেয়ার সময় হয়েছে। আথলেটিকো কালচিন ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, তাদের যুব দলে ঢুকিয়ে দিলেন। আলভারেজের সামনের আঙিনা বড় হতে থাকল।
এ ম্যাচে আর্জেন্টিনা শুরু থেকেই ত্রাস ছড়িয়েছে পোলিশ রক্ষণে। ৬ আর ১০ মিনিটে মেসির দুটো শট ঠেকিয়ে দেন সজেসনি। তবে আর্জেন্টিনার প্রথম দারুণ সুযোগটা এসেছিল ম্যাচের ২৮ মিনিটে। ইউলিয়ান আলভারেজের দারুণ একটা শট গোলরেখা ছেড়ে বেরিয়ে এসে ঠেকিয়ে দেন সজেসনি। ফিরতি চেষ্টায় মার্কোস আকুনইয়া শটটা নেন লক্ষ্যের অনেক বাইরে দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আর্জেন্টিনাকে সেই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন ম্যাক অ্যালিস্টার। বিরতির পর প্রথম আক্রমণেই ডান পাশ দিয়ে আক্রমণে ওঠা নাহুয়েল মলিনা নিচু ক্রস বাড়ান বক্সে। সেটা পোলিশ রক্ষণ বিপন্মুক্ত করতে পারেনি। ফাঁকায় থাকা ম্যাক অ্যালিস্টার বুদ্ধিদীপ্ত এক শটে বলটা জালে জড়ান। তাতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচে যেন আর্জেন্টিনা। এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। দ্বিতীয় গোলের জন্য আর্জেন্টিনাকে অপেক্ষা করতে হয় আরও ২১ মিনিট। ৬৭ মিনিটে দ্বিতীয় ম্যাচের গোলদাতা এনজো ফের্নান্দেজ বল বাড়ান বক্সে থাকা ইউলিয়ান আলভারেজকে। সেখান থেকে তিনি যা করেন, তা যেন সেই মেক্সিকো ম্যাচের পুনরাবৃত্তিই। শুধু পার্থক্য, সেদিনের শটটা নিয়েছিলেন ফের্নান্দেজ, আর এ ম্যাচে আলভারেজ। বক্সের ভেতর বাম পাশ থেকে শট নেন ফার পোস্টে, সেটা গোলরক্ষক ভয়চেখ সজেসনির হাত ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে। তাতেই দুই গোলের স্বস্তি চলে আসে আর্জেন্টিনা শিবিরে।
আর্জেন্টাইন সমর্থকদের জার্সির পিঠে দুটি নাম খোদাই করা সবচেয়ে বেশি। অবধারিতভাবে প্রথমটি লিওনেল মেসি। কিছুটা বিস্ময়কর শোনালেও দ্বিতীয় নামটি লাউতারো মার্তিনেসের। স্ট্রাইকার হিসেবে আর্জেন্টিনার প্রথম পছন্দ তিনিই। দোহার রাজপথে, স্টেডিয়ামগুলোতে বয়ে যাওয়া আকাশি-নীল জার্সির স্রোতে জুলিয়ান আলভারেজের নামের দেখা মিলেছে কালেভদ্রে। পোল্যান্ডের বিপক্ষে চমৎকার পারফরম্যান্সের পর হয়তো এই তরুণের জার্সিও আপন করে নেবেন আর্জেন্টিনার ভক্তরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়