নাইক্ষ্যংছড়ি : ডিজিএফআই কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় মামলা

আগের সংবাদ

তিন কারণে ভালো ফলাফল : সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নপত্রে সুবিধা ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের প্রভাবে পাসের হার বেড়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায়

পরের সংবাদ

পাসপোর্ট করতে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকা, না দিলেই হয়রানি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাইফুর রহমান ফারুক, টাঙ্গাইল থেকে : টাঙ্গাইলে পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রাহক ভোগান্তি আর দুর্নীতির মাকড়সার জালে ছেয়ে গেছে পাসপোর্ট অফিস। অতিরিক্ত টাকা ছাড়া পাসপোর্ট করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অফিসের সব কর্মকর্তা ও এমনকি পিয়নও উৎকোচ গ্রহণের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি যেন ওপেন সিক্রেট।
মূলত পাসপোর্ট করে দেয়ার জন্য দালালরা ওঁৎপেতে বসে থাকে। অফিসে দালাল ছাড়া কোনো পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা হয় না। এতে করে পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে।
জানা গেছে, কতিপয় দালাল ও অফিসের কর্মচারীরা উৎকোচ গ্রহণের নাম দিয়েছেন ‘চ্যানেল ফি’। আর এই চ্যানেল ফির নামে পাসপোর্ট করতে আসা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে নির্ধারিত ফির দ্বিগুণ টাকা।
ভুক্তভোগীরা জানান, সাধারণ পাসপোর্ট বাবদ খরচ হয় সরকারি ফি (ব্যাংক চালান) তিন হাজার টাকা ও জরুরি পাসপোর্ট ফি ছয় হাজার টাকা। আর আবেদনপত্রের কাগজপত্র বাবদ খরচ প্রায় ৫০ টাকা। কিন্তু চ্যানেল ফি চক্রের মাধ্যমে সাধারণ পাসপোর্ট করতে আসা গ্রাহকদের গুনতে হয় সাত হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা ও জরুরি পাসপোর্ট করতে নেয়া হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এই আদায়ের অতিরিক্ত টাকার শতকরা ৭০ ভাগ নেন অফিসের লোকজন, আর বাকি ৩০ ভাগ টাকা রাখা হয় রাজনৈতিক ও দালালদের জন্য। গ্রাহকরা আরো জানান, আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ও সরকার নির্ধারিত ফি (ব্যাংক চালান) জমা দিয়ে চালানপত্র দেয়ার পরও অফিসের কর্মকর্তারা নানা ধরনের ভুল ধরেন। এরপর তা সংশোধন করে অন্যদিন জমা দেয়ার কথা জানান তারা। মূলত চ্যানেল ফি না দেয়া গ্রাহকদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়। আর অফিস থেকে বেড়িয়ে এলেই আবেদনকারীকে ঘিরে ধরে দালালচক্রের চার থেকে পাঁচ সদস্য। তারা আবেদনকারীকে জানান, ‘চ্যানেল ফি না দিলে’ দিনের পর দিন ঘুরতে হবে। এ সময় দালালরা বুঝান, বার বার অফিসে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করার চাইতে চ্যানেল ফি দেয়াই শ্রেয়। কিন্তু একই রকম কাগজপত্রের আবেদনপত্র দালাল মারফত জমা (চ্যানেল ফি সহ) দিলে সঙ্গে সঙ্গে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে দ্রুত পাসপোর্ট পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, টাঙ্গাইল পাসপোর্ট অফিসে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী দালালচক্র। দালালরা অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। মোবাইল বা অন্যভাবে সংকেত পেয়ে আবেদনকারীকে তারা পাকড়াও করে। মোট কথা সাধারণভাবে জমা হওয়া প্রতিটি পাসপোর্টের আবেদনপত্রে জন্ম সনদ, বয়স বিভ্রান্তিসহ সত্যায়নে ভুল ধরে দালালচক্রের মাধ্যমে চ্যানেল ফি আদায় করা হয়। অন্যদিকে চ্যানেল মারফত টাকা দিলে স্বামীর উপস্থিতি ছাড়াই সত্যায়ন করে অবাধে পারিবারিক পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর সত্যিকার পরিচয় থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে। এ বিষয়ে কথা বলতে টাঙ্গাইল পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মাসুম হাসানের মোবাইলে কল করা হলেও তা রিসিভ করেননি তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়