অমিত শাহের আশ্বাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপের বাঁশি বাজল কাতারে

পরের সংবাদ

আলো ছড়াবেন উদীয়মান একঝাঁক তারকা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর বিশ্বকাপ ফুটবল। সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা তাকিয়ে থাকে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত এই প্রতিযোগিতার দিকে। বিশ্বকাপের মঞ্চে চোখ শুধু মেসি, নেইমার, রোনালদো কিংবা বেনজেমার মতো তারকার দিকে থাকে না। চোখ থাকে তরুণদের ওপরও। বিশ্বকাপের মঞ্চে কে কখন আড়াল ভেঙে বেরিয়ে আসবে, দ্যুতিময় পারফরম্যান্সের পসরা মেলে দোলা দেবে ফুটবলপ্রেমীদের মনে, তা কে জানে! কিলিয়ান এমবাপ্পে যেমন রাশিয়া বিশ্বকাপ মাতিয়েছিলেন। জিতে নিয়েছিলেন গোল্ডেন বল পুরস্কার। এবার ক্লাব ফুটবলে আলো ছড়ানো তরুণদের অনেকেই শোনাতে পারেন নতুনের আগমনি গান, হয়ে উঠতে পারেন ম্যাচের নির্ণায়ক। কাতার বিশ্বকাপের উদীয়মান তারকা হয়ে উঠতে পারেন দারউইন নুনেস, রুবেন দিয়াস, আনসু ফাতি, পেদ্রি, রদ্রিগো, তাকেফুসা কুবো, মুসিয়ালার মতো খেলোয়াড়রা। তাদের নিয়েই আজকের এ আয়োজন।
জামাল মুসিয়ালা : জার্মানিতে জন্ম নেয়া এ তরুণের বেড়ে ওঠা মূলত ইংল্যান্ডে। ইংল্যান্ডে খেলতে পারতেন তিনি। বয়সভিত্তিক দলে ইংল্যান্ডেই খেলেছেন। শেষ পর্যন্ত জার্মানির জাতীয় দলের জার্সিই গায়ে তুলেছেন ১৯ বছর বয়সি এ তরুণ। জার্মানির সাফল্য-ব্যর্থতা অনেকটাই তার ওপর নির্ভর করছে। চলতি মৌসুমে লিগে ১০ গোল করে ও আট গোলে সহায়তা দিয়ে জাত চিনিয়েছেন। ফুটবলীয় দক্ষতা দিয়ে আস্থা অর্জন কোচ হান্স ফ্লিকের।
তাকেফুসা কুবো : কুবো জাপানের মেসি নামে পরিচিত। বার্সেলোনার যুব দলে বেড়ে ওঠা কুবো ২০১৯ সালে যোগ দেন বার্সেলোনার চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে। যদিও দলটির হয়ে কোনো ম্যাচ খেলতে পারেননি। ধারে অনেক ক্লাব ঘুরে বর্তমান ঠিকানা রিয়াল সোসিয়েদাদ। জাপানের বয়সভিত্তিক দলগুলোতে খেলার পর সিনিয়র দলে অভিষেক ২০১৯ সালে। ২১ বছর বয়সি এই তরুণের স্কিল, গতি এবং ড্রিবলিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে সামান্যই। এবারের বিশ্বকাপে জাপান পড়েছে শক্ত গ্রুপে। তবে শক্তিশালীদের বিপক্ষে জ¦লে উঠতে পারলে কুবোও হয়ে উঠতে পারেন বিশ্বকাপের উদীয়মানদের একজন।
জুড বেলিংহ্যাম : ফরোয়ার্ড লাইনে হ্যারি কেইন, ফোডেনের মতো খেলোয়াড় আছে ইংল্যান্ডের। তাদের মিডফিল্ডের ভার জুডে বেলিংহ্যামের ওপর। বয়স মাত্র ১৯ বছর। কিন্তু পরিণত তিনি। বড় বড় ক্লাব তার পেছনে পড়েছে। মিডফিল্ডে খেলে চলতি মৌসুমে ২২ ম্যাচে ৯ গোল আর ৩ সহায়তা তো সহজ কথা নয়। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ইতোমধ্যে ৯১ ম্যাচ খেলে ১১ গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন ১৯টি। ২০২০ সালে ইংল্যান্ডের জার্সিতে অভিষিক্ত হওয়া এই তরুণ কাতার বিশ্বকাপে স্বাভাবিকভাবে থাকবেন কোচ গ্যারেথ সাউথ গেটের পরিকল্পনায়।
রদ্রিগো : রদ্রিগো কেন ব্রাজিল দলে এই প্রশ্ন উঠছে না। কারণ অল্প বয়সেই ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে মানিয়ে নিতে শিখেছেন তিনি। বৈচিত্র্যপূর্ণ ফরোয়ার্ড রদ্রিগো। ফরোয়ার্ডের সব পজিশনেই খেলতে পারেন। রিয়াল মাদ্রিদে শুরুর একাদশে জায়গা পাকা করলেও ব্রাজিল দলে ওই নিশ্চয়তা তিনি পাননি। তবে সুযোগ পেলে সেরাটা খেলে গোল্ডেন বয় পুরস্কার জিতে নিতে পারেন।
আনসু ফাতি : সবচেয়ে কম বয়সি ফুটবলার হিসেবে ইতোমধ্যে রেকর্ড বইয়ের প্রায় ডজনখানেক পাতায় নিজের নাম তুলেছেন ফাতি। লা লিগায় বার্সেলোনার সবচেয়ে কম বয়সি গোলদাতা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে কম বয়সি গোলদাতার মুকুট তার মাথায়। ২০২০ সালে স্পেন দলে অভিষেকের পর খুব যে আলো ছড়িয়েছেন, তা নয়। চার ম্যাচে গোল পেয়েছেন একটি। তবে ১৯ বছর বয়সি এই তরুণ হতে পারেন স্পেন কোচ লুইস এনরিকের কার্যকরী অস্ত্র। দুর্ভাবনা শুধু তার ফিটনেস নিয়ে। চোট জর্জর শরীর নিয়ে প্রায়ই মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাকে। বিশ্বকাপের সময় চোট থাবা না বসালে গতিময় ফুটবলের পসরা মেলে, প্রতিপক্ষের রক্ষণ এলোমেলো করে ফাতিও হয়ে উঠতে পারেন বড় মঞ্চের নায়ক।
এনজো ফার্নান্দেজ : রিভার প্লেটে ৪০ লিগ ম্যাচে ১০ গোল করে বেনফিকায় নাম লিখিয়েছেন এনজো ফার্নান্দেজ। সব মিলিয়ে বেনফিকায় ২৪ ম্যাচে তিন গোল করেছেন। কিন্তু এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের মাঠে প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। যে কারণে ২১ বছরেই আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ দলে ডাক পেয়েছেন। নিয়মিত খেললেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
দারউইন নুনেস : দলের আক্রমণভাগে আছে লুইস সুয়ারেসের মতো অভিজ্ঞ গোলমেশিন। কিন্তু উরুগুয়ে গোলের জন্য তাকিয়ে থাকবে নুনেসের দিকেও। ২৩ বছর বয়সি এই তরুণ এরই মধ্যে লিভারপুলের জার্সিতে সামর্র্থ্যরে ছাপ রেখে চলেছেন। এর আগে আলো ছড়িয়েছেন বেনফিকার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৮৫ ম্যাচে ৪৮ গোল করে। জাতীয় দলের জার্সির ভার তার কাঁধে উঠেছে ২০১৯ সালে।
ভিনিসিয়াস জুনিয়র : রিয়াল মাদ্রিদের সিনিয়র টিমের আক্রমণভাগের নিয়মিত সদস্য ভিনিসিয়াস। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়ে শুরুর মৌসুমটা সাদামাটা হওয়ার পর দিন যত গড়াচ্ছে, ২১ বছর বয়সি এই ব্রাজিলিয়ান তত আলো ঝলমলে পারফরম্যান্স উপহার দিচ্ছেন। ২০১৯ সালে ব্রাজিলের হয়ে অভিষেকের পর খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি ভিনিসিয়ুসের। তা না হওয়ার কারণগুলোর একটি ছিল চোট। তবে ২০০২ সালের পর ফের বিশ্বকাপের স্বাদ পেতে মুখিয়ে থাকা তিতের ব্রাজিল শক্তপোক্ত ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এই গতিময় ফরোয়ার্ডের দিকে তাকিয়ে থাকবে বড় আশা নিয়েই। সে আশা পূরণ করতে পারলে তিনি হয়ে উঠবেন আগামীর তারকা।
: মোহাম্মদ আল মুকিত

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়