অমিত শাহের আশ্বাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপের বাঁশি বাজল কাতারে

পরের সংবাদ

মন তো তৈরি আর পোশাক?

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সময় এখন ঘোরাঘুরির। প্রিয়জন, বন্ধুদের সঙ্গে শীত শীত আবহাওয়ায় অনেকেই বেরিয়ে পড়েছেন ঘুরতে। বিশেষ করে শহুরে অনেক মানুষ একটু ছুটি পেলেই ঘুরে আসতে চায় পাহাড়, সমুদ্রে বা রিসোর্টে। ভ্রমণ মন ও শরীর সুস্থ রাখে। তবে অবশ্যই তা হতে হবে যুতসই, আরামের ও ফুর্তির। তাই নজর রাখতে হবে কিছু ব্যাপারে। পরিবেশ উপযোগী হওয়া উচিৎ পরনের পোশাকটিও। স্থানভেদে ঠিক করুন কী পরছেন কোন ট্রিপে।

মডেল : রিবা ও রাব্বি
পোশাক ও ছবি : ইয়াং কে বাই কে ক্র্যাফট
তথ্য সুত্র: ওপরাহ ডেইলি

সাদিকুর রহমান সাকিব

ভ্রমণের মৌসুমে জানা চাই উপযোগী পোশাক তত্ত্ব স্থান, পরিবেশ, আবহাওয়াভেদে কী কী পরিবর্তন আসে পোশাকের। তাই কখন কোথায় কী পোশাক সঙ্গে রাখা উচিত তা জানা ও মানা জরুরি। রবীন্দ্রনাথ থেকে আহমদ ছফা- অনেক লেখক-সাহিত্যিকের লেখায় পাওয়া যায় পরিবেশ ও চরিত্রভেদে ভ্রমণের পোশাকি বিবরণ। অর্থাৎ ভ্রমণে পোশাকের গুরুত্ব সাহিত্যেও প্রমাণিত। প্রমাণিত ফ্যাশনেও। মাথায় রাখা জরুরি ব্যাগপ্যাকে কী নিচ্ছি আর কী নিচ্ছি না; কোন পরিবেশে কেমন পোশাক নাহলেই নয়। যারা এ মৌসুমে ঘোরাঘুরিকে দেশেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান তাদের জন্য এক হিসাব। আর যারা দেশের গন্ডি পেরুবেন তাদের হিসাব আলাদা।

কাপড়ের ধরন
খুব স্বাভাবিকভাবেই আমরা কোথাও ভ্রমণের সময় আলমারির সবচেয়ে ভালো পোশাকগুলো বাছাই করি। কিন্তু সেই পোশাক ভ্রমণে আমাকে আরাম দেবে কি না, সেটা ভুলে যাই। ফলস্বরূপ অনেক সময় জমকালো আর ভারি পোশাক পরে ঠিকমতো ভ্রমণের আনন্দ নেয়া হয় না। তাই ভ্রমণের পোশাক নির্বাচনের সময় মনে রাখবেন, আরামের সঙ্গে আপস নয়। এমন পোশাক নির্বাচন করবেন, যা পরে আরামসে সহজ-সাবলীল থাকা যায়, সহজে নিঃশ্বাস নেওয়া যায়।
ঘোরাঘুরির সময় একটু হইহুল্লোড়, ছোটাছুটি হবে না, তা কি হয়। তাই খেয়াল রাখবেন আপনার পোশাকটি যাতে শরীর থেকে ঘাম শোষণ করে নিতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় সঙ্গে সুতি, লিনেন ফেব্রিকসকে প্রাধান্য দিলে। ঘোরাঘুরির সময়ে একদম আঁটসাঁট পোশাক ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ, এসব কাপড়ে হাঁটাচলায় কষ্ট হয়। তাই ভালো হয় ঢিলেঢালা হালকা পোশাক। তবে অতিরিক্ত ঢিলেঢালা নয়, মানানসই পোশাক পরতে হবে, যা দেবে আরাম আর স্বস্তি।
মানানসই পোশাক
আরামকে প্রাধান্য দিয়ে কোন ধরনের পোশাক নিতে হবে, আশা করছি সে ধারণা পেয়ে গেছেন। এবার আসছি কোন জাতীয় পোশাক সঙ্গী করতে পারেন সেটা নিয়ে। আগেই বলেছি আরামদায়ক পোশাক নিতে হবে। চাইলে যেকোনো পোশাক পরেই ঘুরতে পারেন। তবে এমন কোনো পোশাক নির্বাচন করা উচিত নয়, যেটায় হাঁটাচলায় সমস্যা তৈরি করে। টি-শার্ট, ফতুয়া, কামিজ, কুর্তি, টপস, শার্ট হতে পারে ভ্রমণে সহজ সমাধান। এসব পোশাক পরে পাহাড়ি বা দুর্গম এলাকায় বেড়াতে গেলেও কোনো সমস্যা হবে না চলাফেরায়।

আবহাওয়া
ঘোরাঘুরি করার আগে বিবেচনা করে নিবেন যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার আবহাওয়া কেমন। আবহাওয়াভেদে নিয়ে নিন পোশাক। দেশের ভেতরেও কিন্তু আবহাওয়ার তারতম্য বিবেচনা করতে হবে। এই যেমন ঢাকায় সাধারণত যে তাপমাত্রা, সিলেটে কিন্তু তার চেয়ে অনেক কম তাপমাত্রা। দেশের বাইরে যাওয়ার আগে ইন্টারনেট ঘেঁটে জেনে নিন যেখানে যাবে সেখাকার আবহাওয়া কেমন। ঠান্ডা থাকলে সঙ্গে রাখবেন গরম জামাকাপড়। ঠান্ডার তীব্রতা বেশি থাকলে একটু ভারি পোশাক নেওয়াই ভালো।

পোশাকের রং
পোশাকের ধরনের পাশাপাশি রং নিয়েও ভাবতে হবে যখন বাক্স-পেটরা গোছাবেন। ভারি, রংচঙা, জবরজং কাপড় না নেওয়াই ভালো। বাদামি, কালো ও খাকি রঙের প্যান্ট, পালাজো, স্কার্ট সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না। কারণ, এ রংগুলো অন্য প্রায় সব রঙের টি-শার্ট বা শার্টের সঙ্গে মানিয়ে যায়। ওড়না বা স্কার্ফ পরলে সাদা, কালো, মেরুন অথবা নীল বেছে নিতে পারেন। কারণ এ রঙের স্কার্ফগুলো খুব ভালোভাবে মানিয়ে যায় অন্য রঙের সঙ্গে। বেড়াতে গেলে ছবি তোলা হবেই। তাই কমলা, লাল, নীল, মেরুন ও সবুজ এ রঙের পোশাক সঙ্গে রাখতে পারেন। এগুলোয় ছবি ভালো আসে।

অন্যান্য জায়গায়
সমুদ্র কিংবা পাহাড় ছাড়া এ সময় সমতলেও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন অনেকে। সমতলে ভ্রমণে যাওয়ার ঝক্কি কিছুটা কম থাকে। তাই পোশাক নিয়েও খুব একটা সমস্যা হয় না। যেহেতু হালকা ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে, তাই আবহাওয়া উপযোগী পোশাক সঙ্গে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। মেয়েদের জন্য ফুলস্লিভ টপস, টিউনিক, কুর্তি, কাফতান, পঞ্চ, হালকা হুডি জ্যাকেটে আরাম এবং স্টাইল দুটোই মিলবে। এই পোশাকগুলো বেশ ট্রেন্ডি ও আধুনিক। মানিয়ে যাবে ভ্রমণের পরিবেশের সঙ্গে। অন্যদিকে ছেলেদের জন্য এ সময় পছন্দ ও শীতের তারতম্য বুঝে বেছে নিতে হবে পোশাক। স্টাইলিশ লুক পেতে স্লিম ফিট ডেনিম জিনস রাখা যেতে পারে। এর সঙ্গে ফুলহাতা টি–শার্ট, হালকা ফেব্রিকের কোট বা সোয়েটার, ডেনিম শার্ট, ক্ল্যাসিক ট্রেঞ্চ কোট, পুলওভার সোয়েটার, ফ্ল্যানেল শার্ট কিংবা একরঙা হুডি বেশ মানাবে।
এ ছাড়া সোয়েড প্যান্টের সঙ্গে পাফার জ্যাকেট, স্ট্রেইট লেগ জিনসের সঙ্গে টার্টলেনেক সোয়েটার, ফুলহাতা টি–শার্টের ওপর ডেনিম শার্ট স্টাইলিশ লুক দিবে। তবে সকাল, দুপুর ও রাতের আবহাওয়া উপযোগী পোশাক নির্বাচন করলে ভ্রমণ হবে আরামের।

বাদ যাবে না অনুষঙ্গ
বেড়াতে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হলো ব্যাগ। এ ছাড়া ভ্রমণ অনুষঙ্গ হিসেবে স্টাইলিশ স্কার্ফ, কমফোর্টার হতে পারে এই সময়ের সঙ্গী। বাহারি রংয়ের স্কার্ফ বা কমফোর্টার সঙ্গে রাখলে সেগুলো ব্যান্ডানা বা ইচ্ছেমতো হেডগিয়ার করে পরা যাবে। শীত বেশি হলে অবশ্যই গ্লাভস, টুপি সঙ্গে রাখা উচিত। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ও আবহাওয়া উপযোগী জুতা বেছে নেওয়া জরুরি। পাহাড় ও সমুদ্রের ক্ষেত্রে জুতা হবে ভিন্ন। সমুদ্রসৈকতে ফ্লিপফ্লপের বিকল্প নেই।
তবে সমুদ্র, পাহাড় বা সমতল, দেশ বা বিদেশ—গন্তব্য যেটাই হোক, সেখানকার আবহওয়া, তাপমাত্রা, ইত্যাদি জেনে তবেই ব্যাগ গোছানো উচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়