কবি বেগম সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আগের সংবাদ

বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের আচরণবিধি মনে করালেন মোমেন

পরের সংবাদ

হুমকির মুখে পরিবেশ : সীতাকুণ্ডে বেড়িবাঁধ কেটে বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মুহাম্মদ ইউসুফ খাঁন, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) থেকে : সীতাকুণ্ডে স›দ্বীপ চ্যানেল থেকে বেড়িবাঁধ কেটে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে মাদার স্টিল শিপইয়ার্ডের স্বত্বাধিকারী মাস্টার মো. আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে। এই বালু উত্তোলনে তাকে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। এতে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর এলাকায় সমুদ্র থেকে প্রায় ৩০০ মিটার লম্বা পাইপলাইনের মাধ্যমে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন।
এসব বালু দিয়ে বেড়িবাঁধের পূর্বপাশে প্রায় অর্ধ একর জায়গাজুড়ে একটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন নদী ভাঙনের আশঙ্কা, অন্যদিকে পুকুর ভরাট করায় ঘটছে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারের শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ কেটে পাইপলাইনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। যেখানে সরকার বেড়িবাঁধ রক্ষায় নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, সেখানে স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির এমন আচরণে আমরা এলাকাবাসী বিচলিত, বিস্মিত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই উপকূলের মানুষ পানির ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হন, তার ওপর বেড়িবাঁধ কেটে সমুদ্রের বালু উত্তোলনের মতো এমন পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞ যেন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’র শামিল। তারা আরো অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে প্রভাবশালীরা নিরীহ কৃষকের ধানিজমি, পুকুর, বসতবাড়ি কৌশলে কিনে, কখনো জোরপূর্বক নিয়ে সমুদ্র থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ৫-৬ ফুট উঁচু করে ভরাট করলেও উপজেলা প্রশাসন বরাবরই থাকে নির্বিকার।
এ বিষয়ে মাদার স্টিল শিপইয়ার্ডের মালিক ও পুকুরের স্বত্বাধিকারী মাস্টার মো. আবুল কাশেমের কাছে বালু উত্তোলন ও পুকুর ভরাটের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান শওকত আলি জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। উত্তোলনের সামগ্রিক যন্ত্রাংশ চেয়ারম্যানের এবং তিনি (চেয়ারম্যান) উত্তোলন করছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, সবকিছু চেয়ারম্যানের দায়িত্বে, যা বলার তার সঙ্গে বলুন।
উল্লেখ্য, এর আগেও অবৈধ বালু উত্তোলন করায় মাস্টার মো. আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তরের। খালাস পেয়ে আবারো একই কাজে লিপ্ত হন তিনি।
চেয়ারম্যান শওকত আলি জাহাঙ্গীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বালু উত্তোলন করেছি কথাটি সত্য নয়। তবে আমার ড্রেজারের ব্যবসা রয়েছে। মূলত আমার ভাই এসবের দেখাশোনা করেন। তবে আমি যতটুকু জানি, বালু উত্তোলনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি আছে। তবে তিনি তা দেখাতে পারেননি। সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাটের মতো পরিবেশ বিপর্যয়কাণ্ডে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। 
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। 
বালু উত্তোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক মফিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে। যথাযথ প্রমাণ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পরিবেশ অধিদপ্তর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়