অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। তার অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক। নতুন চরিত্রে নতুনভাবে আসতে চলেছেন এ অভিনেতা। শহরের নতুন তদন্তকারী অফিসার হিসেবে দেখা যাবে তাকে। রাজদীপ ঘোষের আগামী ছবিতে এমনভাবেই ধরা দেবেন তিনি। জ্যোতিষের সঙ্গে থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হবে এই ছবি। ছবি থেকে রাজনীতি- সব নিয়েই ভারতীয় গণমাধ্যমে দিলেন আড্ডা। তারই চুম্বকাংশ মেলার পাঠকদের জন্য

’

ঋত্বিক চক্রবর্তী জ্যোতিষে বিশ্বাস করেন?
ঋত্বিক : না না, একদম নয়।

এই ছবিতে জ্যোতিষের সঙ্গে আর থ্রিলারের মেলবন্ধন কীভাবে হচ্ছে?

ঋত্বিক : জ্যোতিষে বিশ্বাস করি না ঠিকই। কিন্তু একটা প্রাচীনবিদ্যা তো এটা, আর এই নিয়ে অনেকে অসৎভাবে ব্যবসাও করে। তেমনই কিছু জ্যোতিষী খুন হয় শহরে। সেখান থেকেই এগোয় গল্প। আমি সেই খুনের কিনারা করতে আসি।

নতুন প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন। মনে হয় কি প্রতিষ্ঠিত সংস্থায় কাজ করলে অনেক নিরাপদ হতো?

ঋত্বিক : যে কোনো প্রতিষ্ঠিত সংস্থার যে অভিজ্ঞতা, ইন্ডাস্ট্রিতে তা সত্যিই অনেকটা সাহায্য করে। নিরাপদ নিশ্চয়ই তা। তবে এই ইন্ডাস্ট্রির অংশ হিসেবে অবশ্যই চাইব নতুন প্রযোজকরা উঠে আসুক। তবে নতুন সংস্থা শুরু হলে একটা স্ফূর্তি থাকে। তাদের নতুন কিছু করার আকাক্সক্ষা থাকে। ইন্ডাস্ট্রি বড় হলে তো কাজ বাড়বে।

তার পরও তো সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা ছবির পাশে থাকার ঝড় দেখা যায়!

ঋত্বিক : ছবি তো চলতেই হবে। লাভ দেখতে না পেলে তা চিন্তার বিষয়। সত্যি বলতে এই ব্যবসা যারা চালান, প্রযোজক, ডিস্ট্রিবিউটর- এগুলো মূলত তাদের ভাবার বিষয়। আমরা এখানে বসে দুটি উত্তর দিয়ে দিলে কোনো সমাধান আসবে না। ব্যাপারটা গভীরে ভাবার প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলে, আর ঘরে বসে কথা বলে লাভ হবে না। আমার অভিনয় করা কাজ। সেটা আমি মন দিয়ে করার চেষ্টা করি। ব্যবসাটা যাদের, এটা তাদের তরফ থেকে ভাবার বিষয়।

নতুন প্রজন্মের কাজ দেখা হয়?

ঋত্বিক : অনেকেরই অভিনয় দেখি। আর আমাদের এখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কোনো কমতি নেই।

তাও তো বলা হয় ভালো অভিনেতা পাওয়া যাচ্ছে না…।

ঋত্বিক : ভালো-খারাপটা তো বিচার্য বিষয়। আমার মনে হয় না সাংঘাতিক অভাব আছে। কিন্তু মনে হয় যে সঠিক অন্বেষণ করা দরকার।
আজকাল টলিপাড়ায় এত পার্টি হচ্ছে, একজোট হয়ে সবাই সবার বন্ধু। কিন্তু কোনো বন্ধুদের দলেই তো আপনাকে দেখা যায় না। কেন?

ঋত্বিক : বন্ধুত্ব আছে আসলে। আবার আমাদের এখানে তো আমি উল্টোটাও দেখি। সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। সবাই যে যার মতো আলাদা আলাদা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করছে সেটাও দেখতে পাই। আবার তাদেরও দেখা যাবে একসঙ্গে পার্টি করছে। তার মানে তাদের মধ্যেও একটা কোনো অন্য ধরনের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে নিশ্চয়ই। রাজনৈতিক দল এবং তাদের মতাদর্শ আলাদা হয়ে বন্ধুত্ব রাখা অবশ্য স্বাস্থ্যকর।

আপনি নিজে কেন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন না?

ঋত্বিক : রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার মতো মানুষ আমি কখনো ছিলাম না। ভারতবর্ষে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটাই হয় তো একমাত্র ইন্ডাস্ট্রি যেখানে এতগুলো মানুষ অভিনয়ও করেন আবার তারা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত। বাংলা ছাড়া মনে হয় না আর কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে এত জন সাংসদ অভিনয় করেন, এত জন বিধায়ক অভিনয় করেন, রাজনৈতিক যুব দলের প্রধান অভিনয় করেন। একটা আলাদাই ব্যাপার।
খুবই অন্য রকম না বিষয়টা? আমার মতটা আসলে অন্য।
কী মত আপনার?

ঋত্বিক : আমি না আসলে কোনো চাপিয়ে দেয়া মতকে বাধ্যতামূলকভাবে মানায় কোনোকালেই বিশ্বাসী ছিলাম না। রাজনীতি করার প্রাথমিক শর্তই হলো দলের মতাদর্শ মেনে চলা।
আমার নিজস্ব মতাদর্শের বাইরে আমি কোনো দলের মতাদর্শ মেনে চলতে পারব না। অতএব আমি রাজনীতির মানুষই নই। রাজনীতির মানুষ হলে প্রথমেই তাকে দলের ভুলকে অস্বীকার করতে হয়। আমি উল্টোটা। আমি প্রথমে নিজের ভুল স্বীকার করব। তাতে নিজে উন্নত হব।
কোনো রাজনৈতিক দলেই সেই অনুশীলন নেই। সমাজে এমন মানুষেরও প্রয়োজন আছে, যারা কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন না। যারা শুধু নাগরিক সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে ভাববে, বিচার করবেন। ভোট দেবেন।

এই কিছু দিন আগে প্রকাশ্যে দেব-হিরণের বাকবিতণ্ডা হলো, আপনার কি মনে হয় রাজনীতি পেশাদারিত্বে কতটা প্রভাব ফেলছে?

ঋত্বিক : এই ঘটনা যদিও পুরোটাই রাজনৈতিক তরজা। রাজনীতি করলে তো সেই তরজার মধ্যে যুক্ত হতেই হবে। কিন্তু সে আর কী প্রভাব ফেলবে? সহ-অভিনেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক তো রাখতেই হবে। সেই প্রভাব যদি পড়ে, তা হলে তা খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়।
:: মেলা ডেস্ক