রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য : শিশুবক্তা রফিকুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

ঢাবি সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি : বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে স্বচ্ছতা থাকতে হবে

পরের সংবাদ

ইউপি চেয়ারম্যান ফোরামের ক্ষোভ : মান্দায় বাড়তি দামে সার বিক্রি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি : মান্দায় সার সংকট দেখিয়ে অধিক মূল্যে সার বিক্রিতে উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান ফোরামের ক্ষোভ প্রকাশ। রবি মৌসুমের সরিষা ফসলের জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার পাচ্ছে না বেশির ভাগ কৃষক। বিসিআইসি অনুমোদিত পরিবেশকদের কাছে সার না পেয়ে বাধ্য হয়ে খুচরা দোকান থেকে বেশি দামে সার ক্রয় করছেন কৃষকরা। এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সারের বাড়তি মূল্য নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই। চোখে পড়েনি কৃষি অফিসের জোরালো কোনো পদক্ষেপ ও মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং। পয়েন্ট থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার না পেয়ে, ন্যায্যমূল্যে সার পেতে কৃষকরা ছুটে যাচ্ছেন চেয়ারম্যানদের কাছে। ডিলার পয়েন্টে কৃষকদের সারের চাহিদার কথা জানালে তারা বলেন, সার চাহিদা মতো আসছে না, সারের সংকট, গোডাউনে সার নামেনি, এমন নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন ডিলার। নিরুপায় হয়ে কৃষকরা খুচরা দোকান থেকে উচ্চমূল্যে সার ক্রয় করছেন। তবে খোলা বাজারে বাড়তি দামে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার মিলছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ডিলার পয়েন্টে সার না পেয়ে খুচরা দোকান থেকে ইউরিয়া সাড়ে ১২শ, ডিএপি ১১শ ও পটাশ ১২শ টাকা হারে ক্রয় করছেন।
মান্দা উপজেলা চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি ও ভারশোঁ ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন জানান, পরিবেশকদের সার কারসাজির কারণে কৃষকরা বাজার থেকে বেশি দামে সার ক্রয় করছেন। সার পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে শোনা গেলেও পরিবেশকদের কাছে কৃষক সার পাচ্ছেন না। ভারশোঁ ইউনিয়নের পরিবেশক সুনিল পন্ডিত তার পছন্দের লোকজনকে সার দিচ্ছেন। হাত বদলে সে সার আবার খুচরা দোকানে চলে যাচ্ছে। এভাবেই সারের দাম বাড়ছে। পরিবেশকদের কারসাজিতে সাধারণ কৃষকরা জিম্মি, পাচ্ছে না সার। সারের জন্য প্রতিদিন শত শত কৃষক আমার কাছে ধরণা দিচ্ছেন।
আমি নিরুপায় হয়ে ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনিল কুমারকে জানালে তিনি বলেন, আমার এসব দায়িত্ব নয়। ডিলার পয়েন্টে কয় বস্তা সার বিক্রি হলো আর কয় বস্তা মজুত আছে শুধু এই রিপোর্ট দেয়া আমার কাজ, বলে দায় এড়িয়ে যান তিনি।
চেয়ারম্যান আরো জানান, সারের কালোবাজারিতে অতিষ্ঠ কৃষক। আমার ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ আলু ও সরিষার জন্য সার পাচ্ছেন না। তবে বেশি দামে সার ক্রয় করলে যত খুশি নিতে পারবেন। ডিলারদের যোগসাজশে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সারের এমন হাহাকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক মনিটরিং ও দেখভালের অভাবে সার কিনতে বিপাকে পড়ছেন কৃষক। ডিলারদের ওপর ও কৃষি কর্মকর্তার সঠিক নজরদারি না থাকায় সারের এমন হাহাকার। এ নিয়ে চেয়ারম্যান সুমন জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের কাছে অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিকসহ সংশিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি। এভাবে চললে কৃষকের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে। ফসল ফলাতে ব্যর্থ হবে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি উৎপাদন খরচ বাড়ছে। তিনি আরো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি নিজেও কৃষক। আমি নিজে আমার জমির জন্য সার পায়নি। এটা খুবই দুঃখজনক।
চেয়ারম্যান ফোরামের কোষাধক্ষ্য ও ৭নং প্রসাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন জানান, বিসিআইসির অনুমোদিত পরিবেশকদের কাছ থেকে কৃষকরা সার পাচ্ছেন না। অথচ বেশি দামে সার মিলছে খুচরা দোকানে। ডিলার পয়েন্ট থেকে সারগুলো রাতারাতি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে খুচরা দোকানদারদের কাছে। ডিলারের কাছে ১ বিঘা জমিতে ফসল চাষের জন্য একজন কৃষক যে পরিমাণ সার পাচ্ছেন, ১০ বিঘা জমিতে ফসল চাষের জন্য কৃষক একই পরিমাণ সার পাচ্ছেন। এতে ১০ বিঘা জমির মালিকরা পড়ছেন বিপাকে। সার কালো বাজারে বিক্রিসহ নানামুখী সমস্যার কারণে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তাদের দোষারোপ করেন।
চেয়ারম্যান ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও ১৪নং বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম গোলাম আজম জানান, সার সংকটের বিষয়ে উপজেলা মিটিংয়ে আমরা ইউএনওকে জানিয়েছি। সার সংকট ও বাড়তি দামের বিষয়ে মিটিংয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়