বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : বেলকুচিতে চাঞ্চল্যকর শিশু ইমন (৬) হত্যা মামলায় ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৩০২ ধারার অপরাধে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড ও ২০১ ধারার অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া আসামিদের মধ্যে গোলাম ও আলহাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ এ আদেশ করেন। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের এপিপি ওয়াছ করনী লকেট ও এপিপি মশিউর রহমান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বেলকুচি উপজেলার চর মকিমপুর গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে সোহেল (২৫), আব্দুস সোবহানের ছেলে কাওছার (২৪), গোলাম হোসেনের ছেলে ওসমান (২৫), তামাই গ্রামের ময়দান আলীর ছেলে আল-আমিন (৩৫) ও হিরন (৩০)। আসামিদের মধ্যে হিরন পলাতক রয়েছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, শিশু ইমনের বাবা চাঁন মিয়া মালয়েশিয়ায় থাকেন। চাঁন মিয়ার স্ত্রী মমতা খাতুন দুই সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়ি চর মকিমপুর গ্রামে বসবাস করে। মমতা খাতুন তার চাচা আলহাজ আলীর কাছ থেকে জমি কেনার জন্য ৩০ হাজার টাকা বায়না দেন। পরবর্তীতে জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় টাকা ফেরত চাইলে চাচা আলহাজ আলী টাকা ফেরত দেয় না। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয়। টাকা চাওয়ায় আলহাজ আলী ও তার লোকজন মমতা খাতুনের ছেলের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ২০১১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল থেকে মমতা খাতুনের শিশু সন্তান ইমন নিখোঁজ হয়।
এ ঘটনায় বেলকুচি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশু ইমনের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়ির পার্শ্ববর্তী হাফেজ হাজীর একটি পরিত্যাক্ত প্র¯্রাব খানার ভেতরে ইমনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় নিহত শিশু ইমনের চাচা সানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালে ১২ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। গত বুধবার মামলার যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তিতর্ক শেষে ৬ আসামিকে কারাগারে পাঠায় আদালত। গতকাল এ মামলার রায় প্রদান করা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।