অমিত শাহের আশ্বাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপের বাঁশি বাজল কাতারে

পরের সংবাদ

আলী যাকের স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অনন্য উদ্যোগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গত তিন বছরে প্রয়াত হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের তিনজন প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি। তারা হলেন- কবি স্থপতি রবিউল হুসাইন, মুক্তিযোদ্ধা সমাজকর্মী জিয়াউদ্দিন তারিক আলী এবং কণ্ঠযোদ্ধা, নাট্যজন ও বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তাদের স্মৃতি বহমান রাখতে ‘রবিউল হুসাইন স্মারক বক্তৃতা’, ‘জিয়াউদ্দিন তারিক আলী গণহত্যা অধ্যয়ন ফেলোশিপ’ এবং ‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ’ শিরোনামে তিনটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যৌথভাবে প্রতি বছর আয়োজন করবে ‘রবিউল হুসাইন স্মারক বক্তৃতা’। ইতোমধ্যে গত ৮ নভেম্বর ২০২২ ‘প্রথম

রবিউল হুসাইন স্মারক বক্তৃতা’ দেন মার্কিন জাদুঘর বিশারদ বারবারা এফ. চার্লস। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনসায়েন্স যৌথভাবে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন তারিক আলী স্মরণে গণহত্যা, ন্যায়বিচার ও স্মৃতি- সংরক্ষণ অধ্যয়নবিষয়ক ফেলোশিপ কর্মসূচি চালু করেছে।
একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা, বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্যজন এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি প্রয়াত আলী যাকেরের স্মৃতি বহমান রাখতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ’ গ্রহণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে ঢাকা মহানগরীর ১০টি বেসরকারি পাঠাগার। এই উদ্যোগে সহায়তা করছে মঙ্গলদ্বীপ ফাউন্ডেশন। ঢাকা মহানগর ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি জেলার ৫০টি বেসরকারি পাঠাগারকে সম্পৃক্ত করে পরিচালিত হবে এই উদ্যোগ। নির্বাচিত গ্রন্থগুলো হলো- স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল রচিত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, কলেজ পর্যায়ে আলী যাকেরের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘সেই অরুণোদয় থেকে’ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক রচিত ‘একাত্তর : করতলে ছিন্নমাথা’। বই-পাঠান্তে প্রত্যেকে ওই বই সম্পর্কে মূল্যায়ন লিখে জমা দেবে। জাতীয়ভাবে গঠিত বিচারকমণ্ডলী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি বিভাগে সেরা ১০ পাঠক নির্বাচন করবে এবং তাদের পুরস্কৃত করা হবে। এছাড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক পাঠককে সনদ প্রদান করা হবে। গতকাল শনিবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সেমিনার হলে ‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ’ এর উদ্বোধন এবং গ্রন্থাগারগুলোকে বই প্রদান-অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কর্মসূচিভুক্ত প্রত্যেক গ্রন্থাগারের প্রতিনিধির হাতে নির্বাচিত বইগুলো তুলে দেয়া হয়। এ সময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর, ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি মফিদুল হক, আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ এর সমন্বয়ক মো. শাহ নেওয়াজ ও আলী যাকেরের পরিবারের পক্ষে ছেলে ইরেশ যাকের এবং কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন পাঠাগারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, এই উদ্যোগকে আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। পাঠাগার এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আমরা একে অন্যের অংশীদার।
ডা. সারওয়ার আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে অতীতকে স্মরণ করা, নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পৌঁছে দেয়া। বই তিনটির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা ঘটনা জানা যাবে। মফিদুল হক বলেন, আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠের উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা দিক উন্মোচিত হবে বলে।
ইরেশ যাকের বলেন, বর্তমান প্রজন্মের যারা পাঠাগার আন্দোলন ও বই পড়ে তারাই এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব সম্পর্কে আরো জানতে পারবে। মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা আলী যাকেরকে নতুন প্রজন্মের পাঠকের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়া যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়