নাইক্ষ্যংছড়ি : ডিজিএফআই কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় মামলা

আগের সংবাদ

তিন কারণে ভালো ফলাফল : সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নপত্রে সুবিধা ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের প্রভাবে পাসের হার বেড়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায়

পরের সংবাদ

নিকার বৈঠকে সিদ্ধান্ত : পদ্মা ও মেঘনা বিভাগ এ বছর আর হচ্ছে না

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে কেন্দ্র করে পদ্মা ও মেঘনা বিভাগ এ বছর আর হচ্ছে না। গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উঠলে তা চলতি বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, একটি বিভাগ করতে গেলে হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। সরকার এখন ব্যয় সংকোচন নীতিমালা নিয়ে চলছে। এ কারণে আপাতত পদ্মা, মেঘনা বিভাগ করা হচ্ছে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, শ্যামনগর উপজেলাকে সি গ্রেডের পৌরসভা হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে, ময়মনসিংহের নান্দাইলে পৌরসভার সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নিকার অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ কায়কোবাদ খন্দকারের সই করা সভার আলোচ্য সূচি থেকে জানা যায়, দেশের প্রধান দুই নদী পদ্মা ও মেঘনার নামে আরো দুটি বিভাগ করতে যাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে নাম দুটি চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, যা প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে উঠবে। পরে গতকালের বৈঠকে এই নতুন দুই বিভাগ করার প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়নি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এখন যেহেতু আমরা সাশ্রয় করছি, এখন দুটো বিভাগ করতে গেলে অনেক খরচ হবে। এ কারণে আপাতত এটাকে স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ৪টি এজেন্ডা অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। গতকালের নিকার সভায় মোট আলোচ্যসূচি ছিল ছয়টি। এর মধ্যে প্রথম দুটিই ছিল পদ্মা ও মেঘনা বিভাগ গঠনের প্রস্তাব। এ দুটি বিভাগ গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন হলে দেশে বিভাগের সংখ্যা হতো ১০টি। প্রস্তাব অনুযায়ী ঢাকা বিভাগ থেকে ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী আলাদা করে গঠন হওয়ার কথা ছিল পদ্মা বিভাগ। আর চট্টগ্রাম বিভাগকে ছেঁটে ফেলে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও ল²ীপুর নিয়ে গঠন করার কথা ছিল মেঘনা বিভাগ। দেশে এখন পর্যন্ত যে আটটি বিভাগ রয়েছে তার প্রতিটিই অঞ্চলের প্রধান জেলার নামে করা হয়েছে, তবে এ রীতি ভেঙে প্রথমবারের মতো জেলার নাম ছাড়া প্রশাসনিক ইউনিটের নামের প্রস্তাব আসে।
জানা গেছে, বিভাগ দুটি করলে এক হাজার কোটি টাকা করে অন্তত দুই হাজার কোটি টাকা প্রাথমিকভাবে দরকার। সেইসঙ্গে প্রতিটি বিভাগে অন্তত ২৮টি করে নতুন দপ্তর খুলতে হবে। সেসব দপ্তরে জনবলসহ আনুষঙ্গিক অনেক বিষয় জড়িত। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকার উন্নয়ন কাজের অর্থ বরাদ্দে গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই নতুন বিভাগের কাজ আগামী অর্থবছর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
বৈঠকের পর একটি সূত্র জানিয়েছে, এ দুইটি বিভাগ করা নিয়ে অন্যান্য জেলা, নামকরণসহ অনেক বিষয় বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার আপাতত এ সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রের আগের তথ্যমতে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর চাপ কমানো এবং প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে প্রায় এক দশক আগে থেকেই নতুন বিভাগ গঠনের আলোচনা হচ্ছে।
কুমিল্লা ও ফরিদপুরের স্থানীয় রাজনীতিকরা তাদের শহরের নামেই বিভাগ চেয়েছিলেন। নিজেদের শহরের নামে বিভাগ পেতে নোয়াখালীর বাসিন্দারাও ব্যাপক চেষ্টা-তদবির করেছেন। বিশেষ করে কুমিল্লার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোরালো দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২১ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে নদীর নামে বিভাগের নামকরণ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেছিলেন। স্থানীয় নেতারা একাধিকবার কুমিল্লা নামে বিভাগ দাবি করলেও সরকারপ্রধান সেটা নাকচ করে দেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কুমিল্লার নামের সঙ্গে খন্দকার মোশতাকের নাম জড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, বিভাগের ব্যাপারে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দুটি বিভাগ বানাব আমাদের দুটি নদীর নামে। একটি পদ্মা, একটি মেঘনা। ওই সময় যুক্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ফরিদপুর বিভাগ করব, কিন্তু ‘ফরিদপুর’ নাম দিচ্ছি না, সেটার নাম হবে পদ্মা। কারণ, ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’- এই স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। নাম ভিন্ন হলেও মেঘনা বিভাগের প্রশাসনিক সদর দপ্তর হবে কুমিল্লা ও পদ্মা বিভাগের প্রশাসনিক সদর দপ্তর হবে ফরিদপুর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়