অর্থপাচার মামলা : বরকত-রুবেলের আরেক সহযোগী কারাগারে

আগের সংবাদ

আরব্য রজনীর নতুন রূপকথা : সৌদি আরব ২ : আর্জেন্টিনা ১ > মেসিদের প্রত্যাশিত হারে স্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব

পরের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রী : মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ভুলবে না আ.লীগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া যোদ্ধাদের খুঁজে বের করে তাদের কল্যাণে সব ধরনের ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সরকার নিচ্ছে। আমার এটাই চেষ্টা, যারা আমার বাবার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন, তাদের সম্মান করা, তাদের মর্যাদা দেয়া, এটাই তো আমাদের কাজ। দল-মত পৃথক থাকতে পারে, কিন্তু তাদের অবদানটা কখনো ছোট করে দেখিনি আমি। কখনো এটা নিয়ে অবহেলা করিনি। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান কখনো ভুলবে না। তাই আমরা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্ধারিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নিকটাত্মীয়সহ প্রায় ১০১ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের হাতে সম্মানী চেক এবং উপহারসামগ্রী তুলে দেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তিন বাহিনীর প্রধানরা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্তকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের সঙ্গে চা-চক্রে অংশ নেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যারা একেবারে অবহেলিত পড়ে ছিল, আমরা তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাদের ভাতার ব্যবস্থা করা, কোনো মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে যেন রাষ্ট্রীয় সম্মান পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এমনকি তাদের দাফন-কাফনের ব্যবস্থাটাও যাতে হয়, সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, আপনাদের যে অবদান, মুক্তিযোদ্ধাদের যে অবদান সেটা কখনো আমরা ভুলি না। ভিত্তিটা তৈরি করে সামনের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনার পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে দুর্দশায় পড়তে হয়েছিল সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে এই কথাটা বলবার মতো কারো মনোবল তখন ছিল না। তবে, যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের সঙ্গে যারা হাত মিলিয়েছিল, তারা ভালো ছিল। সবাইতো এভাবে থাকতে পারে না। কাজেই তাদের (মুক্তিযোদ্ধা) জীবন দুর্বিষহ হয়ে গিয়েছিল। জাতির পিতাকে হত্যার পর যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও বিকৃত করা হয়েছিল, সে কথা অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়, জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়। মনে হল যেন আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে নাই। এটাকে যেন পাকিস্তানের আরেকটা প্রদেশে রূপান্তর করার অপচেষ্টা।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় আমরা জায়গা দিয়েছি, সেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগুলো যেন থাকে এবং ওই অঞ্চলে যে যুদ্ধ হয়েছে তার ইতিহাসটা যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা জানতে পারে, কারণ আমাদের বিজয়ের ইতিহাস জানলে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভেতরেও সেই ধরনের একটা উদ্দীপনা আসবে।
গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ ‘বদলে’ গেছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে পেরেছি, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন যখন করেছি, তখনই আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, উন্নত দেশে উন্নীত করতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ‘বিপদের’ কথাও উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকা ইউরোপের স্যাংশান আমাদের অনেক বিপদে ফেলে দিয়েছে। আমদানিকৃত পণ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। তারপরও আমরা থেমে নেই। দেশের মানুষের যেন কোনো কষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সবাইকে আহ্বান করেছি এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আমরা যেন আমাদের অর্থনীতির মন্দা কাটিয়ে চলতে পারি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়