অর্থপাচার মামলা : বরকত-রুবেলের আরেক সহযোগী কারাগারে

আগের সংবাদ

আরব্য রজনীর নতুন রূপকথা : সৌদি আরব ২ : আর্জেন্টিনা ১ > মেসিদের প্রত্যাশিত হারে স্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব

পরের সংবাদ

পার্বতীপুরে রেল ইঞ্জিনের ব্যাটারি চুরি : সিসিটিভি ফুটেজে চোর শনাক্ত হলেও গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) থেকে : পার্বতীপুরে রেলের লোকোশেড থেকে চারটি লোকোমোটিভ (রেল ইঞ্জিন), ৩২টি ব্যাটারি চুরির ঘটনার দশ দিনেও মালামাল উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) দায়িত্বরত তিন সদস্যকে ব্যাটারিগুলো ভ্যানে করে লোকোশেডের বাইরে নেয়ার দৃশ্য সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এরপরও ১০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও জিআরপি পুলিশ তাদের (চোর) গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে জিআরপি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, একটি মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।
জানা গেছে, লোকোশেড, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিস ও ডিজেল ওয়ার্কশপসহ পুরো এলাকাটি ৩৬টি সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিস ও ডিজেল ওয়ার্কশপের মেইন গেটের সামনে থাকা সিসিটিভির ১৪ নম্বর ক্যামেরায় ধরা পরে চুরির ঘটনা। গত ৪ নভেম্বর রাতের ওই ফুটেজে দেখা যায়, কর্তব্যরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্যের সহযোগিতায় রাত ২টা ৪৯ মিনিটে ব্যাটারি চালিত একটি খালি ভ্যান লোকোশেডের ভেতরে প্রবেশ করে। ৫০ মিনিট পর ৩টা ৪০ মিনিটে হাফ হাতা গেঞ্জি পরিহিত আরএনবি’র এসআই মাহিদুল ইসাম মাহিদের ইশারায় ব্যাটারি ভর্তি ভ্যানটি বের হয়ে যায়। তবে পার্বতীপুরে রেলের লোকোশেড ইনচার্জ সিনিয়র সাব-অ্যাসিসট্যান্ট প্রকৌশলী (এসএসএই) মো. কাফিউল ইসলামের দাবি, ভেতরের ক্যামেরাগুলো অচল থাকায় চুরির ঘটনার কিছুই রেকর্ড হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় গত ১০ নভেম্বর সিসিটিভি ফুটেজসহ পার্বতীপুর জিআরপি থানায় মামলা করা হয়। কিন্তু এ মামলার তদন্ত চলছে ঢিমেতালে।
এজাহারের সঙ্গে সংযুক্ত সিসিটিভি ফুটেজে চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দেখা যাচ্ছে, এরপরও কেন কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার (জিআরপি) উপপরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, তদন্ত চলমান। এর বেশি কিছু বলা যাবে না। জিআরপি ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, ফুটেজের কাউকে চেনা যায়নি।
যদিও ঘটনা তদন্তে এএমই ওপি এন্ড এফ/পাকশী মো. আব্দুল জলিলকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর লালমনিরহাট ডিভিশনের সহকারী কমান্ডেন্ট (এসি) মো. আতাউর রহমান ও সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (এইএন) পার্বতীপুর আবু জাফর মো. রাকিবুল হাসান। তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্য মো. আতাউর রহমান গত রবিবার জানান, গত বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
১০ কার্যদিবসে হয়তো তদন্ত শেষ করা যাবে না। এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, পার্বতীপুর লোকোশেডে রেল ইঞ্জিনের ফুয়েলিংসহ হালকা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন এসআই’র নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি টিম সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে। লোকো ইনচার্জ এসএসএই মো. কাফিউল ইসলাম গত ৭ নভেম্বর সকালে কারখানায় রাখা ক্রেন ও পুরোনো রেল ইঞ্জিন পরিদর্শনে গেলে ব্যাটারি চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় ৮ নভেম্বর লোকোশেড নিরাপত্তার দায়িত্বরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ সহকারী পরিদর্শক (এসআই) মহিদুল ইসলাম মাহিদ, হাবিলদার ইমদাদুল হকসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সাত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে লালমনিরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ে ক্লোজ করে নেয়া হয়। ১০ নভেম্বর লোকো ইনচার্জ মো. কাফিউল ইসলাম অজ্ঞাত আট-নয়জনকে আসামি করে পার্বতীপুর জিআরপি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ৩২টি ব্যাটারির মূল্য দেখানো হয়েছে ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা (পুরাতন হিসাবে)। প্রকৃতপক্ষে ব্যাটারিগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়