রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

নৌকায় ভোট দেবেন, ওয়াদা চাই : যশোরের জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা, বিএনপির কাজই গুজব ছড়ানো, রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই

পরের সংবাদ

দেশীয় টিভি চ্যানেলের জিম্মি দশা কাটাতে হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও তার আদান-প্রদান আধুনিক গণতন্ত্রের মূল শর্ত। যা জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নব্বইয়ের দশকে সরকারি টিভি চ্যানেল বিটিভির পাশাপাশি বেসরকারি টিভি একুশকে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের সুযোগ পায়। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তৎকালীন সময়ে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলোর জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। এরই ধারাবাহিকতায় বেসরকারি উদ্যোগে আরো কিছু নতুন টিভি চ্যানেল জনগণের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার মতো মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কার্যক্রম শুরু করে। ফলে বেসরকারি পর্যায়ে এদেশে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ব্যাপক প্রসার ঘটে। অবাধ তথ্য প্রকাশ ও সম্প্রচারে এসব ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এদেশের গুরুত্ব এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এসব টিভি চ্যানেল দেশের কল্যাণকামী মানুষের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে জনগণের নানাবিধ চাহিদা পূরণ তথা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও তথ্য প্রদানের মাধ্যমে দেশ, জনগণ ও রাষ্ট্রের মধ্যে একটি শক্তিশালীবন্ধন রচনা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। পক্ষান্তরে দেশে টিভি চ্যানেলগুলো তথ্যসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারি ও হাতেগোনা কিছু বেসরকারি টিভি চ্যানেল ছাড়া প্রায় সব ক’টি টিভি চ্যানেল ক্যাবল অপারেটরদের অনৈতিক অর্থ উপার্জনের কারণে অনুষ্ঠান সম্প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। যা অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও দেশীয় সংস্কৃতি বিকাশে অন্তরায় বলে অনেকে মনে করেন। এর ফলে একদিকে উদ্যোক্তারা হচ্ছে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, অন্যদিকে জনগণ হচ্ছে দেশীয় তথ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
যদিও এ দেশের ক্যাবল অপারেটরদের উচিত ছিল দেশীয় সব চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মাধ্যমে দেশীয় তথ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং এ দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নে সহযোগিতার হাত সম্প্রসারণ করা। তা না করে অনৈতিক মুনাফা লাভের আশায় এবং সঠিক নীতিমালা না থাকায় ক্যাবল অপারেটররা তাদের ইচ্ছামতো দেশীয় চ্যানেল বাদ দিয়ে বিদেশি চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতেই বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে, যা কাম্য নয়।
নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোকে আরো অধিক দায়িত্বশীল হতে হবে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করে ক্যাবল অপারেটরদের মাধ্যমে দেশীয় চ্যানেলগুলো প্রচার ও প্রসার বাড়াতে পারলে কিছুটা হলেও বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর আগ্রাসন থেকে জাতিকে রক্ষা করা যাবে।
এ ক্ষেত্রে টিভি চ্যানেল উদ্যোক্তাদের দেশীয় দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী ভালো ভালো অনুষ্ঠান তৈরি করতে উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে হবে। দেশের সব ক্যাবল অপারেটরকে নির্দিষ্ট নিয়মে পরিচালনার জন্য এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর অধিক প্রচার ও প্রসারে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা গ্রহণ জরুরি মনে করি। যদিও বর্তমান সরকার দেশে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই অতিদ্রুত এর সফল বাস্তবায়ন। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য চূড়ান্ত নীতিমালা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে টিভি মিডিয়ার কর্তৃপক্ষ, সরকার, ক্যাবল অপারেটর তথা সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতা কাম্য।

মো. আতিকুর রহমান : লেখক ও সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা, বিইউএফটি।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়