রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

নৌকায় ভোট দেবেন, ওয়াদা চাই : যশোরের জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা, বিএনপির কাজই গুজব ছড়ানো, রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই

পরের সংবাদ

ছাতকে আমনের ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শংকর দত্ত, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে : চলতি মৌসুমে ছাতকে আমনের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরূপ ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আমন চাষিরা। এছাড়া কিছু এলাকায় শ্রমিক সংকট থাকায় ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে জমিতে পাকা ধান ঝরে পড়ায় চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সরজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ফসলের মাঠে আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। দিগন্তজোড়া মাঠের সোনালি ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ কেউ কাটা ধান আঁটি বেঁধে মাথায় করে, কেউবা পরিবহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। গত ১ সপ্তাহ ধরে ধান কাটা চলছে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ছাতক উপজেলায় ১২ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এ মৌসুমে আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের সহায়তায় (ভর্তুকি) উপজেলার ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমন মৌসুমে প্রায় ৪ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও রাসায়নিক সারসহ পরামর্শ দেয়া হয়।
গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের তকিপুর গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম, কালারুকা ইউনিয়নের রায়সন্তোষপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন জানান, নিয়মিত পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগের ফলে ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় জমি থেকে ধান কাটতে সময় বেশি লাগছে। ধান কাটার ব্যয়ও বেড়েছে। যারা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে পারছেন, তারা স্বল্প সময়ে ও কম খরচে ধান ঘরে তুলতে পারছেন। তারা আরো জানান, গত দুই বছরে প্রাকৃতিক সমস্যায় ফলন ভালো হয়নি। বরং কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। তবে এবার এ রকম কোনো আশঙ্কা নেই। উপজেলার জাওয়া ইউনিয়নের কৃষক অজিত দাস, উত্তর খুরমা ইউনিয়নের আমেরতল গ্রামের শিপলু আহমেদ বলেন, গত মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে আমনের ফলন ভালো হয়নি। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া, পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই কম হওয়ায় অধিক ফলন হয়েছে। যদি ধানের ভালো দাম পাওয়া যায়, খরচ পুষিয়ে লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, সরকার যদি উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি করে এবং ভর্তুকি মূল্যে আরো বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রদান করে চাষাবাদে কৃষকের খরচ কমে যাবে। এতে করে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। চাষিরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চাষাবাদ করায় এ বছর আমনের ফলন ভালো হয়েছে।
ছাতক উপজেলা কৃষি অফিসার তৌফিক হোসেন বলেন, উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন, ১ পৌরসভায় ৪০টি পদের বিপরীতে ২৭ জন ও প্রতিটি ইউনিয়ন পৌরসভায় নিযুক্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা স্থানীয় কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ ও নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকেন। চলতি আমন মৌসুমে সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে উপজেলায় কৃষকদের ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার বরাদ্দ দিয়েছে।
পূর্বে বিভিন্ন সময়ে আরো ২০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার দেয়া হয়েছিল। কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে স্বল্প খরচে ধান কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই এবং প্যাকেটিং করে মাঠ থেকে ধান আনা সহজ হবে। পর্যায়ক্রমে কৃষকরা যান্ত্রিক নির্ভরশীল হলে, শ্রমিক সংকট কেটে যাবে এবং ফসল উৎপাদন বাড়বে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়