ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলন ৩ ডিসেম্বর : ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন ২ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

ভিত্তিহীন গুজবে ব্যাংকিং খাত > ব্যাংকে জনগণের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে : বাংলাদেশ ব্যাংক

পরের সংবাদ

রূপগঞ্জের ফুটপাতে মাসে ৭৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় : সকালে উচ্ছেদের পর দুপুরে ফের দখল

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের উভয় পাশের ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল হকের নেতৃত্বে চলে এই উচ্ছেদ অভিযান। তবে, সকালে উচ্ছেদ করা হলেও দুপুরেই তা দখল হয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীদের তদবিরে ফুটপাতের কিছু কিছু অংশ উচ্ছেদ করা হয়নি। এদিকে, ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতিদিন প্রায় তাদের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। ওই হিসাবে মাসে চাঁদার আয় হয় প্রায় ৭৫ লাখ টাকা। আর এ চাঁদার টাকা উঠানো হয় উপজেলা প্রশাসন, ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ি, ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্প ও দলীয় নেতাকর্মীদের নামে। এরপরেও উচ্ছেদ অভিযানের নামে এসব নিরীহ ফুটপাত ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়। যারা চাঁদা আদায় করে তারা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
যদিও উপজেলা প্রশাসন, ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ি, ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্প ও দলীয় নেতাকর্মীরা তা অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের ভুলতা- গোলাকান্দাইল এলাকাটি একটি ব্যস্ততম, শিল্প ও ব্যবসায়িক এলাকা। এ এলাকায় মার্কেট ও হাটবাজার রয়েছে। রয়েছে পাইকারি কাপড়ের বাজারও। ওই দুই মহাসড়কসহ সড়কের উভয় পাশের জায়গা দখল করে ফুটপাতে প্রায় এক হাজারের মতো দোকানপাটসহ ভ্যানে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়েছে কয়েকটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটগুলো উপজেলা প্রশাসন, ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ি, ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্প ও দলীয় নেতাকর্মীদের নামে প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে। আর এসব দখল ও চাঁদা আদায়ের বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে তখন প্রশাসনের টনক নড়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ফুটপাত ব্যবসায়ী জানান, তারা প্রতিদিন চাঁদা পরিশোধ করে আসছেন। মাঝে মাঝে প্রশাসনের উপর মহলের চাপে উচ্ছেদ করা হলেও যারা চাঁদা আদায় করেন তারা বলে দেন আগের মতো যাতে ফের দখলে চলে যায়। এ জন্য উচ্ছেদ করার পর পরই ব্যবসায়ীরা আবারো ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা শুরু করেন। এছাড়া চাঁদা আদায়কারীরাও নিয়মিত উল্লেখিত স্থানে মাসোহারা দিয়ে আসছে। যার ফলে চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তারা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অথচ হয়রানি হচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যাপারে তদন্ত করে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান তুহিন বলেন, ‘দলের কেউ চাঁদাবাজি করে না। যারা চাঁদাবাজি করে তাদের বেঁধে রেখে আমাদের খবর দিন।’
এ ব্যাপারে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান ও হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ওমর ফারুক বলেন, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেউ যদি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করে তাকে খুঁজে বের করা হবে। এরপর তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল হক বলেন, ‘আমাদেরও ফুটপাতে গিয়ে উচ্ছেদ করতে ভালো লাগে না। যখন উপর মহল থেকে চাপ আসে তখন আমরা উচ্ছেদ করতে যাই।’
ফুটপাতে বিশেষ তদবিরে কিছু দোকান উচ্ছেদ না করার বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযানটি ছিল সড়ক ও জনপদ বিভাগের। আমাকে সড়ক ও জনপদের সাব ডিবিশনাল ইঞ্জিনিয়ার যেগুলো উচ্ছেদ করতে বলেছেন, আমি সেগুলোই উচ্ছেদ করেছি। ফুটপাত উচ্ছেদের পর ফের দখল হলে আবারো উচ্ছেদ করা হবে। উপজেলা প্রশাসন ফুটপাত থেকে চাঁদা পায় বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেউ উপজেলা প্রশাসনের নামে টাকা তুললে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়