রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

নৌকায় ভোট দেবেন, ওয়াদা চাই : যশোরের জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা, বিএনপির কাজই গুজব ছড়ানো, রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই

পরের সংবাদ

ব্রাজিলের চেনা প্রতিপক্ষ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এশিয়ার দলগুলো লড়াই করার মানসিকতা নিয়ে যেভাবে বিশ্বের সেরা দলগুলোকে হারিয়ে দিচ্ছে তা অত্যন্ত আনন্দের এশিয়াবাসীর জন্য। পরশু সৌদি আরব আর্জেন্টিনাকে হারনোর পর গতকাল বিশ্ব ফুটবলের পাওয়ার হাউজ জার্মানিকে জাপান যেভাবে পরাজিত করল তাতে বিশ্বকাপকে অনেকটা জমিয়ে তুলল এবং আর্জেন্টিনার মতো জার্মানিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিল। সৌদি আরবের পর জাপানকে বলতে হয় আরো এগিয়ে যাও। সবাই তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে যে দলটার ২য় হওয়াটা ব্যর্থতা বলে বিবেচিত হয়, যাদের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে ফুটবল, যাদের ধ্যান জ্ঞান ফুটবল, সর্বোপরি উৎসব সেই দলটার নামই হলো ব্রাজিল। বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা এবং ট্রফিতে চুমু খাওয়াটাই হলো ব্রাজিলের স্বার্থকতা। বিশ্বকাপ মানেই ফেবারিট ব্রাজিল। সকলের আগে যেই নামটি উচ্চারিত হয় চ্যাম্পিয়নের তালিকায় তারা গত দুই দশক ধরে চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জনে সমর্থ হচ্ছে না। এটা সারাবিশ্বের ব্রাজিল সমর্থকদের জন্য অত্যন্ত বেদনার। তাই এবার তারা কোচ তিতের নেতৃত্বে একটা শক্তিশালী স্কোয়াড নিয়ে সাম্বার তালে তালে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করার প্রতিক্ষায় সার্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলার মধ্য দিয়ে। আমাদের দেশেরও কোটি কোটি সমর্থকরাও অধীর অপেক্ষায় রয়েছে তাদের প্রিয় দলের খেলা দেখার জন্য। দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে প্রিয় দলের পতাকার আদলে ঘর তৈরি করে হলুদ রংয়ের জার্সি গায়ে তাদের প্রিয় দলের প্রতি ভালোবাসার জানান দিচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার পরাজয়ে অনেকে আনন্দ প্রকাশ করেছে।
যেই ব্রাজিলকে এবার তার সমর্থকরা আশার আলো দেখছেন তারা সত্যিই একটা শক্তিশালী স্কোয়াড নিয়ে কাতারে এসেছে ট্রফির আশায়। গোলবারে অ্যালিসন কিংবা এডারসন, রক্ষণে মার্কিনিয়োস, মিলিতাও, থিয়াগো সিলভা, দানিলো, সান্দ্রো, মধ্যমাঠে ফ্রেড বা পাকেতা, ক্যাসেমিরো, রিচার্লিসন, রাফিনহো, জেসুস, নেইমার, ভিনিসিয়াস, পেদ্রোর মতো একটি শক্তিশালী স্কোয়াড নিয়ে কোচ তিতে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারে আর সমর্থকরাতো আশায় বুক বাধতেই পারে। এই দলটা যে কোনো দলকে যে কোনো সময় কাবু করার ক্ষমতা রাখে।
সার্বিয়া হচ্ছে ব্রাজিলের চেনা প্রতিপক্ষ। গত বিশ্বকাপেও তারা ছিল একই গ্রুপে। বাছাইপর্বে ৮ ম্যাচে ৬টিতে জয় দুটি ড্র নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে এসেছে। কোচ দ্রাগন স্তয়কোভিচ বিশ্বের সেরা দলটাকে কিভাবে মোকাবিলা করে কতক্ষণ ঠেকিয়ে রাখতে পারে সেটাই দেখার বিষয় যা অনেকটা অসম্ভব হবে বলে মনে হয়। আর ব্রাজিলের জয়টা হবে সময়ের ব্যাপার।
কাতার বিশ্বকাপে আজ দিনের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে ক্যামেরুন। কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ শুরুর পূর্বে প্রস্তুতি হিসেবে এই দুই দল যেসব দেশের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছে তাদের বিচারে সুইজারল্যান্ডের প্রস্তুতিই ভালো ছিল। সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপের আগে তাদের সর্বশেষ ৩টি ম্যাচের মধ্যে দুইটিতে জয়লাভ করেছে পর্তুগাল ও স্পেনের বিপক্ষে। তাদের এত ভালো ফর্মের পেছনে একটি বিশাল বড় কারণ হলেন তাদের গোলকিপার ইয়ান সমার। ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে পেছনে ফেলে বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কাতার বিশ্বকাপে নাম লিখিয়েছে সুইজারল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আফ্রিকান নেশনস কাপে তৃতীয় হওয়া ক্যামেরুন। ক্যামেরুন আফ্রিকার দেশগুলোর বিপক্ষে ভালো পারফর্ম করলেও এর বাইরে যে দলের সঙ্গে খেলেছে সেখানে তাদের পারফর্মেন্স খুবই খারাপ। বিশ্বকাপ তো বটেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হতে চলেছে ক্যামেরুন ও সুইজারল্যান্ড। এই ম্যাচটিতে জেতার জন্য সুইজারল্যান্ডই ফেভারিট। তবে, কোনো কারণে যদি তারা সেদিন খুব বাজে পারফর্মও করে, তারপরও ম্যাচটি ড্র হবে বলে আমার মনে হয়।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ উরুগুয়ের মুখোমুখি হবে দক্ষিণ কোরিয়া। কাতার বিশ্বকাপের আসরে এই প্রথম ম্যাচটি খেলতে নামার আগে উভয় দলই বেশ আত্মবিশ্বাসীই থাকবে। সব মিলিয়ে এটি একটি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ হতে চলেছে। সবার নজর থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার অধিনায়ক সন হিউং মিন এবং উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ এর উপর। সর্বশেষ ৬টি ম্যাচের মধ্যে ৩টি জিতেছে উরুগুয়ে। অন্যদিকে কাতার বিশ্বকাপের আগে দক্ষিণ কোরিয়া টানা ৫টি ম্যাচে অপিরাজিত। এই রেকর্ডটি তাদের প্রচুর সাহস ও আত্মবিশ্বাস জোগাবে। ম্যাচটি যে কোনো দিকেই যেতে পারে। কারণ উভয় দলের কাছেই বেশ কিছু শক্তিশালী হাতিয়ার রয়েছে। শেষ পর্যন্ত যে দল অধিকতর শ্রেয় ফিনিশিং দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবে তারাই বিজয়ী হবে। এখন পর্যন্ত আট বার মুখোমুখি হয়েছে উরুগুয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া। এর মধ্যে ছয়টিতে জিতেছে উরুগুয়ে। ড্র হয়েছে এক ম্যাচ। ২০১৮ সালে দুই দলের সবশেষ দেখায় উরুগুয়ের বিপক্ষে নিজেদের একমাত্র জয় পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
দিনের তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে পর্তুগাল। তাদর প্রতিপক্ষ আফ্রিকার দেশ ঘানা। পর্তুগাল তাদের খেলা সর্বশেষ ৬টি ম্যাচের মধ্যে ৩টিতেই জয়লাভ করেছে তাও আবার বড় বড় ব্যবধানে। বিশ্বকাপের মঞ্চে আত্মবিশ্বাসী তারা। কারণ তাদের কাছে রয়েছে ফিনিশিং এ পাকাপোক্ত স্ট্রাইকার। দলীয় অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো খেলছেন টানা পঞ্চম বিশ্বকাপ। এছাড়া গোল তৈরি করার জন্য বুদ্ধিদীপ্ত মিডফিল্ডার এবং দূর থেকে শট মেরে গোল করার মতোও বেশ কিছু খেলোয়াড় রয়েছে তাদের দলে। অন্যদিকে ঘানা এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী আফ্রিকা থেকে আগত সবচেয়ে দূর্বল দল। তবে তাদের দলে বেশ কিছু নতুন যুবা খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তারা যদি নিজেদের প্রতিভার সঙ্গে সুবিচার করতে পারে। পর্তুগাল এই ম্যাচটিতে একচ্ছত্রভাবে এগিয়ে। বিশ্বকাপে এর আগে একবারই মুখোমুখি হয়েছে পর্তুগাল ও ঘানা। ২০১৪ সালে রোনালদোর গোল ও জন বোয়ির আত্মঘাতী গোলে ২-১ ব্যবধানে জেতে পর্তুগাল। এবারো তারা একটি বড়সড় জয় দিয়েই নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে চাইবে। এমনটিই হবে বলে আমি মনে করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়