অভিনেত্রী শিমু হত্যা মামলায় স্বামীসহ দুজনের বিচার শুরু

আগের সংবাদ

বাস্তবায়ন থমকে, শান্তি অধরা : শান্তিচুক্তির ২৫ বছর, সংঘাতে অশান্ত পাহাড়, বাড়ছে নতুন নতুন সশস্ত্র সংগঠন

পরের সংবাদ

আয়কর জমা হোক নির্বিঘ্ন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আয়করদাতা নিজের আয়কর কোনো প্রকার হয়রানি, বিড়ম্বনা ছাড়াই নিজেই ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে অতি সহজেই জমা দিতে পারে সেটাই এনবিআরকে স্বচ্ছ আয়কর আদায়ে সেবার মান বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজস্ব অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এনবিআরকে অবশ্যই পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন পদ্ধতির ব্যবস্থা সহজীকরণ জ্ঞাত করতে হবে। পাশাপাশি ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট ইনস্পেক্টর ও আয়কর আইনজীবীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। তারা অতিমাত্রায় আয়করদাতা ও ভ্যাট প্রদানকারীদের অযথা ভয়ভীতি এবং হয়রানি করে থাকে। মূলত আয়কর দেয়া নেয়ার পদ্ধতিতে আরো স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা আনার ব্যাপারে এনবিআরকে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছ কর ব্যবস্থা ও স্বচ্ছ করদাতাদের সম্মান প্রদানের মাধ্যমে দেশে আরো করদাতার সংখ্যা শুধু বৃদ্ধিই পাবে তাই নয়, সরকার আরো হাজার হাজার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ে সক্ষম হবে। প্রত্যেক্ষ কর ব্যবস্থা যত সহজ হবে ততই করদাতাদের হয়রানি, বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ কমে আসবে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের পরে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় কর আধিকারিকদের দীর্ঘসূত্রতা বন্ধ করে পুরো ব্যবস্থাটি আরো গতিশীল করতে হবে। এ ব্যবস্থায় কর দপ্তরের আধিকারিক এবং করদাতাদের ব্যক্তিগতভাবে মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ কমে আসবে। উল্লেখ্য, দেশ গঠনের কাজে করদাতারা বিরাট ভূমিকা পালন করলেও মাঠ পর্যায়ে এক শ্রেণির আয়কর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দৌরাত্ম্যে কর ও ভ্যাটদাতারা অতিষ্ঠ। অনলাইনে অথবা ব্যাংকের ট্রেজারিতে আয়কর জমা দেয়ার পর দ্রুত আয়কর জমা দাতাকে ‘আয়কর দাতা সনদ’ প্রদান করবে সংশ্লিষ্ট আয়কর অফিসগুলো। সেখানে ট্যাক্স অফিসার এবং আয়করদাতাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সরকারের গত ৫ বছরের চেষ্টায় আয়কর রিটার্ন ফাইলের সংখ্যা বেড়েছে। এটাও কম উন্নতি নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও করদাতাদের সংখ্যা যে খুবই কম, তা অস্বীকারের উপায় নেই। আমাদের আত্মসমীক্ষা করতে হবে। তবে রাজস্ব আদায়ের মূল জায়গাগুলো এখনো দুর্নীতিতে অন্ধকার। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও কাঠামোগত দুর্বলতায় কারণে বাংলাদেশে দুর্নীতির অবস্থানের উন্নতি হচ্ছে না। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শুদ্ধাচারের অবক্ষয়, রাজনীতির সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনীতির সঙ্গে দুর্নীতি ও অপরাধের যোগের কারণে রাজস্ব খাতে কোনোভাবেই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, এক শ্রেণির রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠ পর্যায়ে নানা দুর্নীতি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে। তারাই এখন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ বা তল্লাশি করার জন্য নতুন করে আইন সংশোধন করে একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রদানে সম্ভবত সরকারের মোটেও রাজস্ব আয় বাড়বে না বরং তল্লাশিকারকদের পকেট ভারি হওয়ার আশঙ্কা যথেষ্ট। এনবিআরের এ ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। ট্যাক্স নেয়ার পদ্ধতি সহজ না করার পরিবর্তে নিত্যদিন নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে এ ধরনের আইনগুলো রাজস্ব আদায়ে বাধাগ্রস্ত এবং সেবার পরিবর্তে করদাতারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতারিত হচ্ছেন। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ বিলের মাধ্যমে ৮৩ ধারায় নতুন উপধারা যুক্ত করে রাজস্ব কর্মকর্তাদের নিবন্ধিত বা নিবন্ধনযোগ্য ব্যক্তির উৎপাদনস্থল বা সরবরাহস্থল বা সেবা প্রদানস্থল বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন এবং মজুদপণ্য, সেবা উপকরণ ও হিসাব পরীক্ষা করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এটা কি এনবিআর ঠিক করেছে? দেশের করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অহেতুক কোনো হয়রানি ছাড়া মানুষ সহজে কর দিতে পারে সেদিকে সরকারকে সুনজর দিতে হবে। প্রয়োজনে এনবিআর করদাতাদের করভীতি থেকে সরিয়ে সেবার মনোভাব প্রয়োগে কাছে টেনে নিতে হবে।

মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী : লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়