রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য : শিশুবক্তা রফিকুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

ঢাবি সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি : বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে স্বচ্ছতা থাকতে হবে

পরের সংবাদ

বাপা ফুডপ্রোতে পরিকল্পনামন্ত্রী : বর্তমানে কোনো মানুষ না খেয়ে থাকে না

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বর্তমানে কোনো মানুষ না খেয়ে থাকে না বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, খাবার আমাদের রাজনীতিতেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চালের দাম যদি বাড়ে, আমাদের হাত-পা কাঁপে। যারা খেতে পেত না, তাদের নিয়ে আগে গুলিস্তানে ভুখা মিছিল হতো। বর্তমানে কোনো মানুষ না খেয়ে থাকে না।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস এসোসিয়েশন (বাপা) ফুডপ্রোর ৮ম আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে এম এ মান্নান বলেন, খাবার দিয়ে শুরু, খাবারেই জীবন শেষ। জীবনের প্রথম লগ্নে মায়ের দুধ দিয়ে শুরু এবং শেষে পানি খেয়ে বিদায়। এমন একটি মৌলিক বিষয় নিয়ে আমার বেশি বলার নেই। আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে খাবারের একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান সরকারের সময়ে গত ১৪ বছরে খাদ্য, বিদ্যুৎ ও সড়কে একটা বিরাট পরিবর্তন এসেছে। আপনারা ধন্যবাদ দিলে আমরা খুশি, না দিলে আমরা আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারব। তো সেই খাদ্য আপনারা পৌঁছে দিচ্ছেন, এটা দারুণ ব্যাপার। আগে দেশ দখল করা হতো। এখন নিয়ম হচ্ছে, বাজার দখল করতে হবে। করতে পারলেই কেল্লাফতে।
মন্ত্রী বলেন, শুধু খাবার দিলেই হবে না, সেটি স্বাস্থ্যকর হতে হবে। শুধু পরিবেশন নয়, বিপণন নয়, খাদ্যের মান ঠিক রাখায় আমাদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। এই কাজ করায় বাপা এগিয়ে এসেছে। তারা আরো বেশি ভূমিকা রাখবে আমি আশা করি। গবেষণায় আরো এগিয়ে আসুন। আমাদের আরো বেশি উৎপাদন করতে হবে, আরো বেশি আয় করতে হবে।
আয়োজক কমিটির সদস্য প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী বলেন, বাপার মাধ্যমে আমরা এক বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করছি। আগামী দিনে এটি আরো ছাড়িয়ে যাবে। আমরা ইতোমধ্যে ১৪৫টির বেশি দেশে ছড়িয়ে গেছি। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে আমরা খুবই ভালো করছি, আগামী দিনে আরো প্রসার হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাংলাদেশের পণ্য পৌঁছে যাবে আগামী দিনে। স¤প্রতি আমরা দুবাই মেলা করেছি, এর আগে আমরা ফ্রান্সে মেলা করছি।
বাপার সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক এস এম জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, অ্যাগ্রো খাত ইতোমধ্যে এক বিলিয়ন ডলারের মার্কেট পার করেছে। দেশীয় বাজারেও ভূমিকা রেখেছে। এই খাতে আমরা যত বেশি উৎপাদন করতে পারব, গুণগত মান বৃদ্ধি হবে, তত রপ্তানি বাড়বে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাপার সাবেক সভাপতি এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, এবারের আয়োজক কমিটির সদস্য মো. শহীদুল ইসলাম। পরে মন্ত্রী ও আয়োজক কমিটির সদস্যরা প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন স্টলের স্বত্বাধিকারী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। মহামারি করোনা ভাইরাসের সংকট কাটিয়ে অষ্টমবারের মতো শুরু হলো তিন দিনব্যাপী বাপা ফুডপ্রো এক্সপো। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এই এক্সপোর উদ্বোধন করেন।
রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হওয়া এ এক্সপো চলবে আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য এ এক্সপো উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনী ছাড়াও এতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে একটি কারিগরি সেশন হয়। এ খাতে যুক্ত দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের বিজনেস ম্যাচিং সেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের রকমারি খাদ্যপণ্য প্রদর্শন করে। এছাড়া ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, চীন ও জাপানসহ নানান দেশের নামিদামি কোম্পানি তাদের ফুড প্রসেসিং মেশিন প্রদর্শন করছেন। এসব মেশিনারিজ দেখে মুগ্ধ দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তারা।
মেলায় ১৭টি দেশের প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। ২০০ স্টলের মধ্যে বিদেশি অংশগ্রহণকারী স্টল প্রায় ৯০ শতাংশ। এছাড়া দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএলসহ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রায় সব কোম্পানির স্টল রয়েছে বাপা ফুডপ্রো এক্সপোতে।
এ আয়োজন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প আরো গতিশীল হবে। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশের প্রান্তিক কৃষির উপকার হবে, উপকৃত হবেন কৃষকরাও। বাড়বে রপ্তানি। একইসঙ্গে ভোক্তারা সাশ্রয়মূল্যে পণ্য কিনতে পারবেন। মেলায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি, যারা সরাসরি ফুড প্রসেসিং সেক্টরে যুক্ত তারা অংশ নিয়েছেন। এর আগে সাতবার এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব মেলার সাফল্য, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ও দর্শনার্থীদের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ায় এবারের মেলার সাফল্য নিয়ে আশাবাদী আয়োজকরা। যদিও মাঝে করোনার কারণে কয়েক বছর মেলা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
বাপার জন্মলগ্ন থেকেই ফুড প্রসেসিং সেক্টরের উন্নয়নের স্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাপার মূল লক্ষ্যই হলো এ সেক্টরের ক্রমবর্ধমান বিকাশ নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া। বিশ্বায়নের এ যুগে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত ছাড়া যে কোনো খাতে উন্নয়নের পথ রুদ্ধ। কাজেই বাংলাদেশ যাতে কোনোভাবেই এ খাতে পিছিয়ে না যায়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট বাপা। ১৩ সদস্য নিয়ে ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করে বাপা।
বর্তমানে বাপার সদস্য সংখ্যা তিন শতাধিক। যারা প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিশ্বের ১৪৪ দেশে রপ্তানি করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়