এইচএসসির বিতর্কিত প্রশ্ন, প্রণেতারা শাস্তি পেলেন : আর কোনো পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব নয়

আগের সংবাদ

স্বাচিপের পঞ্চম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : চাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা

পরের সংবাদ

ডা. হালিদা হানুম আখতার, গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ : নারীর ৩ প্রতিবন্ধকতা বাল্যবিয়ে অনাকাক্সিক্ষত গর্ভধারণ, নির্যাতন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশিষ্ট গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতার ভোরের কাগজকে বলেন, জন্মের পর থেকেই একটি মেয়েকে বৈষম্যের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠতে হয়। খাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে তাকে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। নারীর পুরো জীবনটাই একটা যুদ্ধ। প্রতিনিয়তই যুদ্ধ করে তাকে সামনের দিকে এগুতে হয়। আমরা নারীর বিভিন্ন নির্যাতনের কথা বলি। কিন্তু নারীর দেহই তো নারীর নয়। নারীদের বিয়ের বয়স নারীর অগ্রগতিতে বড় প্রতিবন্ধকতা।

বাল্যবিয়ে নারীর পরিপূর্ণতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং তাতে নারীর ক্ষমতায়নও ব্যাহত হয়। মতের বিরুদ্ধে অল্প বয়সেই মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছে পরিবার। পরিবারের সিদ্ধান্তেই গর্ভ ধারণ করতে হচ্ছে। সন্তান জন্ম দিয়ে মেয়েটিকে প্রমাণ করতে হয় সে সন্তান জন্মদানে সক্ষম। আর এই কাজটা করতে গিয়ে মেয়েটির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।
দীর্ঘসময় ধরে নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা ডা. হালিদা হানুম বলেন, বাল্য বিয়ে এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণ রোধ করা গেলে মাতৃমৃত্যু আরো কমবে। পরিসংখ্যান বলছে, ১৮ বছরের আগেই প্রায় ৬০ শতাংশ কিশোরীর বিয়ে হয়ে যায়। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ কিশোরী মা হয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক নারীর গর্ভধারণের তুলনায় কিশোরী বয়সে গর্ভধারণ করলে মাতৃমৃত্যুর আশঙ্কা দ্বিগুণের বেশি। ১৫ বছরের আগে গর্ভধারণ করলে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি ৫ গুণ বেশি। এর মানে আমরা এই মেয়েদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি। বাবা-মার সমস্যার কারণে, সামাজিক সমস্যার কারণে, নিরাপত্তা দিতে না পারার আশঙ্কা থেকে মেয়েকেই ভিকটিম করা হচ্ছে। তাকেই হাঁড়িকাঠে তোলা হচ্ছে। বিয়ের পরও যে মেয়েটি ভালো থাকছে তা তো নয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যানই বলছে, বিয়ের পর স্বামীর দ্বারাই মেয়েরা নির্যাতনের শিকার হয় বেশি। এ হার ৭০ শতাংশের বেশি।
তিনি আরো বলেন, আমরা এখনো জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে পারি না। আমাদের মন-মানসিকতার বিস্তৃতি ঘটাতে হবে। পরিবারগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যাতে ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে না দেয়। বিয়ে দিলেও যাতে বলা হয়, ১৮ বছরের আগে গর্ভধারণ করা যাবে না। পরিবার পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণের কাজটি আমরা করতে পারছি না। নির্যাতনটা যেন নারী সহ্য করে নেয়। নির্যাতনের শিকার হলেও নারী এ নিয়ে মুখ খুলতে চায় না। কারণ সে কোথায় যাবে? এসব নির্যাতিত নারীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা তো নেই। এই ব্যবস্থা না থাকলে নির্যাতনের শিকার নারীরা সেবা নিতেও আগ্রহী হবে না। সেবা যা আছে তা আংশিক। সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের যারা আছেন, তাদেরই এই সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে চালকের ভূমিকা নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়