কেন্দ্রীয় ব্যাংক : ব্যাংকগুলোতে জনগণের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে

আগের সংবাদ

মাদকের টাকায় অস্ত্রের মজুত : মিয়ানমার সীমান্তে বেপরোয়া আরসা, আল ইয়াকিন > রোহিঙ্গা শিবিরে অস্থিরতার পেছনেও এরাই

পরের সংবাদ

সিডরের ১৫ বছর আজ : কান্না থামেনি স্বজনহারা পরিবারে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হারুন অর রশিদ, আমতলী (বরগুনা) থেকে : আজ সিডর দিবস। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়েছিল বরগুনাসহ দক্ষিণের জনপদ। এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে জেলার আমতলী ও তালতলীতে নিহত হন ২৭ জন। একই সঙ্গে অগণিত গবাদিপশুর মৃত্যু হয়। বাড়িঘর, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, বেড়িবাঁধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সুন্দরবনের গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
মূলত ভয়াল সেই ১৫ নভেম্বর দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়। সচেতন মানুষ যেতে শুরু করে আশ্রয়কেন্দ্রে। তবে বেশির ভাগ মানুষই রয়ে যায় বাড়িতে। সিডরের ভয়াবহতা সম্পর্কে আগে থেকে কিছুই ধারণা করতে পারেনি তারা।
ঘড়ির কাঁটায় তখন সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিট। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় সিডর প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। ঝড়টি ভূমিতে আছড়ে পড়ার সময় প্রথম এক মিনিটে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার। তবে এ সময় দমকা হাওয়ার বেগ উঠছিল ঘণ্টায় ৩০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। সিডরের প্রভাবে উপকূলে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ¡াসের সৃষ্টি হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগরের সব পানি যেন যমদূতের মতো এসে মানুষগুলোকে ভাসিয়ে নেয়। ঝড়ের তাণ্ডবে পুরো এলাকা হয়ে যায় লণ্ডভণ্ড।
ঘূর্ণিঝড় সিডর চলাকালীন আমতলীর লোচা গ্রামের সুফিয়া বেগম দুই ছেলে ও মেয়েকে (৪) কোলে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পথে মেয়ে বিউটিকে জলোচ্ছ¡াসে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ওই ঝড়ে আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের আ. হাই মিয়ার স্ত্রীকেও জলোচ্ছ¡াসে ভাসিয়ে নেয়। চাওড়ার ঘটখালী গ্রামের ১৪ জন দিনমজুর পানের বরজের ধানশি লতা সংগ্রহে ট্রলার নিয়ে পায়রা নদীর মোহনা টেংরাগিরি বনের পাশে অবস্থান করছিলেন। তারাও জলোচ্ছ¡াসে ভেসে যান। এদের মধ্যে চারজন ফিরে আসলেও ১০ জন ফিরে আসেননি। ইউসুফ (৪০), জব্বার (৫৫), ছোবাহান (৪২), হোসেন (৫০), খলিল (৩৫), রতন (৪০), সোহেল (১৮), মনিরুল (২৫), দেলোয়ার (২৫), আলতাফের (২০) স্বজনরা এখনো মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
শুধুমাত্র আমতলী ও তালতলীর নিহত ২৭ জনের পরিবারই নয়, সিডরে প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। দুর্বিষহ সেই স্মৃতি আজো কষ্ট দেয় উপকূলবাসীকে। স্বজন হারানো কষ্টে আজও ডুকরে কেঁদে ওঠেন তারা।
আমতলী এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, সিডরের পরে যেসব আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, তা পর্যাপ্ত না। দুর্যোগ মোকাবিলায় আরো আশ্রয়কেন্দ্রের প্রয়োজন।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম পান্না জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণে বেড়িবাঁধ করা হলেও প্রতি বছর তা ভেঙে যাচ্ছে। তাই টেকসই বেড়িবাঁধ দরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়