ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলন ৩ ডিসেম্বর : ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন ২ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

ভিত্তিহীন গুজবে ব্যাংকিং খাত > ব্যাংকে জনগণের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে : বাংলাদেশ ব্যাংক

পরের সংবাদ

বিচারকের সঙ্গে অভব্য আচরণ : খুলনার তিন আইনজীবীকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক (বর্তমানে যুগ্ম জেলা জজ) নির্মলেন্দু দাশের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ ৩ আইনজীবীকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত শুনানিতে সাইফুল ইসলামকে উদ্দেশে করে হাইকোর্ট বলেন, আপনি শুধু আইনজীবী সমাজের কলঙ্ক না, আপনি খুলনার কলঙ্ক। আপনি বিচারকের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, কোনো সভ্য সমাজের মানুষ এ আচরণ করতে পারে না।
গতকাল মঙ্গলবার তলবে হাজির হয়ে আচরণের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ তাকে তিরস্কার করেন। শুনানির শুরুতে সাইফুল ইসলামসহ তিন আইনজীবীর পক্ষে আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বার সভাপতির কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, কোনো সভ্য মানুষ কি বিচারকের সঙ্গে এ আচরণ করতে পারে? তিনি কি বার সভাপতি হয়ে আদালতে দাপট দেখাচ্ছেন? আপনারা কেন এসব লোকের পক্ষ নিয়ে আদালতে আসেন? আপনারা তাদের পক্ষ নিলে আমরা বিব্রত হই। মানুষ কতটা নি¤œমানের হলে একজন বিচারকের সঙ্গে এ ভাষা ব্যবহার করতে পারে!
খুলনা বারের সভাপতি সাইফুল ইসলামের দিকে তাকিয়ে আদালত বলেন, আপনি কি নিজেকে খুলনার মহানায়ক ভাবেন? এ সময় কাঁচুমাচু করে নিজের অভব্য আচরণের জন্য আদালতের কাছে ক্ষমা চান খুলনা বার সভাপতি। তিনি বলেন, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। আমাকে মাফ করে দিন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আমরা লজ্জিত এবং একই সঙ্গে তাদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি। এটা সত্যি, অভিযোগ (সভাপতি সাইফুল ইসলাম যে ভাষায় কথা বলেছেন) পড়তে লজ্জা লাগে। রেপ ভিকটিমের জবানবন্দির মতো মনে হয়। তখন আদালত বলেন,

আইনজীবী যদি আদালতের সঙ্গে এ রকম আচরণ করেন, তখন আদালত, বার বলে কিছু থাকে না। তারা শুধু আদালত অবমাননাই করেননি, ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।
এরপর সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, রবিউল আলম বুদু খুলনা বারের তিন আইনজীবীর হয়ে উচ্চ আদালতের কাছে ক্ষমা চান। কখনো আর এমন হবে না বলে সমস্বরে প্রতিশ্রæতি দেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবীরা।
গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতির দপ্তরে অভিযোগ দেন বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা জজ নির্মলেন্দু দাশ। সে অভিযোগ প্রধান বিচারপতির সামনে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী। পরে গত ২৫ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি অভিযোগটি হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপন করতে বলেন। সে অনুযায়ী গত ১ নভেম্বর খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক নির্মলেন্দু দাশের অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। পরে হাইকোর্ট অশোভন-অভব্য আচরণ ও আদালত অবমাননার অভিযোগে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, খুলনা বারের সদস্য শেখ নাজমুল হোসেন ও শেখ আশরাফ আলী পাপ্পুকে তলব করেন। আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। সে তলবেই হাজির হন খুলনার তিন আইনজীবী। তিরস্কার, ভর্ৎসনার পর আজ বুধবার বিষয়টি আদেশের জন্য রাখেন উচ্চ আদালত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়