রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

নৌকায় ভোট দেবেন, ওয়াদা চাই : যশোরের জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা, বিএনপির কাজই গুজব ছড়ানো, রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই

পরের সংবাদ

নারী নির্যাতন : বাধ্যতামূলক অবসরে উপসচিব রেজাউল

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নারী নির্যাতন মামলার কারণে গুরুদণ্ড হিসেবে উপসচিব এ কে এম রেজাউল করিম রতনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। সবশেষ তিনি জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সই করা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়। গত মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপনে সই হলেও গতকাল বুধবার তা প্রকাশ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ কে এম রেজাউল করিম জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক (উপসচিব) হিসেবে কর্মরত থাকার সময় তার বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ (১) ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। এছাড়া মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় আরেকটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। প্রজ্ঞাপণে বলা হয়, এ কে এম রেজাউল করিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনে থাকায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮-এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলায় অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করা হয়। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তারা গত ২৯ জুন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এতে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন প্রস্তাবিত দণ্ডের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করায় একই বিধিমালার ৪ (৩) (খ) বিধিমতে গুরুদণ্ড হিসেবে সরকারি চাকরি থেকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর দিতে রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।’
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, রেজাউল করিম গ্রন্থকেন্দ্র থেকে ২০১৯ সালে সাময়িক বরখাস্ত হন। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা হয়েছিল। সাময়িক বরখাস্ত থাকার সময়টিকে বিশেষ ছুটি হিসেবে বিবেচনা করেছে সরকার। এরপর ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে রেজাউলকে গ্রেপ্তার করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, রেজাউল করিম রতন ২০১৭ সালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে উপসচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই ছাত্রী। উল্লেখ্য, ঘটনার সময় রেজাউল করিম রতন শিক্ষা ক্যাডারে থাকার সময় মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। পরে তিনি ক্যাডার পরিবর্তন করে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে যোগ দেন। এরপর তিনি উপসচিব হয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা গতকাল বুধবার সকালে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে দীর্ঘদিন পর কড়া একটি পদক্ষেপ আসল। এটা নিঃসন্দেহে ভালো সিদ্ধান্ত। প্রশাসন চালাতে গেলে এভাবেই পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে প্রশাসন ঠিক থাকবে না। জনপ্রশাসনের আরেক কর্মকর্তা বলেন, এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু যে ‘অসদাচরণের’ কারণে রেজাউল করিম রতনের চাকরি গেলে তার চেয়েও বেশি অপরাধ করে কেউ কেউ কম শাস্তি পেয়ে পার পেয়ে গেছেন। এমন শাস্তির নজির যেন সবার জন্য সমান হয় তা নিশ্চিত করা উচিত। তিনি বলেন, মুখ দেখে বা ক্ষমতা দেখে শাস্তি কাম্য নয়। এমন ঘটনায় সবারই যাতে রেজাউলের মতো শাস্তির সম্মুখীন হতে হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এটাই জনপ্রশাসনের কাজ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়