অর্থপাচার মামলা : বরকত-রুবেলের আরেক সহযোগী কারাগারে

আগের সংবাদ

আরব্য রজনীর নতুন রূপকথা : সৌদি আরব ২ : আর্জেন্টিনা ১ > মেসিদের প্রত্যাশিত হারে স্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে গোল্ডেন গøাভসজয়ীরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গোলের খেলা ফুটবল। এখন পর্যন্ত মাঠে গড়িয়েছে ২১টি আসর। যেখানে ফুটবলাররা যেমন গোল করেছেন, তেমনি বল যেন জালে প্রবেশ না করে সেজন্য গোলপোস্টের নিচে প্রহরীর দায়িত্ব পালন করেছেন গোলরক্ষকরা। বিশ্বকাপ শুরুর প্রথম দিকে গোলরক্ষকদের জন্য কোনো পুরস্কারের ব্যবস্থা না থাকলেও ১৯৯৪ সালে প্রথম চালু করা হয়। বিশ্বকাপের প্রথম আসর থেকেই সেরা গোলরক্ষক নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে ১৯৮২ সালে সেরা গোলদাতাকে গোল্ডেন বুট এবং সেরা খেলোয়াড়কে গোল্ডেন বল দেয়ার প্রচলন হলেও সেই আসরে গোলরক্ষকদের জন্য কোনো পুরস্কারের ব্যবস্থা ছিল না। রাশিয়ার বিখ্যাত গোলরক্ষক লেভ ইয়াসিনের নামে ১৯৯৪ সালের যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ থেকে শুরু হয় লেভ ইয়াসিন অ্যাওয়ার্ড। ২০১০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় গোল্ডেন গøাভস অ্যাওয়ার্ড। বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকদের কথা তুলে ধরেছেন- আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ
বিশ্বকাপ : ১৯৯৪
সেরা গোলরক্ষক : মাইকেল প্রাডহোম
দেশ : বেলজিয়াম
১৯৯৪ বিশ্বকাপের ৪ ম্যাচ খেলেই সেরা গোলরক্ষক হয়েছিলেন বেলজিয়ামের মাইকেল প্রাডহোম। তবে শেষ ষোলোতে সেবারের চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম জার্মানির কাছে হেরে বিদায় নেয় বেলজিয়াম। টুর্নামেন্ট শেষে প্রাডহোম হন বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জেতা প্রথম ব্যক্তি। এই বেলজিয়ানই একমাত্র গোলরক্ষক, যিনি কোয়ার্টার ফাইনাল না খেলা সত্ত্বেও সেরা গোলরক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিশ্বকাপ : ১৯৯৮
সেরা গোলরক্ষক : ফাবিয়েন বার্তেজ
দেশ : ফ্রান্স
১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। সেই বিশ্বকাপে মাত্র দুটি গোল হজম করেছিলেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক বার্তেজ। পুরো টুর্নামেন্টে সাত ম্যাচে তিনি পাঁচটি ক্লিনশিট রেখেছিলেন। গ্রুপ পর্বে পেনাল্টিতে ডেনমার্কের বিপক্ষে একটি এবং সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একটি গোল হজম করেন। তার এমন পারফরম্যান্সে সেই আসরে তিনি টুর্নামেন্ট সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন। তাকে দেয়া হয় লেভ ইয়াসিন অ্যাওয়ার্ড।
বিশ্বকাপ : ২০০২
সেরা গোলরক্ষক : অলিভার কান
দেশ : জার্মানি
২০০২ বিশ্বকাপে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ব্রাজিল। সেই আসরের ফাইনালে তারা হারায় জার্মানিকে। আসরে জার্মানদের গোলপোস্ট সামলান অলিভার কান। দিয়েছেন জার্মান দলের নেতৃত্বও। পুরো টুর্নামেন্টে একের পর এক দুর্দান্ত সেভ দিয়ে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেবারের আসরে ৭ ম্যাচ খেলে মাত্র দুই ম্যাচে গোল হজম করেছিলেন তিনি। পক্ষান্তরে পুরো টুর্নামেন্টে ৫টি ম্যাচে ক্লিনশিট রেখেছিলেন তিনি। ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে হাতের চোটে খেলতে নেমে দুটি গোল হজম করেন কান। তবে সেবারের আসরের সেরা গোলরক্ষক হয়েছিলেন অলিভার কান। দানবীয় পারফরম্যান্সের জন্য গোল্ডেন বলও জিতেছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ ফুটবলের গোল্ডেন বল এবং গোল্ডেন গøাভসজয়ী প্রথম এবং একমাত্র গোলরক্ষক অলিভার কান।
বিশ্বকাপ : ২০০৬
সেরা গোলরক্ষক : জিয়ানলুইজি বুফন
দেশ : ইতালি
২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে ইতালি। সেই আসরে শুধু গ্রুপ পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ডিফেন্ডারের আত্মঘাতী গোল আর ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে জিদানের কাছে পেনাল্টিতে গোল হজম করেছিলেন বুফন। আর এই দুই গোল হজমের মাঝে টানা ৪৬০ মিনিট এই গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ায়নি। টুর্নামেন্ট শেষে তাই ৫টি ক্লিনশিট রাখা ইতালিয়ান গোলপ্রহরীর হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার।
বিশ্বকাপ : ২০১০
সেরা গোলরক্ষক : ইকার ক্যাসিয়াস
দেশ : স্পেন
এই আসরে লেভ ইয়াসিন অ্যাওয়ার্ডের নাম পরিবর্তন করে গোল্ডেন গøাভস রাখা হয়। আফ্রিকা মহাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম এবং একমাত্র বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জয় করে স্পেন। সেই আসরে স্পেনকে নেতৃত্ব দেন গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস। সেই আসরের প্রথম ম্যাচে হারলেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেদের একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছিল স্প্যানিশরা। পুরো টুর্নামেন্টে মাত্র ৭ গোল করেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে কম গোল করে শিরোপা জেতার রেকর্ড করে তারা। সেবার আসরে একটি পেনাল্টি সেভসহ ১৭টি সেভ করেন ক্যাসিয়াস। তাই সেরা গোলরক্ষক হিসেবে প্রথম গোল্ডেন গøাভস জেতেন ক্যাসিয়াস।
বিশ্বকাপ : ২০১৪
সেরা গোলরক্ষক : ম্যানুয়েল নয়্যার
দেশ : জার্মানি
দ্বিতীয় জার্মান গোলরক্ষক হয়ে বিশ্বকাপে সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন ম্যানুয়েল নয়্যার। ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে জার্মানি। জার্মানদের অধিনায়কও ছিলেন নয়্যার। গোলরক্ষক হয়েও দলের প্রয়োজনে অনেকবারই ডি-বক্সের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২০১৪ বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচ খেলে হজম করেছিলেন মাত্র চার গোল। ক্লিনশিট রেখেছিলেন চারটি ম্যাচে। জার্মানির গোলবার দক্ষভাবে আগলে রেখে সেরা গোলরক্ষকের খেতাব জিতেছিলেন নয়্যার।
বিশ্বকাপ : ২০১৮
সেরা গোলরক্ষক : থিবো কোর্তোয়া
দেশ : বেলজিয়াম
বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরে সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন বেলজিয়ামের থিবো কোর্তোয়া। ২০১৮ বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচ খেলে চারটিতেই গোল হজম করেছিলেন এই বেলজিয়ান। তবে পুরো টুর্নামেন্টে ২৭টি দুর্দান্ত সেভ দিয়েছিলেন তিনি। কোর্তোয়ার এমন পারফরম্যান্সে বেলজিয়াম তাদের বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা সাফল্যে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। তাই বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরে টুর্নামেন্ট সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন কোর্তোয়া। বর্তমান এই গোলরক্ষক বেলজিয়ামের পাশাপাশি রিয়াল মাদ্রিদের গোলপোস্টও সামলাচ্ছেন দারুণভাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়