মোজাম্মেল-প্রণয় সাক্ষাৎ : কলকাতার থিয়েটার রোডের সেই বাড়িটি চেয়েছে বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

কাদের সঙ্গে ডায়লগ করব? মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

পরের সংবাদ

‘শুধু টাকা মানুষকে শান্তি দিতে পারে না’

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গতকাল মুক্তি পেয়েছে রঞ্জন ঘোষের নতুন ছবি ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। ভারতীয় গণমাধ্যমের মুখোমুখি তিনি। মেলার পাঠকদের জন্য থাকল সে সাক্ষাৎকারের চুম্বকাংশ

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে এটা আপনার কত নম্বর ছবি?
শাশ্বত : ‘পার্সেল’, আর সৃজিতের (সৃজিত মুখোপাধ্যায়) একটা ছবিতে কাজ করেছিলাম। এটা নিয়ে মনে হয় তিন নম্বর ছবি।

আপনাদের দু’জনেরই এত বছরের ক্যারিয়ার, মাত্র তিনটা ছবি!
শাশ্বত : না, এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনো দোষ নেই। প্রযোজক-পরিচালকরা আমাদের নিয়ে ভাবেইনি, কী আর করব!

পরিচালক রঞ্জন ঘোষ বহুদিন ধরে এই ছবিটিকে লালন করেছেন, সেই প্রভাব কি পর্দায় বোঝা যাবে?
শাশ্বত : হ্যাঁ, অবশ্যই বোঝা যাবে। শুধু ঋতু (ঋতুপর্ণা), আমি, পরমব্রত (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) নয়। একঝাঁক নতুন প্রজন্মের অভিনেতাকে দেখবেন দর্শক। প্রতিটি চরিত্রকে গুছিয়ে এঁকেছেন রঞ্জন।

বর্তমান প্রজন্মের অভিনেতারা আপনাদের প্রজন্ম থেকে কোন দিকে এগিয়ে বা পিছিয়ে বলে মনে হয় আপনার?
শাশ্বত : একটি বিষয় নিয়ে ভাবা। তারপর সেই বিষয় নিয়ে কাজ করা। চর্চার জন্য আমরা অনেকটা সময় পেতাম। আজকাল তো সব রেডিমেড হয়ে গেছে। কারো হাতে কোনো সময় নেই। নতুন করে কিছু শেখা কিংবা ভুল হলে তা শুধরে নিয়ে আবার কাজ করা- সেই সময়টাই এদের হাতে অনেকটা কমে গেছে। তাই বর্তমান প্রজন্মকে টিকে থাকতে গেলে আমাদের থেকে অনেক বেশি প্রতিভাবান হতে হবে। শেখার জায়গা কমে গেছে। সময়ও নেই। কেন নেই? সেটা আমারও প্রশ্ন।

শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের হাতে সময় আছে?
শাশ্বত : হ্যাঁ, আমার হাতে অঢেল সময় আছে। আমি তো প্রচুর ছবি করি না, বেড়াতে যাব বলে। নিজের জন্য সময় থাকা জরুরি।

তাই কি আজকাল আপনাকে একটু বেশি ফেসবুকে দেখা যায়? জনসংযোগটা জরুরি তাই না?
শাশ্বত : রিল, ভিডিও- এসব তো করি না। হ্যাঁ, এক প্রকার বাধ্য হয়েই ফেসবুকে আজকাল ছবি পোস্ট করি। কারণ আমার নামে এত ভুয়া প্রোফাইল তৈরি হয়েছে। তার ফলে বেশ সমস্যা হচ্ছিল। সেই সমস্যা থেকে বাঁচতেই
এই পন্থা।

তাহলে নতুন কাজ পাওয়ার ফিকির নয় বলছেন?
শাশ্বত : আমি কাজ কেমন করছি, তা যারা জানার ঠিক জেনে যান। ওটার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া লাগে না। কাজ খারাপ করলে শত জনপ্রিয়তা থাকলেও কিছু হবে না। এখন মনে হয়, অনুরাগীর সংখ্যার নিরিখে কাজ পাওয়া যায়। আমার ভাগ্য ভালো অনেক আগে আমি এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে ঢুকে গেছি। তখন এ সবের চল ছিল না।

এই সময়ে কাজ শুরু করলে কি তাহলে বেশি চাপ হতো?
শাশ্বত : হ্যাঁ, এখন তো ইনস্ট্যান্ট নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে হয়, যা করা সম্ভব নয়। এটাই তো হচ্ছে। এই যে ধারাবাহিকে যারা অভিনয় করতে আসছে, একটা মেগাতে অভিনয় করতে না করতেই হোর্ডিংয়ে মুখ দেখা যায়। সিরিয়াল শেষের পর এদের আর কাউকে তেমনভাবে দেখা যায় না। এটা খুব একটা ভালো লক্ষণ নয়।
কারণ একটা ধারাবাহিক যদি প্রায় আড়াই বছর চলে, তত দিনে এক রকম টাকা পেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন সেই নির্দিষ্ট অভিনেতা।
এরপর যে মুহূর্তে কাজটা চলে যায়, তখন সে কী করবে? কত আত্মহত্যা বেড়ে গেছে বলুন তো! ডিপ্রেশন বেড়ে গেছে।
আপনার কখনো ‘ডিপ্রেশন’ এসেছে?
শাশ্বত : হ্যাঁ, কোভিডে এসেছিল। কাজ না করে কীভাবে কাটাব সময়? কত বই পড়ব, কত সিনেমা দেখব? কয়েদখানার মতো লাগছিল। আপনারা বুঝবেন না, কারণ আপনাদের কাজ তো চলছিল। অনেক ধারাবাহিকে দেখতাম বাড়ি থেকে শুটিং হচ্ছে। কী ভয়ংকর ব্যাপার। খুব বাজে লাগত দেখতে। পয়সা থাক বা না থাক, হাতে কাজ থাকাটা খুব জরুরি। বেঁচে গিয়েছিলাম, প্রথম লকডাউন শেষ হওয়ার পরই লন্ডনে শুটিং করতে চলে যেতে পেরেছিলাম।

এই কয়েক বছরে কী মনে হলো, টিকে থাকার জন্য কোনটা জরুরি?
শাশ্বত : সৃজনশীল সন্তুষ্টি থাকা সবচেয়ে জরুরি। মানুষ ভালো বললে কাজ করার ইচ্ছা দ্বিগুণ হয়ে যায়। সেটাই জরুরি। শুধু টাকা মানুষকে শান্তি দিতে পারে না।

আপনি ‘ওটিটি’ প্ল্যাটফর্মে কি কিছুটা পিছিয়ে পড়ছেন?
শাশ্বত : সব ছবিই তো এখন ‘ওটিটি’-তে চলে আসছে। তা হলে আর কোথায় পিছিয়ে পড়লাম। ভালো কাজ না হলে, করে কী লাভ আপনি বলুন! তবুও করছি তো! প্রথম করেছিলাম ‘ধীমানের দিনকাল’। তারপর ‘হইচই’ প্ল্যাটফর্মের জন্য একটা কাজ করলাম। আর একটি প্রকাশ পাবে ‘জি ফাইভে’। নারায়ণ সান্যালের ‘কাঁটা সিরিজ’, পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। হিন্দিতে ‘ডিজনি হটস্টার’-এ একটা বিশাল সিরিজ তৈরি হচ্ছে। সেখানে অনিল কাপুর, আদিত্য রায় কাপুরসহ অনেকে অভিনয় করছেন। প্রায় ২৫ দিন শ্রীলঙ্কায় শুটিং করে এলাম। না ‘ওটিটি’-তেও চুটিয়ে কাজ করছি।

কলকাতার অভিনেতারা ইদানীং কি একটু বেশিই মুম্বাইমুখী?
শাশ্বত : কলকাতায় যদি ভালো কাজের সুযোগ না আসে, তা হলে তো শহরের বাইরে লোকে সুযোগ খুঁজবেই। আর যদি তা করতে সক্ষম হই, তা হলে আমি কেন করব না। যেখানে ভালো কাজ হবে, সেখানেই আমি যাব। আমি এক জায়গায় আটকে থাকব কেন? যত বেশি আমার কাজ দেখবেন দর্শক, তত বেশি আমার লাভ।

‘শবর’ আপনার সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি। বাংলা সিনেমায় এত ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে নিজের কাজ নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
শাশ্বত : আমি বেশ সন্তুষ্ট। কারণ ‘শবর’ এখন পর্যন্ত এমন একটা ব্র্যান্ড, যা ঘেঁটে যায়নি। অনেকে মিলে শবর করেনি। শুধু আমি করেছি। সেটা আমার একদমই ব্যক্তিগত।

:: মেলা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়