এম কে রানা, বরিশাল থেকে : বরিশালে ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট ডেকেছেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। এতে বিপাকে পড়েছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করেন অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা। বিষয়টি সমাধানে সিটি মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন হাসপাতালের পরিচালক। অভিযোগ রূেয়ছে, বরিশালে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থায় কোনো শৃঙ্খলা নেই। রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন তারা। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন দেড়শ থেকে দুইশ রোগী ভর্তি হয় হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্য থেকে প্রতিদিনই প্রায় অর্ধশত রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর প্রযোজন পড়ে। এছাড়া হাসপাতালটিতে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন রোগী মারা যান। অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়তে হয়েছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। অভিযেগে জানা যায়, বরিশালে রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্সের নির্ধারিত ভাড়ার কোনো তালিকা নেই। অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ অবস্থায় রোগী পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে স¤প্রতি কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেন শের-ই-বাংলা মেডিকেলের পরিচালক। নির্দেশনায় রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্সের সিরিয়াল মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালকের এই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গতকাল সকাল থেকে আকস্মিক ধর্মঘট শুরু করেন অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও স্বজনরা। তারা হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ বাড়ি নিতে পারছেন না।
সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, তার মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ৮টায় মারা যান। দুপুর পর্যন্ত মরদেহ বাড়ি নিতে পারেননি অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটের কারণে।
এদিকে অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা শৃঙ্খলার কথা মুখে বললেও ভাড়ার তালিকার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে তাদের। অ্যাম্বুলেন্স মালিক মো. মনির জানান, সব রোগীর কাছ থেকে একই হারে ভাড়া আদায় করা যায় না। রোগীর আর্থিক অবস্থা বুঝে ভাড়া আদায় করেন তারা। বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফিরোজ আলম জানান, ঢাকায় রোগী পরিবহনে ১০ হাজার টাকার কমে অ্যাম্বুলেন্স চালাবেন না তারা। অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালক সমিতির ধর্মঘটে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বিষয়টি সমাধানে সিটি মেয়রের সহায়তা কামনা করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকদের পেছনে অদৃশ্য শক্তি রয়েছে। তারা শৃঙ্খলা মানতে চান না। বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতিবিদদের দেখা উচিত। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি রোধে হাসপাতাল এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।