অমিত শাহের আশ্বাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপের বাঁশি বাজল কাতারে

পরের সংবাদ

বাবার স্মরণে বাড়ি রাঙালেন ৩ ছেলে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দ রিয়াজ আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে : জেলা শহরের খুব কাছাকাছি সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের উলচাপাড়া গ্রাম। এই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ারুল ইসলাম (দারু মিয়া) ছিলেন ফুটবলপ্রেমী। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের ছিলেন অন্ধ ভক্ত। তিনি মারা গেছেন ২০১৯ সালে। তাই এই বছর ফুটবল বিশ্বকাপে স্মৃতি ধরে রাখতে আর্জেন্টাইন দলের পতাকার রংয়ে বসতঘর রাঙিয়েছেন তার ৩ ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী শেখ আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে দারু মিয়া ছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল দলের

অন্ধ ভক্ত। আর্জেন্টাইন ফুটবল দলের প্রতি তার এই ভালোবাসার কথা এলাকার সবাই জানেন। ৯ ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ফুটবলপ্রেমী এই মুক্তিযোদ্ধা পৃথিবী ছেড়ে চলে যান ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। দরজায় কড়া নাড়ছে ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর। ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ পরিবারের সবাইকে নিয়ে উপভোগ করেছিলেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ারুল ইসলাম। কিন্তু এবছর বিশ্বকাপে পিতার শূন্যতা অনুভব করছেন তার সন্তানরা। বিশ্বকাপ উপলক্ষে পিতার প্রতি ভালোবাসায় তার পছন্দের দল আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে নিজের বসতঘর রং করেছেন ছোট তিন ছেলে। প্র?য়াত আনোয়ারুল ইসলাম ৯ ছেলেকেই সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। ৯ ছেলে এখনো একসঙ্গেই আছেন। এর মধ্যে ৬ ছেলে জীবিকার তাগিদে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত আছেন। বাড়িতে আছেন ছোট তিন ছেলে শেখ তাজিম উদ্দিন আহমেদ (২৮), শেখ তারেক আহমেদ (২৬) ও শেখ রোহান উদ্দিন (২৩)। ছোট তিন ছেলে বাড়ি রাঙিয়েছেন আর্জেন্টিনার পতাকার রংয়ে।
প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ারুল ইসলামের ৮ম ছেলে শেখ তারেক আহমেদ বলেন, ‘আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি আমাদের অগাধ ভালোবাসা। এই ভালোবাসা সেই ছোটবেলা থেকে। যখন আমরা ছোট ছিলাম, আব্বা রাত ৩টায় আমাদের পরিবারের সবাইকে আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলা টিভিতে দেখতে ঘুম থেকে ডেকে তুলতেন। আমার আব্বা ছিলেন আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত। তখন থেকেই দলটির প্রতি আমাদের ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল। এখন আমার আব্বা নেই, আব্বার ভালোবাসা এবং আব্বার প্রতি সম্মান জানিয়ে আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে বসতঘর রং করেছি।’
তার ৭ম ছেলে শেখ তাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের বসতঘরটিতে শয়নকক্ষ রয়েছে ৫টি। যার পরিমাণ ১০৮০ স্কয়ার ফিট হবে। ৮ জন মিস্ত্রীসহ আমরা তিন ভাই এই রংয়ের কাজ করেছি। ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ওয়াসিম বলেন, সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম তারা ঘর রং করেছেন। তাদের বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাজারের সেক্রেটারি। তিনিও ছিলেন আর্জেন্টিনার বড় ভক্ত। তার ৯ ছেলেও আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের ভক্ত, আমিও এই দলের সাপোর্টার। খেলা আসলে আমরা অনেক উল্লাসে মেতে উঠি। তাদের ঘর রং করার বিষয়টি এলাকায় আলোড়ন তৈরি করেছে।’
স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড মেম্বার হুমায়ূন কবির বলেন, ‘তারা ঘরটি আর্জেন্টিনার পতাকার রং করায় খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। প্রয়াত আনোয়ারুল ইসলাম আর্জেন্টিনার ভক্ত ছিলেন। আমিও এই দলের ভক্ত। আশা করি এবারের বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার ঘরে যাবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়