ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলন ৩ ডিসেম্বর : ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন ২ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

ভিত্তিহীন গুজবে ব্যাংকিং খাত > ব্যাংকে জনগণের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে : বাংলাদেশ ব্যাংক

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের রাউজানে এক প্রবাসীর বাড়িতে শতাধিক ভরি স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত সর্দারহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার বাকি সাতজনের মধ্যে একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও ডাকাত বাহিনীর সদস্যরা আছে। ডাকাতি হওয়া বাড়ির সামনের রাস্তার সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে মুখোশ পড়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা ডাকাতদলের এক সদস্যকে ধরার পর তার দেয়া তথ্যে ডাকাতের ওই দলকে ধরা সম্ভব হয়। গতকাল মঙ্গলবার র‌্যাব চট্টগ্রাম জোনের চান্দগাঁও ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার সাতজন হলেন- মো. মুসা (৩০), সাইদুল ইসলাম ওরফে সাইফুল (৩০), খোরশেদুল আলম (২৮), সাজ্জাদ হোসেন (২৭), মো. বাপ্পী (২৬), সজল শীল (২৭) ও মো. ইদ্রিস ওরফে কাজল (৩৪) এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিপ্লব চন্দ্র সাহা (৩৯)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৪৬ ভরি স্বর্ণ এবং ২৩ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। তবে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এমরান নামে একজন পলাতক বলে জানিয়েছে র‌্যাব। প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবার রাতে রাউজান উপজেলার সুলতান পাড়ার বাসিন্দা প্রবাসী সরোয়ার চৌধুরীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মুখোশ পড়া ডাকাতদল বাড়িতে থাকা সরোয়ারের বৃদ্ধ বাবাকে বেঁধে ১২৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, স্বর্ণের বার, নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাউজান থানায় একটি মামলা দায়ের হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ জানান, ওই মামলার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে তারা জানতে পারে, গত ২৭ অক্টোবর দুবাই প্রবাসী সরোয়ার তার মামাত বোনের বিয়ের জন্য দেশে আসেন।
দুবাই থেকে আনা কিছু স্বর্ণালঙ্কার শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে তিনি বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন বাড়িতে তার বাবাকে রেখে অন্য সদস্যরা বিয়েতে যায়। ওই রাতেই ডাকাত দল গ্রিল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে। র‌্যাব প্রথমে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে। কিন্তু সবার মুখে মুখোশ থাকায় কারো চেহারা বোঝার উপায় ছিল না। দেখা যায়, ২৮ তারিখ গভীর রাতে ওই বাসার ফ্রিজ খুলে খাবার খাচ্ছে এক যুবক। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আরো এক যুবক সেখানে আসে এবং ফ্রিজ থেকে খাবার খায়। সেই যুবকের পায়ে কালো সুতা দেখা যায়। ফুটেজে তাকে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। সেই যুবককে আমরা প্রথমে শনাক্ত করি, সে ডাকাত সর্দার সাইফুল। এরপর খোঁজ খবর নিয়ে সাইফুলের অতীতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তথ্য পায় র‌্যাব। আর আর্থিকভাবে সচ্ছল না হলেও সাত লাখ টাকা দিয়ে মুছার জমি কেনার চেষ্টার খবর র‌্যাবের তদন্তে ধরা পড়ে।
এরপর সোমবার উপজেলার গহিরা এলাকা থেকে মুছাকে গ্রেপ্তার করে সাত লাখ টাকা উদ্ধার করা হয় এবং তার স্বীকারোক্তিতে সাইফুল এবং অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। চোরাই স্বর্ণ কেনার অপরাধে বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৪৬ ভরি স্বর্ণ, নগদ ২৩ লাখ দুই হাজার ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়।
র‌্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ আরো জানান, সাইফুলের প্রস্তাবে এক লাখ টাকার বিনিময়ে সরোয়ারের প্রতিবেশি কাজল ওই বাড়িতে ডাকাতির ছক আঁটে। কাজল ও সাইফুলের ধারণা ছিল, বাড়িতে কেউ থাকবে না। তবে সরোয়ারের বাবাকে দেখে তাকে কম্বল মুড়িয়ে পা বেঁধে গলায় ছুরি ধরে রাখে।
তার থেকে চাবি নিয়ে ও কিছু আলমারি কেটে ১২৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, পাঁচটি মোবাইল ফোন সেটসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে যায়। কাজলের দেয়া তথ্যে ডাকাতির জন্য ঘরে ঢুকেছিল মূলত সাতজন। এদের মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এমরান নামে একজন এখনো পলাতক আছে।
র‌্যাবের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, সরোয়ারের ঘর থেকে লুট করা মালামাল সাইফুল নিজের কাছে রেখে দেয়। মুছাকে নিয়ে সেগুলো বিক্রির জন্য যায় বিপ্লবের কাছে। বিপ্লব ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা দরে ২৯ লাখ টাকা দিয়ে কিছু স্বর্ণালঙ্কার ও বার কিনে। সেই টাকা থেকে সাইফুল প্রতিশ্রæতি মতো কাজলকে এক লাখ টাকা দেয়। মুছা ও সে ১৬ লাখ টাকা নিয়ে বাকি টাকাগুলো অন্যদের ভাগাভাগি করে দেয়। তিনি বলেন, এটি ক্লু-লেস একটি মামলা ছিল। সবাই মুখোশ পরা থাকায় কাউকে চেনা যায়নি। কিন্তু খুঁড়িয়ে হাঁটা ওই ব্যক্তিকে দেখে আমরা খোঁজ নেয়া শুরু করি। এক পর্যায়ে জানা যায় ওই ব্যক্তি সাইফুল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়