অর্থপাচার মামলা : বরকত-রুবেলের আরেক সহযোগী কারাগারে

আগের সংবাদ

আরব্য রজনীর নতুন রূপকথা : সৌদি আরব ২ : আর্জেন্টিনা ১ > মেসিদের প্রত্যাশিত হারে স্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব

পরের সংবাদ

শিশুসাহিত্যিক আলী ইমাম আর নেই

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চিরদিনের জন্য থেমে গেল শিশুসাহিত্যিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলী ইমামের লেখার বহুমাত্রিক কলমটি। যিনি দুহাত ভরে লিখে গেছেন ছোটবড় সবার জন্য। গতকাল সোমবার বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ছয় শতাধিক বইয়ের এই লেখক। এর মধ্য দিয়ে একটি অধ্যায়ের অবসান হলো। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
আলী ইমামের মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে ডা. তানভীর ইমাম। তিনি বলেন, পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বাবা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। মৃদু স্ট্রোক, শরীরের নানা জটিলতা ও শ্বাসযন্ত্রে সমস্যার সঙ্গে নিউমোনিয়া এবং নি¤œ রক্তচাপ ছিল বাবার। ১০ দিন আগে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তানভীর জানান, বাবার মরদেহ (সোমবার রাতে) ধানমন্ডির বাড়িতে রাখা হবে। আজ মঙ্গলবার জানাজা ও দাফন করা হবে।
আলী ইমাম ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সপরিবার তিনি থাকতেন ঢাকার ঠাটারীবাজারে। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে পুরান ঢাকার ওয়ারী, লিঙ্কন রোড, নয়াবাজার, নওয়াবপুর, কাপ্তানবাজার, ফুলবাড়িয়া এলাকায়। লেখালেখি ছাড়াও অডিও ভিজ্যুয়াল ব্যবস্থাপক হিসেবেও তিনি কাজ করতেন। আলী ইমাম বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে ২০০৬ সালে অবসরে যান। তিনি ২০০১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ২০১২ সালে তিনি শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান।
এ ছাড়া ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সাত বছর তিনি ইউনিসেফের ‘মা ও শিশুর উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম প্রকল্প’ পরিচালক ছিলেন। ওই দায়িত্ব পালনকালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন, জার্মানির মিউনিখ, ব্রাজিলের রিওতে অনুষ্ঠিত ‘চিলড্রেন মিডিয়া সামিটে’ যোগ দেন। মিউনিখে অনুষ্ঠিত ‘প্রি জুঁনেসি চিলড্রেনস টিভি প্রোডাকশন প্রতিযোগিতা’র (২০০০) জুরির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ‘সার্ক অডিও ভিজ্যুয়াল বিনিময় অনুষ্ঠানে’র প্রধান সমন্বয়কারী (২০০০-২০০১)।
টেলিভিশন ও বেতারে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের নির্মাতা ও উপস্থাপক হিসেবে তিনি বিশেষ প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘হ্যালো, আপনাকে বলছি’ (১৯৯৯-২০০৪) নামে তার উপস্থাপিত সরাসরি অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয় হয়েছিল। এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিখ্যাত প্রামাণ্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া’র (১৯৮০-১৯৮৭) প্রযোজনা করেন তিনি।
আলী ইমাম ছিলেন বহুমাত্রিক লেখক। শিশুসাহিত্য ছাড়াও গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, অনুবাদ, ফিচার, ভ্রমণকাহিনী, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখেছেন। তার উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ ও গবেষণা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘সোনালি তোরণ’ (১৯৮৬), ‘আলোয় ভুবন ভরা’ (১৯৮৭), ‘দুঃসাহসী অভিযাত্রী’ (১৯৮৮), ‘সেলুলয়েডের পাঁচালী’ (১৯৯০), ‘রক্ত দিয়ে কেনা’ (গল্প ১৯৯১)। তার কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘ধলপহর’ (১৯৭৯), ‘হিজল কাঠের নাও’ (১৯৮৬), ‘তোমাদের জন্যে’ (১৯৯৪)। শিশুসাহিত্য রয়েছে ‘দ্বীপের নাম মধুবুনিয়া’ (গল্প, ১৯৭৫), ‘অপারেশন কাঁকনপুর’ (উপন্যাস, ১৯৭৮), ‘তিরিমুখীর চৈতা’ (রহস্য উপন্যাস, ১৯৭৯), ‘রুপোলী ফিতে’ (গল্প, ১৯৭৯), ‘শাদা পর’ (গল্প, ১৯৭৯)। কিশোর উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘রক্তপিশাচ তিতিরোয়া’ (১৯৮৬), ‘ভয়াল ভয়ঙ্কর’ (১৯৮৭), ‘নীল শয়তান’ (১৯৮৭), ‘ভয়ঙ্করের হাতছানি’ (১৯৯০), ‘রক্তপিশাচ’ (১৯৯০), ‘ইয়েতির চিৎকার’ (১৯৯০), ‘নীল চোখের ছেলে’ (১৯৯২)।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়