রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য : শিশুবক্তা রফিকুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

ঢাবি সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি : বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে স্বচ্ছতা থাকতে হবে

পরের সংবাদ

নতুন দামেও বাজারে সংকট তেল-চিনির

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গত কয়েকদিন ধরে বাজারে ঘাটতির মধ্যে দাম বেড়েছে তেল ও চিনির। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১২ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম কেজিতে বাড়ানো হয়েছে ১৩ টাকা। যা গত বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। তবে কার্যকর হওয়া বাড়তি দামেও বাজারে ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না তেল-চিনি। নতুন দামের চেয়েও বাড়তি দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
খোলাবাজারে নির্ধারিত দাম থেকে ১০ টাকা বেশি এবং পাইকারি বাজারে ৩ থেকে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে তেল ও চিনি। পাইকারিতে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৮ হচ্ছে ১৯০ টাকায় এবং খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০০ টাকায়। অন্যদিকে বোতলজাত সয়াবিন তেল গায়ে থাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ২ লিটার ৩৫৫ টাকা এবং ৫ লিটার ৮৮০ টাকায় আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। নতুন দামের তেল এখনো বাজারে আসেনি। তবে দুয়েকদিনের মধ্যে বোতলজাত তেল বাজারে চলে আসবে বলেও জানান বিক্রেতারা।
রাজধানীর পাইকারি বাজারগুলোতে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে। তবে খুচরায় অনেকে ১২০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করছে। যাত্রাবাড়ীর দোকানি রাজিব বলেন, আমরা খোলা তেল ১৯৫ টাকা লিটার এবং খোলা চিনি ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। বোতলজাত তেল এবং প্যাকেটজাত চিনি গায়ের দামে বিক্রি করছি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন গত বুধবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশন ওইদিনই মন্ত্রণালয়কে জানায়, চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে দাম বাড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে দুটি সংগঠনের নেতারা। বাজারে দেখা দিয়েছে চিনির সংকটও। নতুন দাম অনুযায়ী, ৫০ কেজির চিনির বস্তার দাম হয়েছে ৫ হাজার ১০০ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ১০২ টাকা। তবে বাজারে নির্ধারিত দামে কোথাও তেল-চিনি বিক্রি করতে দেখা যায়নি। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকানে তেল পাওয়া যায়নি।
বাজারে শুধু তেল কিংবা চিনি নয়, বেড়েছে চাল, ডাল, আটা, ময়দা ও ছোলার দামও। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। যেসব পণ্যের দাম কমেছে সেগুলো দুই-তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছিল। যেসব পণ্যের দাম কমেছে সেগুলো বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এছাড়া বাজারে শীতকালীন সবজি পর্যাপ্ত এসেছে। দামও গত দুই সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম। তবে কেজিপ্রতি ৫০ টাকার কমে মিলছে না কোনো সবজি। যা আগে ৬০ থেকে ৮০ টাকা ছিল।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, সপ্তাখানেক আগে এর দাম ছিল ৬০ টাকা, আমদানি পেঁয়াজের কেজি মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলো গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। দেশি রসুন কেজিতে ১০ টাকা কমে মানভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ২২০ থেকে ২৪০ টাকা।
এদিকে বাজারে গতকাল ব্রয়লার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল ১৮০ থেকে ১৯০ বা তারও বেশি দামে। সেই হিসাবে এই মাংসের দাম কমেছে ১০ টাকা। অন্যদিকে, বাজারে কমতে শুরু করেছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ টাকা।
বাজারে মোটা চাল কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। প্রতি কেজি সাধারণ মানের পাইজাম বা মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২ থেকে ৫৮ টাকা। আর মাঝারি মানের চাল কিনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ও ভালো মানের সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার ওপরে। এছাড়া প্যাকেট আটায় ৪ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৭০ টাকায় ঠেকেছে। প্যাকেট ময়দায় দাম ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৮০ টাকা হয়েছে। খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকায়, আর ময়দা ৭৫ টাকায়। এছাড়া গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বেড়ে চলেছে প্রায় সব ধরনের ডালের দাম।
নতুন করে বাড়ছে ছোলার দামও। খোলা বাজারে মসুর ডালের কেজি মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা এবং ছোলার প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শীতকালীন সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। ১২০ টাকার শিম কমে এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। গাজর ও পাকা টমেটোর কেজি ১০০ টাকা, পটল, করলা, বেগুন, লতির কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়