জামায়াত আমিরের ছেলেসহ দুজন ফের রিমান্ডে

আগের সংবাদ

জামায়াত-জঙ্গি নতুন সমীকরণ : দলটির আমির ডা. শফিকের ছেলে ডা. রাফাতকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসছে নতুন তথ্য ও যোগসূত্র

পরের সংবাদ

অপরিকল্পিত নগরায়ণ : জামালপুর শহরের প্রধান সড়ক চলাচলের অযোগ্য

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর থেকে : দেড়শ বছরের পুরনো জামালপুর পৌরসভার প্রধান সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। তবে অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও নানা সমস্যার কারণে শহরের প্রধান সড়কে চলাচল করতে গিয়ে নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
পৌরবাসী বলছেন, প্রথম শ্রেণির হলেও এই পৌরসভায় রোড ডিভাইডার, জেব্রা ক্রসিং, স্প্রিড ব্রেকারসহ বৈদ্যুতিক ট্রাফিক সিগন্যাল না থাকায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। এতে ব্যাপক ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে পৌরবাসীকে।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কবলে পড়ে সাধারণ পৌরবাসী নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে রাস্তায় ডিভাইডার, জেব্রা ক্রসিং, স্পিড ব্রেকার বা বৈদ্যুতিক সিগন্যাল না থাকার কারণে একদিকে যানজট, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা। কবি ও সাহিত্যিক রাজন্য রুহানি বলেন, জামালপুর শহরের প্রধান সড়ক ইজিবাইকের কারণে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি এত তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে যে এক মাথা থেকে আরেক মাথা যেতে আগে সময় লাগত ১০ থেকে ১৫ মিনিট, এখন সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।
পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স ও রোগীরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে সহজে পৌঁছতে পারছে না। সাধারণ চাকরিজীবী প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট সময়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছে।
শহরের কাচারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আদিত্য রায়হান বলেন, এই শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে আমাদের মোটরসাইকেলেই প্রায় ঘণ্টাখানেক লেগে যায় এবং যারা মোটরসাইকেল ছাড়া অটোরিকশা বা রিকশা ব্যবহার করে তাদেরও শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে অনেক সময় লাগে। শহরের অটো রিকশাগুলোকে যদি শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলেই শহর যানজটমুক্ত করা সম্ভব।
পৌরবাসীদের অভিযোগ, শহরের প্রধান সড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে রাস্তার ওপর দিয়ে হেটে গন্তব্যে যেতে হয় পথচারীদের। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রাস্তার ওপরেই বসানো হয়েছে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড। এতে করে চলাচলের কোনো পরিবেশ না থাকায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
শহরের দয়াময়ী এলাকার বাসিন্দা শুভ দাস বলেন, আমরা জামালপুরের প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় বসবাস করি। আমাদের এই পৌরসভার রাস্তাঘাটে পথচারীদের চলাচলের জন্য আসলে কোনো ফুটপাত নেই। আমরা পথচারীরা যাতে শান্তিতে একটু চলাচল করতে পারি, সেজন্য শহরের যেসব দখলকৃত ফুটপাত রয়েছে, আমরা এগুলোর অবিলম্বে মুক্তি চাই এবং পথচারীরা যেন ভালোভাবে চলাচল করতে পারে সেজন্য আমরা পদক্ষেপ চাই।
তিনি বলেন, ফুটপাত না থাকার কারণে মাঝেমধ্যে অ্যাক্সিডেন্ট হয়। অভিজ্ঞ চালক না থাকার কারণে আমরা দুর্ঘটনার শিকার হই। শহরের বাসিন্দা ময়ূরী আক্তার বলেন, রাস্তার ওপরেই সিএনজিগুলো দাঁড়িয়ে থাকে। ভোকেশনাল মোড়ে একটা, বশাকপাড়া মোড়ে একটা। এই স্ট্যান্ডগুলো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যেতে হবে এবং রাস্তাঘাট যেগুলো আমাদের সংস্কার হয়নি যেখানে চলার মতো পরিবেশ নেই। সেই জায়গাগুলো অন্তত চলার মতো পরিবেশ করতে হবে।
জামালপুরের কবি ও সাহিত্যিক সাযযাদ আনসারী বলেন, আমাদের এই প্রিয় শহর জামালপুর। খুবই নিরিবিলি, খুব শান্ত পরিবেশে আমরা বড় হয়েছি। সম্প্রতি এই শহরের রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। কারণ মারাত্মক যানজট।
এসব বিষয়ে জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু বলেন, পুরো জামালপুর জেলায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার অধিক উন্নয়ন কাজ চলমান। এর মধ্যে জামালপুর শহর কেন্দ্রিক যে শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে তা সম্পন্ন হলেই বদলে যাবে এই শহরের চিত্র। ভোগান্তি কমবে সাধারণ জনগণের।
তিনি আরো বলেন, ট্রাফিক পুলিশ এবং পৌরসভার লোক দিয়ে সমন্বয় করে লাল-সবুজে যদি বিভক্ত করা হয়, যদি নিয়মিত চলাতে পারি তাহলে জামালপুর শহর মুক্ত হবে। পাশাপাশি আরেকটি আইন আমরা করছি। দিনের বেলা কোনো বড় গাড়ি জামালপুর শহরের ভেতর ঢুকবে না। বাইপাস দিয়ে চলে যাবে। এই আইনটি কার্যকর হলে আমাদের শহর মোটামুটি কার্যকর হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়