অর্থপাচার মামলা : বরকত-রুবেলের আরেক সহযোগী কারাগারে

আগের সংবাদ

আরব্য রজনীর নতুন রূপকথা : সৌদি আরব ২ : আর্জেন্টিনা ১ > মেসিদের প্রত্যাশিত হারে স্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব

পরের সংবাদ

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন : দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির শুরুতে দেশের সব সেনানিবাস, নৌঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে পৃথক পৃথকভাবে গার্ড অব অনার দেয়। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রাখা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে তিন বাহিনী প্রধানরা এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার তাদের স্বাগত জানান। মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং মহাপরিচালকরা। সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্ধারিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেন। এছাড়াও, ৪ জন সেনা, দুজন নৌ এবং দুজন বিমান বাহিনী সদস্যদের ২০২১-২০২২ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করা হয়।
এর পর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তিন বাহিনী প্রধানরা নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সদস্য এবং তাদের পরিবারবর্গের সম্মানার্থে পৃথক পৃথক সংবর্ধনার আয়োজন করেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সেনাকুঞ্জে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা ছাড়াও দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ও স্থানীয় দূতাবাসসমূহের বিদেশি কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। সন্ধ্যায় বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গণমাধ্যমেও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে নানামুখী অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকসমূহে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও, সশস্ত্র বাহিনীর আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
নৌবাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত ২২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ২০২১ সালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩৯ জন নৌসদস্যদের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল বনানীস্থ নৌ সদর সাগরিকা হলে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল এই সম্মাননা ও শান্তিকালীন পদক তুলে দেন।
উল্লেখ্য, শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে দুজন নৌবাহিনী পদক (এনবিপি), ৫ জন অসামান্য সেবা পদক (ওএসপি), ৫ জন বিশিষ্ট সেবা পদক (বিএসপি), ৭ জন নৌ গৌরব পদক (এনজিপি), ১০ জন নৌ উৎকর্ষ পদক (এনইউপি) এবং ১০ জন নৌ পারদর্শিতা পদক (এনপিপি) পদকে ভূষিত হয়েছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের পরিবারসহ ৫ জন বীর উত্তম, ৮ জন বীর বিক্রম, ৮ জন বীর প্রতীক মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান এবং পরিবারদের সদস্যরাসহ নৌসদরের পিএসওরা ও ঢাকা নৌ অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার সদর ঘাটে বানৌজা সুরমা, চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে বানৌজা সমুদ্র অভিযান, খুলনা বিআইডব্লিউটিএ রকেট ঘাটে বানৌজা সালাম, মোংলা দিগরাজ নেভাল বার্থে বানৌজা সাংগু, বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বানৌজা বরকত এবং চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বানৌজা পদ¥া দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। এ সময় বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ ঘুরে দেখেন। এর আগে খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও শহীদ বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ্র মাজারে ‘গার্ড অব অনার’ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়