এইচএসসির বিতর্কিত প্রশ্ন, প্রণেতারা শাস্তি পেলেন : আর কোনো পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব নয়

আগের সংবাদ

স্বাচিপের পঞ্চম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : চাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা

পরের সংবাদ

সিআইডি প্রধান : রিজার্ভ চুরি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন শিগগিরই

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রিজার্ভ চুরির সঙ্গে যে তিন-চারটি দেশের সংযোগ রয়েছে, সেসব দেশের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তথ্য আসলেই শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গেটওয়ে ‘বিনিময়’ অ্যাপ ব্যবহার করে প্রায় ৯৭ লাখ টাকা লোপাটের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়।
টাকা লোপাটের বিষয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠিত গেটওয়ে ‘বিনিময়’ প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল প্রতারণা করে একটি চক্র প্রায় ৯৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সাত দিন ধরে প্রতারণা করে চক্রটি এই টাকা আত্মসাৎ করেছে। গত বুধবার বগুড়ায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এছাড়া চক্রের আরো তিনজন সিআইডির নজরদারিতে রয়েছে।
মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, স¤প্রতি উদ্বোধন করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠিত ‘বিনিময়’ প্ল্যাটফর্মে গত ১০ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৯৬ লাখ ৭৪ হাজার ২৫৭ টাকা ডিজিটাল প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে। চক্রটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সেলফিন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ‘বিনিময়’ প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে। পরে তাদের নিজেদের বিকাশের ব্যক্তিগত একাউন্টে অবৈধভাবে টাকা ট্রান্সফার করার জন্য অনুরোধ পাঠায়। এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে গ্রাহকদের টাকা প্রতারকদের বিকাশে ট্রান্সফার করা হয়।
যেভাবে কাজ করে ‘বিনিময়’ : বিনিময় অ্যাপটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অর্থাৎ বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবধারীদের সঙ্গে ব্যাংক হিসাবধারীদের সংযোগ স্থাপন করে দেয়। যদি কেউ তার কোনো ব্যাংক হিসাব থেকে বিকাশ হিসাব নম্বরে টাকা স্থানান্তর করতে চান, সেক্ষেত্রে বিনিময়ের মাধ্যমে তা স্থানান্তর করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ ব্যাংকের অনলাইন একাউন্টধারীরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা স্থানান্তর করতে পারেন।
প্রতারকদের গ্রেপ্তারের অভিযানে অংশ নেয়া সিআইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা গোয়েন্দা তথ্য থেকে ওই টাকা লোপাটের তথ্য জানতে পারেন। চক্রটি একটি বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাপ ব্যবহার করে। ওই ব্যাংকটিতে তাদের হিসাব নম্বর আগে থেকে ছিল। ব্যাংকটির অনলাইনে লেনদেনের অ্যাপে ঢুকে তারা ‘বিনিময়’ গেটওয়ে অপশনে যায়। কোথায় টাকা পাঠাবেন সেখানে সেই অপশন থাকে। চক্রটি এমএফএস সার্ভিস বিকাশ অপশনে ক্লিক করে যেখানে টাকা পাঠাবেন সেই নম্বর দেয়।
এরপর একে একে টাকা পাঠাতে থাকে। সিস্টেম অনুযায়ী বিনিময় অ্যাপ বেসরকারি ব্যাংকটির টাকা পাঠানোর ম্যাসেজ গ্রহণ করে বিকাশ কর্তৃপক্ষকে তার হিসাবধারীর নম্বরে টাকা দিয়ে দেয়ার ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দেয়। এই ক্লিয়ারেন্স পেয়ে বিকাশ কর্তৃপক্ষ তাদের হিসাবধারীর নম্বরে পাঠিয়ে দেয়। এখানে চক্রের এক সদস্য দুটি মোবাইলফোন ব্যবহার করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। এক মোবাইল থেকে ব্যাংকের অ্যাপে গিয়ে বিনিময় গেটওয়ে হয়ে টাকা পাঠিয়েছেন। এদিকে গেটওয়ে থেকে ‘টাকা পাঠানো সম্ভব হয়নি’ বলে ব্যবহারকারীর কাছে একটি ম্যাসেজ ফেরত আসে। অপরদিকে গেটওয়ে থেকে বিকাশ কর্তৃপক্ষকে তার ব্যবহারকারীকে টাকা দিয়ে দেয়ার জন্য ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়েছে। এতে বিকাশ কর্তৃপক্ষ মোট ৭ জন হিসাবধারীর মোবাইলে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। এভাবে লোপাট হওয়া প্রায় ৯৭ লাখ টাকাই বিকাশ কর্তৃপক্ষের।
তদন্তসংশ্লিষ্টদের ধারণা, বিনিময় সার্ভারের কেউ না কেউ ১০ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত তাদের সিস্টেম লসের তথ্যটি প্রতারক চক্রের কাছে পাচার করেছে। এতে চক্রটি একের পর এক টাকা পাঠানোর কমান্ড করেছে। সঙ্গে সঙ্গে চক্রের সদস্যরা টাকাগুলো ক্যাশ করে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়