জামায়াত আমিরের ছেলেসহ দুজন ফের রিমান্ডে

আগের সংবাদ

জামায়াত-জঙ্গি নতুন সমীকরণ : দলটির আমির ডা. শফিকের ছেলে ডা. রাফাতকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসছে নতুন তথ্য ও যোগসূত্র

পরের সংবাদ

সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ : প্রতিবন্ধকতা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দেশের সব বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী শনিবার সিলেট নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সরকারের দিক থেকে নানা ধরনের বাধা আসতে পারে- ধরে নিয়েই সমাবেশ সফলে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে সিলেট বিএনপি।
সমাবেশে যোগদানের জন্য বিভাগের সব জেলা ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীদের আনার জন্য বিকল্প যানের ব্যবস্থা, আবাসন সংকট মোকাবিলায় নগরীর কমিউনিটি সেন্টারগুলো ভাড়া নেয়াসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সিলেট বিএনপির দায়িত্বশীলরা।
এর আগে দেশের ৬ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। সমাবেশের আগের দিন থেকেই পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আহ্বানে পালন করা হয়েছে পরিবহন ধর্মঘট। এতে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ভুগতে হয়েছে সাধারণ মানুষকেও। সিলেটে এখন পর্যন্ত ধর্মঘটের কোনো ঘোষণা না থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা।
তবে সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট ডাকার কোনো চিন্তা নেই বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। আর মালিকদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কিছু বলা না হলেও আপাতত কোনো ঘোষণা নেই।
সিলেটেও বিএনপির সমাবেশের আগে ধর্মঘট ডাকা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, ধর্মঘট ডাকার কোনো চিন্তা বা লক্ষ্য আমাদের নেই। আমরা সাধারণ শ্রমিক, আমরা কোনো দলের নই, ধর্মঘটে ক্ষতি আমাদেরই বেশি হয়। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বৈঠকেও ধর্মঘটের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তবে মালিকপক্ষ যদি গাড়ি বন্ধ করতে বলে সেক্ষেত্রে শ্রমিকদের কিছু করার।
ধর্মঘটের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম। তিনি বলেন, আমাদের সবদিক বিবেচনা করেই চলতে হয়। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও যানবাহনের ব্যাপার যেমন আমাদের দেখতে হয় তেমনি বিনা কারণে জনভোগান্তির ব্যাপারও মাথায় রাখতে হয়। তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা জানি সিলেটে ধর্মঘট হচ্ছে না, তবে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা এলে সেটা ভিন্ন বিষয়।
সিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রীতির কথা বিবেচনায় পরিবহন ধর্মঘট না ডাকার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ধর্মঘটে আমাদের সমাবেশে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছি, আমাদের নেতাকর্মীরা প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে সমাবেশে যোগ দেবেন। তবে আমরা আশা করব জনদুর্ভোগ এড়াতে এবং সিলেটের রাজনৈতিক ও সামাজিক স¤প্রীতির কথা বিবেচনায় রেখে এখানে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হবে না।
এদিকে সরকারের নির্দেশনায় আবাসিক হোটেলগুলোতে নেতাকর্মীদের আবাসন নিয়ে বিপাকে পড়ার ভয়ে আগে থেকেই সিলেটের অন্তত ২০টি কমিউনিটি সেন্টার বুকিং করে রেখেছেন বিএনপি নেতারা। আর এসব কমিউনিটি হলের বুকিং হয়েছে সিটি মেয়র আরিফুল হকের নামে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর আগ্রা, মালঞ্চ, নূরে আলা, পল্লবী, সোনার বাংলা, ময়ুরকুঞ্জসহ ২০টিরও বেশি কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করেছে বিএনপি। আগেভাগে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে এখানে। নগরীর সোবহানীঘাটস্থ আগ্রা কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপক সুমন মিয়া জানান, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত সেন্টার বুকিং দেয়া হয়েছে। তবে এর আগেপরে বুকিং নেই। বিএনপি নেতাকর্মীদের আবাসনের জন্য বুকিং

রাখা হয়েছে কিনা তা জানেন না বলে জানান তিনি।
সমাবেশ সফলে বিএনপির যে ৬টি কমিটি করা হয়েছে তার অন্যতম আবাসন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তাই মেয়রের নির্দেশে এসব কমিউনিটি সেন্টার বুকিং রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, কতগুলো সেন্টার ভাড়া করা হয়েছে, তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না, কারণ, অনেকেই ভাড়া করেছেন। তিনি বলেন, যেগুলো খালি পাওয়া গেছে, ভাড়া করা হয়েছে। তবে এগুলো আমরা করছি না, নেতাকর্মী যারা আগেই আসবেন, তারা নিজ উদ্যোগে করছেন। কাইয়ুম চৌধুরী জানান, আলিয়া মাদরাসা মাঠেও নেতাকর্মী থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেসব নেতাকর্মী আগেই চলে আসবেন, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
তবে মহানগর বিএনপি সভাপতি আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী বলেন, প্রশাসন ও পরিবহন শ্রমিকদের ব্যবহার করে সরকার বিএনপির সমাবেশে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে। আজকে বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে, আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সিলেটের বিভিন্ন স্থানের দলীয় নেতাকর্মীকে আগেভাগেই শহরে নিয়ে আসতে নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি। আগেভাগে যারা আসবেন, তাদের সিংহভাগই সমাবেশস্থলে অবস্থান নেবেন। বাকিদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার বুকিং দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়