মৃত্যুবার্ষিকী আজ : সাবেক মেয়র হানিফ স্মরণে নানা কর্মসূচি

আগের সংবাদ

সমাবেশ ঘিরে দুপক্ষের হুঙ্কার : বিএনপি নেতাদের বক্তৃতায় প্রচ্ছন্ন হুমকি > ছাড় না দেয়ার ঘোষণা আওয়ামী লীগ নেতাদের

পরের সংবাদ

ভয়াল ২৯ নভেম্বর : উপকূলবাসী আঁতকে ওঠে আজো

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তালুকদার আব্দুল বাকী ও মিজানূর রহমান আকন, বাগেরহাট থেকে : আজ ভয়াল ২৯ নভেম্বর। ১৯৮৮ সালের এই দিনে প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে বিধ্বস্ত হয় উপকূলীয় অঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদ। ভয়াল সেই তাণ্ডবের কথা স্মরণ করে আজো আঁতকে ওঠে বাগেরহাটসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষ। আজ পূর্ণ হচ্ছে ভয়াল প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াসের ২৫ বছর।
ভয়াবহতম তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বাগেরহাটসহ উপকূলীয় জনপদ। নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ঘরবাড়িসহ সব সহায়-সম্পদ। বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায় শত শত মাছধরা ট্রলার নিখোঁজ হয় সহ¯্রাধিক জেলে। বাগেরহাটের শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, মোংলায় প্রাণ হারায় কয়েক হাজার মানুষ। জেলায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতির শিকার হয়। ঝড়-জলোচ্ছ¡াসের তান্ডবে বিভিন্ন উপজেলায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্তসহ ২০ হাজার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর ক্ষতি হয় এক কোটি টাকার, ২০ হাজার চিংড়ি ঘেরসহ মৎস্য খামার, এক কোটি টাকার বিভিন্ন ফসল, ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রায় ৫ শতাধিক মসজিদ-মন্দির, ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ৫ সহ¯্রাধিক নৌকা, ট্রলার ও জাল এবং বিপুল পরিমাণ বনাঞ্চলের ক্ষতি হয়। প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের প্রায় ১৫ ভাগ এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়াবী চিত্রল হরিণসহ শত শত গবাদিপশুও রেহাই পায়নি সেদিন। মোংলার পতিতাপল্লী বানিশান্তার যৌনকর্মীরা সেদিন আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও লোকালয় আশ্রয় পাননি। প্রবল জলোচ্ছ¡াসের তোড় আর ঘরচাপা পড়ে ওই নিষিদ্ধ পল্লীর ১৬০ জন যৌনকর্মী প্রাণ হারিয়েছিলেন। সুন্দরবন সংলগ্ন সাগরদ্বীপ দুবলা, আলোরকোল, চর মেহেরআলী, জেলের ট্যাক ও মাঝের চরে অবস্থানরত প্রায় ১০ হাজার জেলের কেউ বাঁচতে পারেননি। সেদিন মানুষ আর পশুর মরদেহ একাকার হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সাগর আর নদীর জলরাশিতে। নিহত অনেক জেলের মরদেহ সেদিন বাধ্য হয়ে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল সমুদ্রে জেগে ওঠা চরে। সেই থেকে জেলেরা ওই চারটি চরের নাম দিয়েছে ‘মরণ চর’। ইতিহাসের নির্মম এ ঘটনার পর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত জেলেদের নিরাপত্তার জন্য সরকারিভাবে সমুদ্রবক্ষের চরগুলোতে ৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। জেলেদের আগাম সতর্ক করার জন্য মৌসুমি পূর্বাভাস কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দুবলার চরে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির আওতায় একটি বেতার যন্ত্রসহ একজন কর্মকর্তা দুবলায় অবস্থান করে জেলেদের মধ্যে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়