অর্থপাচার মামলা : বরকত-রুবেলের আরেক সহযোগী কারাগারে

আগের সংবাদ

আরব্য রজনীর নতুন রূপকথা : সৌদি আরব ২ : আর্জেন্টিনা ১ > মেসিদের প্রত্যাশিত হারে স্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব

পরের সংবাদ

ক্ষমতার ছায়ায় ভুইফোঁড় সংগঠন নেতাদের প্রশ্রয়ে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : ২০১৮ সালের ২৭ মার্চ। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এক কেন্দ্রীয় নেতা বক্তব্য শুরুর আগে নিজ নিজ সংগঠনের নামে স্লোগান দিচ্ছিলেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। মিলনায়তনের নিচতলায় মঞ্চের বেশ কাছাকাছি সারিতে বসে কয়েকজন যুবক স্লোগন ধরেন- ‘বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, নেতা মোদের শেখ মুজিব’। স্লোগান শুনে মঞ্চে থাকা বিস্মিত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার তাৎক্ষণিক প্রশ্ন, ‘এটি কী? এটি আবার কবে হলো? আগে তো শুনিনি!’ নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই অন্তত আড়াইশ সংগঠন নামের আগে-পরে আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গন্ধুর পরিবার ও মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে সমাজে দাপট দেখাচ্ছে। রাজধানীতে ইস্যুকেন্দ্রিক আলোচনায় গণমাধ্যমে আসা, চাঁদাবাজি, তদ্বিরবাজিই এদের মূল কাজ। যদিও এসব সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক হেভিওয়েট নেতা, বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রীরা। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমতি ছাড়া বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নামে কোনো সংগঠন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। তবুও থামছে না ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নিত্যনতুন সংগঠন।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫(২) ধারা অনুযায়ী, ৮টি সহযোগী সংগঠন রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ এবং মৎস্যজীবী লীগ। এর বাইরে ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগ নিজ নিজ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলবে। এছাড়া গঠনতন্ত্রে স্বীকৃতি না থাকলেও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও মহিলা শ্রমিক লীগকে ধারণ করে দল। ফলে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম মিলে আওয়ামী লীগের স্বীকৃত ১২টি সংগঠন রয়েছে। আর সুনির্দিষ্ট কিছু সদস্য নিয়ে মূল দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের প্রত্যেকের অধীনে একটি করে উপকমিটি থাকবে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম কিংবা নীতিগত কোনো সংগঠন নেই।
তবে ২০০৯ সালের পর ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য বিতর্কিত ভুইফোঁড় সংগঠনের গজিয়ে ওঠা, সংগঠনের নেতাকর্মীদের ক্ষমতার দাপট, তদ্বির বাণিজ্য, দখল কিংবা অনৈতিক আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে অসংখ্যবার বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। জানা গেছে, এসব বিতর্কিত সংগঠন কিছু ক্ষমতাশালী নেতা বা মন্ত্রীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই চলে।

অভিযোগ রয়েছে, এসব সংগঠন দেশব্যাপী কমিটিও দিচ্ছে নানা উৎকোচের বিনিময়ে। দখল, চাঁদাবাজি, সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে এসব নামসর্বস্ব সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে। বড় ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হওয়ার খবর চাউর হলেই মূল দল থেকে শুধু বলা হয়, এসব সংগঠনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু বাস্তবে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী এসব ভুইফোঁড় সংগঠনের কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়ার নজির নেই। তবে গত বছর (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগকে ‘এরা চাঁদাবাজ’ আখ্যা দিয়ে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেইসঙ্গে আওয়ামী লীগের নাম জড়িয়ে গড়ে ওঠা ভুইফোঁড় সংগঠনগুলোতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অতিথি হয়ে না যাওয়ার নির্দেশনাও দেন তিনি। যদিও গত শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ’ নামে এক সংগঠনের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। গজিয়ে ওঠা এসব ভুইফোঁড়ের ভিড়ে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা-সমালোচনা জন্ম দিয়েছে। সৈনিক লীগের কাজ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ক্ষমতাসীন নেতারা বলছেন, সুবিধা আদায়ের জন্য ভিন্নপন্থি নেতারাও এখন আওয়ামী লীগে। দলের বড় বড় নেতার সঙ্গে ছবি তোলাই তাদের কাজ। এসব ছবি দিয়ে তারা প্রতারণার জাল বিছিয়ে থাকেন। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ ‘রিজেন্ট সাহেদ’। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও রয়েছে ভুইফোঁড় সংগঠনের তৎপরতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেও চালানো হয় নানা প্রচারণা, যা নিয়ে বিব্রত হয়ে একাধিকবার গণমাধ্যমে বিবৃতিও দিয়েছে আওয়ামী লীগ। একটি সংগঠনের নাম ছিল ‘সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদ’। এই সংগঠনের বিষয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজে ফেসবুকে জানান, এমন কোনো সংগঠনের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজেদের গঠনতন্ত্র মেনে কাজ করে। যদি রাষ্ট্রীয়, সামাজিক কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। তবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারো নাম ব্যবহার করলে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট্রির অনুমতি নিতে হয়। সেক্ষেত্রে কেউ অনুমতি না নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
এদিকে সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা পেলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না মৎস্যজীবী লীগের। দৃশ্যমান কোনো ভালো কাজ না থাকলেও একের পর এক বির্তক আর সমালোচনার জন্ম দিয়ে চলেছে সংগঠনটি। বির্তকিত এবং বিএনপি-জামায়াত নেতাদের পদ দিয়ে প্যাকেট বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর নস্কর ভোরের কাগজকে বলেন, কারো ইচ্ছেমতো সংগঠন চালাই, বহিষ্কার করি- এটি সত্য নয়। মৎস্যজীবী লীগে কোনো টাকার খেলা চলে না। ঢাকায় কাজ কী- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারাদেশেই আমাদের কাজ। আমরা রাজনীতি করি। ঢাকায় এতগুলো বাজার। হাজার হাজার মৎস্যজীবী রয়েছেন। তাদের মুজিব আদর্শে এক ছাতার নিচে এনে সংগঠিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।
অন্যদিকে কয়েক ভাগে বিভক্ত ওলামা লীগ আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনীতিতে বারবার আঘাত করায় দলের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘বর্তমানে’ ওলামা লীগ বলে আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠন নেই। এরপরও কমিটি করার জন্য জমা দিয়েছে সংগঠনটি। এ ব্যাপারে ওলামা লীগের সভাপতি প্রার্থী মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত কমিটি আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ভাইয়ের কাছে জমা দিয়েছি। আশা করছি, সমমনা সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি পাব। ঠিকানা হিসেবে আপাতত. ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ব্যবহার করছি। পুরানো কার্যালয়ে তৃতীয় তলার একটি কক্ষে আমরা অফিস করেছিলাম। নতুন কার্যালয়ে অফিসের জন্য আবেদন করেছি।
মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদন বন্ধ : ১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গঠিত হয়। ট্রাস্টের নীতিমালায় বলা হয়, বঙ্গবন্ধু বা তার পরিবারের সদস্যদের নাম ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান সামাজিক-সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও দাতব্য কোনো সংগঠন গড়ে তুলতে চাইলে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে অনুমোদন নিতে হবে। ১৯৯৬ সালে প্রথমে বঙ্গবন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের নামে সংগঠন অনুমোদন দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ১৭টি সংগঠনকে অনুমোদন দেয় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। ২০১৫ সালের পর আর কোনো সংগঠন ট্রাস্টের অনুমোদন পায়নি। এখন অনুমতির আবেদন নেয়াও বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাস্ট।
এক লীগে শত লীগ! : আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা ৭০টি সংগঠনের নাম পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, আওয়ামী ছিন্নমূল হকার্স লীগ, আওয়ামী মোটরচালক লীগ, আওয়ামী তরুণ লীগ, আওয়ামী রিকশা মালিক-শ্রমিক ঐক্য লীগ, আওয়ামী যুব হকার্স লীগ, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, আওয়ামী পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা লীগ, আওয়ামী পরিবহন শ্রমিক লীগ, জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় লীগ, জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় সংসদ, আওয়ামী প্রচার লীগ, আওয়ামী সমবায় লীগ, আওয়ামী তৃণমূল লীগ, আওয়ামী নৌকার মাঝি শ্রমিক লীগ, আওয়ামী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী লীগ, আওয়ামী যুব সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু একাডেমি, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, ওলামা লীগ, বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু বাস্তুহারা লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী হকার্স ফেডারেশন, বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আদর্শ পরিষদ, আমরা মুজিব সেনা, আমরা মুজিব হব, চেতনায় মুজিব, মুক্তিযোদ্ধা তরুণ লীগ, নৌকার সমর্থক গোষ্ঠী, দেশীয় চিকিৎসক লীগ, জননেত্রী পরিষদ, দেশরতœ পরিষদ, বঙ্গমাতা পরিষদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ, আমরা নৌকার প্রজন্ম, আওয়ামী শিশু যুবক সাংস্কৃতিক জোট, তৃণমূল লীগ, একুশে আগস্ট ঘাতক নির্মূল কমিটি, সজীব ওয়াজেদ জয় লীগ, বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি লীগ, আওয়ামী শিশু লীগ, আওয়ামী তৃণমূল লীগ, আওয়ামী তরুণ প্রজন্ম লীগ, আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ, বাংলাদেশ জনসেবা লীগ, আওয়ামী শিশু-কিশোর লীগ, অভিভাবক লীগ, উদ্যোক্তা লীগ, আওয়ামী অনলাইন লীগ, ছিন্নমূল মৎস্যজীবী লীগ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লীগ, নৌকার নতুন প্রজন্ম, ডিজিটাল ছাত্রলীগ, ডিজিটাল আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, ডিজিটাল আওয়ামী ওলামা লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী পর্যটন লীগ, ঠিকানা বাংলাদেশ, জনতার প্রত্যাশা, রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমি, বিশ্ব আওয়ামী অনলাইন লীগ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়