রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

নৌকায় ভোট দেবেন, ওয়াদা চাই : যশোরের জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা, বিএনপির কাজই গুজব ছড়ানো, রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই

পরের সংবাদ

আর্থিক সংকটে বন্ধ মোতালেব হাইস্কুল : বেগমগঞ্জ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী থেকে : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি এম এ মোতালেব হাইস্কুল। ফলে আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলটি। স্কুলটি বন্ধ থাকায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের তালুয়া চাঁদপুর গ্রামে নিজের নামে এম এ মোতালেব হাইস্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন শিল্পপতি এম এ মোতালেব। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্কুলটি ভালোমতোই চলছিল। শিক্ষা দপ্তর থেকে দেয়া হয় একাডেমিক স্বীকৃতিও।
পরবর্তীতে জেলা পরিষদ থেকে নির্মাণ করে দেয়া হয় স্কুল ভবন। প্রতিদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল স্কুল ক্যাম্পাস। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠাতা এম এ মোতালেব মারা যাওয়ার পর অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে স্কুলটি। করোনাকালে শিক্ষকদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়লে শিক্ষকরা অন্যত্র চলে যান। এক পর্যায়ে আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলটি। বর্তমানে এলাকাবাসী স্কুলটি চালু করার জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নিলেও সফল হচ্ছে না। স্কুলটি বন্ধ থাকায় প্রাইমারি পাস করে শিক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তে দূর-দূরান্তের স্কুলগুলোতে যেতে হচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। তাই এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে দ্রুত স্কুলটি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় একাধিক অভিভাবক বলেন, আমাদের তালুয়া চাঁদপুর থেকে ছাত্রছাত্রীরা অনেক দূরে মীরকাশেম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বজরা হাইস্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এতে তাদের সময়, খরচ দুটিই বেশি ব্যয় হয়। তাছাড়া মেয়ে শিক্ষার্থীরা যানবাহনের অভাবে স্কুলে যেতে পারে না। স্কুলটি চালু হলে নিজেদের এলাকায় অনেকটা স্বাচ্ছান্দ্যে তারা পড়ালেখা করতে পারবে।
এলাকার একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা আগে এম এ মোতালেব স্কুলে পড়তাম। এখন স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দূরের স্কুলে গিয়ে পড়তে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তায় কাদা জমে যায়। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় স্কুলে যেতে পারি না। মেয়েদের ক্ষেত্রেও আরো বেশি সমস্যায় পড়তে হয়।
বজরা হাই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়া শিক্ষার্থী মরিয়ম জানায়, স্কুলে যাওয়ার সময় গ্রামের রাস্তায় প্রায়ই গাড়ি পায় না। অনেক পথ হেঁটে যেতে হয়। একা একা যেতে ভয় লাগে। তাদের বাড়ির সামনের স্কুলটি চালু হলে সহজেই তারা পড়ালেখা করতে পারবে।
মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ মনু জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আমরা শুনে আসছি বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। তাই আমরা চাই সরকার দ্রুত এই স্কুলটি চালুর উদ্যোগ নেবে। এতে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি আত্মসামাজিক উন্নয়ন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা এম এ মোতালেবের স্ত্রী এডভোকেট শাহানারা বেগম বলেন, ২০১৫ আমার স্বামী মারা যায়। এরপর আমার ছেলে মারা যায়। পারিবারিক সমস্যার কারণে আমার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির দিকে ঠিকমতো নজর দেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা স্কুলটি চালু করতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
বেগমগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গাউছুল আজম বলেন, স্কুলটির একাডেমিক স্বীকৃতি আছে। স্কুলটি চালুর জন্য কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা অবশ্যই তাদের সহযোগিতা করব।
স্কুলটি পুনরায় চালুর ব্যাপারে সব রকমের সহযোগিতার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষা অফিস ও ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জেনে স্কুলটি চালুর চেষ্টা করব। যদি বৃহৎ এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ হয় এই স্কুলের মাধ্যমে তাহলে অবশ্যই সরকার স্কুলটি চালুর উদ্যোগ নেবে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়