কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্ব মন্দায় দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে বিশ্ববাজারে রপ্তানি বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার অনুসন্ধানের ওপর সর্বোচ্চ জোর দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, করোনা  মহামারি পরবর্র্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব মন্দার ঝুঁকি সামলাতে হলে দেশের রপ্তানি বাড়াতে হবে। পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে আসে বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস ডলার। ডলার সংকটের এই সময়ে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। রাজধানীর পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে গতকাল মঙ্গলবার পণ্য রপ্তানিতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশের শীর্ষ ৭১টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য এই ট্রফি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৯টি কোম্পানি স্বর্ণ, ২৪ কোম্পানি রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে ১৮টি কোম্পানি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ প্রমুখ।
উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, রপ্তানি বাড়াতে সরকার পণ্য রপ্তানির ওপর নগদ সহায়তা দিচ্ছে। ভবিষ্যতে রপ্তানি খাত এগিয়ে নিতে নীতিগত সহায়তা আরো বাড়ানো হবে। সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছে। এসব জায়গায় ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে উদ্যোক্তাদের আরও বেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসতে হবে।
যেসব প্রতিষ্ঠান ট্রফি পেল : এবার ৭১টি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি ট্রফি পেয়েছে। ওভেন পোশাক উপখাত শ্রেণিতে রিফাত গার্মেন্টস, এ কে এম নিটওয়্যার ও অনন্ত অ্যাপারেলস, নিট পোশাক উপখাতে জিএমএস কম্পোজিট, স্কয়ার ফ্যাশনস ও ফোর এইচ ফ্যাশনস, স্পিনিং মিলে বাদশা টেক্সটাইল, কালাম ইয়ার্ন ও নাইস কটন, বস্ত্রকলে এনভয় টেক্সটাইল, আকিজ  টেক্সটাইল ও নাইস ডেনিম। হোম ও বিশেষায়িত টেক্সটাইল শ্রেণিতে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের এবং টেরিটাওয়েলে মান টেরিটাওয়েল মিলস, হিমায়িত খাদ্যে জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুডস, অ্যাপেক্স ফুডস ও এমইউ সি ফুডস। কাঁচা পাটে ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্স আর পাটজাত পণ্যে আকিজ জুট মিলস, করিম জুট স্পিনার্স ও ওহাব জুট মিলস পুরস্কার পেয়েছে। চামড়া খাতের এ্যাপেক্স ট্যানারি ও এসএএফ ইন্ডাস্ট্রিজ,  চামড়াজাত পণ্যে পিকার্ড বাংলাদেশ, এবিসি ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিবিজে লেদার গুডস, জুতাশিল্পে বে-ফুটওয়্যার, রয়েল ফুটওয়্যার ও এফবি ফুটওয়্যার এবং কৃষিপণ্যে মনসুর জেনারেল ট্রেডিং ও ইনডিগো করপোরেশন।
কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য শ্রেণিতে তিনটি পুরস্কারই পেয়েছে প্রাণ গ্রুপ। ফুল ফলিয়েজ শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছে রাজধানী এন্টারপ্রাইজ ও এলিন ফুডস ট্রেড। হস্তশিল্প শ্রেণিতে কারুপণ্য রংপুর, বিডি ক্রিয়েশন ও ক্ল্যাসিক্যাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্টস বিডি, প্লাস্টিক পণ্যে বেঙ্গল প্লাস্টিকস, ডিউরেবল প্লাস্টিক ও বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল, সিরামিক পণ্যে শাইনপুকুর সিরামিকস, আর্টিসান সিরামিকস ও প্যারাগন সিরামিক, হালকা প্রকৌশল শিল্পের ইউনিগেøারি সাইকেল কম্পোনেন্ট, ইউনিগেøারি সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ ও রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ইউনিট-২ পুরস্কার পেয়েছে।
ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক পণ্যে এনার্জিপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং, কনফিডেন্স স্টিল ও রহিম আফরোজ ব্যাটারি, অন্যান্য শিল্পজাত পণ্যে তাসনিম কেমিক্যালস কমপ্লেক্স, মেরিন সেফটি সিস্টেম, মূমানু পলিয়েস্টার ইন্ডাস্ট্রিজ, ওষুধ খাতে বেক্সিমকো, স্কয়ার ও ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কম্পিউটার সফটওয়্যারে সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড পুরস্কার পেয়েছে।

ইপিজেডের শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন তৈরি পোশাকশিল্প (নিট ও ওভেন) শ্রেণিতে ইউনির্ভাসেল জিনস ও প্যাসিফিক জিনস এবং অন্যান্য পণ্য ও সেবায় ফারদিন এক্সেসরিজ ও আরএম ইন্টারলাইনিংস, প্যাকেজিং ও এক্সেসরিজ পণ্যে এম অ্যান্ড ইউ প্যাকেজিং, মনট্রিমস ও ইউনিগেøারি পেপার এন্ড প্যাকেজিং এবং অন্যান্য প্রাথমিক পণ্যে অর্কিড ট্রেডিং করপোরেশন, ইকো ফ্রেশ ইন্টারন্যাশনাল ও দ্য কনসোলিডেটেড টি এন্ড ল্যান্ড কোম্পানি পুরস্কার পায়। অন্যান্য সেবা খাতে মীর টেলিকম এবং নারী উদ্যোক্তা বা রপ্তানিকারক জন্য সংরক্ষিত শ্রেণিতে স্কয়ার টেক্সটাইল ও আল-সালাম ফেব্রিকস পুরস্কার পেয়েছে।